সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক :
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক নারী প্রায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসার অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম রেডিটে। তার এই অভিজ্ঞতা সংক্রান্ত পোস্ট রেডিটে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়েছে। শত শত মানুষ তাকে নানা ধরনের প্রশ্ন করেছেন। আর সেগুলোর জবাবও দিয়েছেন তিনি। মার্কিন ওই নারী বলেছেন, চেতনা হারিয়ে ফেলার পর তাকে ‘‘ক্লিনিক্যালি ডেড’’ ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি সেখান থেকে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন।
রেডিটে ‘‘আস্ক মি এনিথিং’’ লেখা পোস্ট করে এই বিষয়ে ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নের জবাবে নিজের সাথে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ মুহূর্তের কথা তুলে ধরেছেন তিনি। লরেন কানাডে বলেছেন, চেতনা হারিয়ে ফেলার পর তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর দু’দিন কোমায় ছিলেন তিনি। পরে চেতনা ফিরে পান।
‘‘গত ফেব্রুয়ারিতে বাড়িতে হঠাৎ করে আমার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। আমার স্বামী জরুরি সেবা নম্বর ৯১১-এ ফোন করেন। এর পরপরই তিনি আমাকে সিপিআর করা শুরু করেন। আইসিইউতে ৯ দিন থাকার পর আমাকে ‘জ্ঞানগতভাবে অক্ষত’’ ঘোষণা করা হয়। তবে এমআরআইয়ে মস্তিষ্কের কোনও দৃশ্যমান ক্ষতি দেখা যায়নি।’’
তিনি বলেন, চেতনা ফিরে পাওয়ার পর ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে মৃগীরোগীদের মতো খিঁচুনি অনুভব করা সত্ত্বেও তার ইলেক্ট্রোএনসেফালোগ্রামের ফল— এই পরীক্ষায় মস্তিষ্কের বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ পরিমাপ করা হয়, স্বাভাবিক আসে।
লরেন বলেন, ‘‘আমার স্বামী ৪ মিনিট ধরে সিপিআর করেছিলেন এবং কী করতে হবে সেই বিষয়ে তাকে জানিয়েছিলেন একজন অপারেটর। যদিও অতীতে তার এই বিষয়ে কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না। সৌভাগ্যক্রমে আমরা একটি ফায়ার স্টেশনের কাছাকাছি ছিলাম এবং জরুরি মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টরা মাত্র ৪ মিনিটের মধ্যে বাসায় পৌঁছেছিলেন।’’
একজন ব্যবহারকারীর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, কোভিড-১৯ জটিলতার কারণে তার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছিল বলে প্যারামেডিকরা জানিয়েছেন। এ জন্য আইসিইউতে নেওয়ার সময় তার করোনা পরীক্ষাও করা হয়। পরীক্ষায় তার করোনা শনাক্ত হয়।
মেডিক্যালের পরিভাষায় লরেন কানাডে ‘‘লাজারাস ইফেক্ট বা অটোরিসাসিটেশন’’ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন। তবে এই ধরনের ঘটনা বেশ বিরল। এতে একজন রোগীর ‘‘হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর মৃত ঘোষণা করা হলেও হঠাৎ করে প্রাণ ফিরে পাওয়ার লক্ষণ দেখা যায়।’’
নিউইয়র্ক পোস্ট বলেছে, মার্কিন এই নারীর ঘটনাটি বেশ চমকপ্রদ। কারণ বেশিরভাগ মানুষই পুনরুজ্জীবিত হওয়ার পর বেশিদিন বাঁচেন না। ১৯৮২ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে এই ধরনের ৬৫টি ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মাত্র ১৮ জন পুরোপুরি স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন।