শামসুজ্জামান দুদু বলেন, এই সরকারকে বিদায় করতে না পারলে, বাংলাদেশকে রক্ষা করা কঠিন হবে। মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত বাংলাদেশ থাকবে না। বাংলাদেশকে যদি সত্যিকারের বাংলাদেশ রাখতে হয়, তাহলে গণতান্ত্রিক, মানবাধিকারের, স্বাধীনতার বাংলাদেশ গড়তে হবে।
তিনি বলেন, দেশে আপনি স্বাভাবিকভাবে কোনো কাজ করতে পারবেন না। যার চিকিৎসা দরকার, তার চিকিৎসা হবে না, যদি কর্তা মনে না করেন। আপনি জামিন পাবেন না, যদি আপনি সরকারের কৃপায় না থাকেন। আর যদি আপনি সরকারের কৃপায় থাকেন, শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদদের কৃপায় থাকেন, তাহলে আপনি ব্যাংক ফাঁকা করে ফেলবেন, লুটের চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছবেন, আপনার তদন্তই হবে না। আপনি যাই করেন, আপনি সিংহের মতো ঘুরে বেড়াবেন।
তিনি আরও বলেন, লুটেরা, দুর্নীতিবাজ, ক্ষমতার অপব্যবহারকারী, গণতন্ত্র হত্যাকারীরাই এখন দেশে প্রভুত্ব করছে। গায়েবি মামলার সাজা হয়, কিন্তু লুটের কোনো সাজা হয় না। গায়েবি মামলায় সাজা হয়, দুর্নীতির মামলায় সাজা তো দূরে থাক, তারা মন্ত্রী-এমপি হয়, তারা সংসদে থাকে।
বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, পাকিস্তানিরা আমাদের বঞ্চিত করেছিল, আমাদের অধিকার, গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, ন্যায্য প্রাপ্যতা থেকে। সেজন্য পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছিল। সেই পাকিস্তানি প্রেতাত্মা বর্তমান শাসক গোষ্ঠীর কাঁধে ভর করেছে। পাকিস্তান যেভাবে বাংলাদেশকে পরিচালনা করেছিল, তারা এখন সেভাবে দেশকে পরিচালনা করছে। এর থেকে বের হতে হবে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে স্বাভাবিক জীবন তো দূরে থাক, খুব জরুরি চিকিৎসা দরকার, সেটাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তারেক রহমান সুদূর লন্ডন থেকে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাকে একেকর পর এক মামলা এবং সাজা দেওয়া হচ্ছে। দুই ঘণ্টা, তিন ঘণ্টার নোটিশে বিএনপি যত বড় মিটিং করে, এতেই প্রমাণ হয়, দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় দল এখন বিএনপি। আমরা একটি ভালো নির্বাচন চাচ্ছি, সেই কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, জাতীয় সংসদের বিলুপ্তি, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন চাচ্ছি।
আওয়ামী লীগ এক সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়ে জয়লাভ করেছিল উল্লেখ করে সাবেক এই ছাত্রদল নেতা বলেন, এখন তাহলে এতো ভয় কেন? তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আওয়ামী লীগ করেনি এমন কোনো ঘটনা ছিল না। তাহলে এখন কেন তারা এতো ভয় পাচ্ছে? ভয় পাওয়ার কারণ তারা এখন জনপ্রিয়তায় শূন্যের কোঠায় আছে।
তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের হুমকি দিয়েছেন, যদি ঢাকা শহরে অবরোধ হয়, বাংলাদেশে অবরোধ হয়, তাহলে মতিঝিলের মতো ঘটনা ঘটবে। আরও অনেক মন্ত্রী বলছেন, হাত-পা ভেঙে নাকি বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেবে। এগুলো সুস্থ-স্বাভাবিক চিন্তার লক্ষণ নয়। ভাঙা-ভাঙ্গি না হওয়াই ভালো। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে পরিবর্তন হওয়া ভালো। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জয়-পরাজয়ে দুঃখ পাওয়ার কিছু নেই। তা যদি না হয়, অন্য কিছুর মধ্য দিয়ে যদি এদেশে পরিবর্তন সংগঠিত হয়, তাহলে এটি কোনো স্বাভাবিক পরিবর্তন হবে না। এটি খুবই মর্মান্তিক হবে এবং এর জন্য অনেক বেশি মূল্য দিতে হবে।
দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মো. ফারুক রহমান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক আলমগীর হোসেন, জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম প্রমুখ।