সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক :
আত্মীয়তার সম্পর্কের কাছে সীমান্তের কাঁটাতার যে তুচ্ছ, তার প্রমাণ আগেই মিলেছিল। ২০২১ সালের জুলাই মাসে ১২ বছরের নয়ন আলী সীমান্তের কাঁটাতার পেরিয়ে বাংলাদেশ থেকে পৌঁছে গিয়েছিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থানার বাজিতপুরে। উদ্দেশ্য ছিল দাদার সঙ্গে দেখা করা।
এবার অভিমানে বাংলাদেশ থেকে অবৈধ ভাবে ভারতে চলে যাওয়া এক যুবককে আইনি বেড়াজাল থেকে উদ্ধার করতে বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গের রানাঘাটে গেছেন বছর পঁচাত্তরের বৃদ্ধ আবুল হোসেন। তার উদ্দেশ্য, নাতিকে সঙ্গে নিয়ে দেশে ফিরবেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ জুলাই রাতে পশ্চিমবঙ্গের ধানতলা থানার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বরণবেড়িয়া থেকে আটক করা হয় সুইত রহমানকে। পরে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে বছর পচিশের এই যুবককে গ্রেপ্তার করে ধানতলা থানার পুলিশ। বর্তমানে ওই বাংলাদেশি যুবকের স্থান হয়েছে রানাঘাটের উপ-সংশোধনাগারে।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভারতে নাতির গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনা জানতে পারেন বাংলাদেশের ঝিনাইদহের বাসিন্দা বৃদ্ধ আবুল হোসেন। এরপর এক মুহূর্তও সময় নষ্ট করেননি তিনি।
নাতিকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে প্রথমে পাসপোর্ট এবং এরপর ভারতীয় ভিসা নিয়ে গত সোমবার রাতে দর্শনার অপরপাশে অবস্থিত গেদে সীমান্ত হয়ে ভারতে পৌঁছান তিনি।
এরপর মঙ্গলবার ভোরের আলো ফুটতেই বৃদ্ধ আবুল হোসেন চলে যান রানাঘাট আদালতে। অচেনা দেশ, অচেনা মানুষজন মাঝে এতটুকুও ভয় না পেয়ে আদালতের আইনজীবীদের পরামর্শ নেন তিনি।
আবুল হোসেন বলেন, ‘ওই সুইত আমার ভাইগ্নার পোলা। ছোটবেলায় ও বাপেরে হারাইছে। ওই দ্যাশে কাজ-কাম নাই। মায়ের লগে অশান্তি কইরা রাগে দ্যাশ ছাড়ছে। ওরে দ্যাশে ফিরাইতেই আমি বাংলাদেশ দিয়া এইহানে আইছি।’
সত্তরোর্ধ্ব এই বৃদ্ধের দৃঢ় সংকল্প, ‘ওরে আমি দ্যাশে ফিরামুই।’
জানা গিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত বাংলাদেশি যুবক সুইতকে আগামী ৩০ আগস্ট আদালতে তোলা হবে। আইনি জটিলতার বাধা পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত নাতির হাত শক্ত করে ধরতে পারবেন কি না, সেই আশাতেই দিন গুনছেন আবুল হোসেন।