সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:
দেশে প্রথমবারের মতো ১০ জন ট্রেইনি পাইলটকে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য আমেরিকার ফ্লোরিডায় পাঠাচ্ছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস। ফ্লাইট ট্রেনিং কোর্স শেষ করার পর ফেডারেল এভিয়েশন এ্যাডমিনিষ্ট্রেশন কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স (এফএএসিপিএল) প্রাপ্ত হবেন প্রশিক্ষণার্থীরা। সফলভাবে ফ্লাইট ট্রেনিং শেষ করার পর ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে এটিআর ৭২-৬০০ এয়ারক্রাফটের ট্রেইনি ফার্স্ট অফিসার হিসেবে নিয়োগ পাবেন।
এ উপলক্ষে মঙ্গলবার (০২ মে) উত্তরায় ইউএস-বাংলার কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে ১০ ট্রেইনি পাইলট ছাড়াও ইউএস-বাংলার ঊর্ধ্বতনরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বক্তব্য দেন অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদূল আলম, ইউএস-বাংলার সিইও লুত্ফর রহমান, মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) কামরুল ইসলাম, এয়ার অ্যাস্ট্রার (ডিএফও) জামিল আহমেদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রথম দফায় ১০ জনকে পাঠানো হচ্ছে। পরে আরো ১১ জনকে পাঠানো হবে। তারা ইউএস-বাংলার সঙ্গে ১০ বছরের পাইলট সেবা দেবেন এই চুক্তিতে তাদের এ প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হচ্ছে। আবারো এক মাস পর পরের গ্রুপটিকে পাঠানো হবে।
জানা গেছে, তারা ১০ মাস ফ্লোরিডায় থাকবেন এবং সেখানে প্রশিক্ষণ নেবেন। এজন্য প্রতি পাইলটের প্রশিক্ষণ বাবদ খরচ হবে ৬৪ হাজার ডলার। তারা এরপর দেশে ফিরবেন। আরো কিছু কাজ শেষ করে পাইলট হিসেবে ইউএস-বাংলার বিমানে ক্যারিয়ার শুরু করবেন।
এ সময় আমেরিকার যাওয়ার তালিকায় থাকা নারী ট্রেইনি পাইলট সামিয়া নওশিন সারাহ বলেন, এটা আমাদের স্বপ্ন ছিল। আমরা প্রশিক্ষণ শেষ করে ফিরে আসতে পারব বলে আশা করছি। ইউএস-বাংলা আমাদের যে সুযোগ দিচ্ছে তা সত্যি বিরল।
আরেক ট্রেইনি পাইলট আশরাফুল ইসলাম বলেন, মধ্যবিত্তের সন্তান হিসেবে এমন স্বপ্ন পূরণ করা কঠিন। তাও সেটি আমেরিকার মতো দেশে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়া। আমাদের সেই স্বপ্নটি ইউএস-বাংলার মাধ্যমে পূরণ হতে যাচ্ছে।
কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, তোমরা শুধু ইউএস-বাংলাকে প্রেজেন্ট করতে যাচ্ছো না, পাশাপাশি দেশকেও রিপ্রেজেন্ট করবে। ভুলে গেলে হবে না প্রশিক্ষণের বাহিরে তোমাদের অন্য কিছু ভাবা যাবে না। কারণ এখানে দেশের মানসম্মানও জড়িত।
তিনি আরো বলেন, সারা বিশ্বে প্রতিনিয়ত পাইলটের চাহিদা বাড়ছে। আগামীতেও আরো বাড়বে। ভারতে তারা ১০০০ হাজার পাইলট তৈরির কাজ করছে। আমাদের দেশে পাইলট তৈরির জন্য যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তাতে সুযোগ সুবিধা অপ্রতুল। এই ২১ জনের যে প্রশিক্ষণ হবে তা উন্নতমানের হবে এবং দেশের জন্য হবে একটি মাইলফলক। কারণ তারা বিদেশের মাটিতে এই প্রশিক্ষণ নেবেন।
অতিরিক্ত পাইলটের চাহিদা পূরণে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস ২০২২ সালের শুরুতে স্টুডেন্ট পাইলট নিয়োগের পরিকল্পনা করে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর হিউম্যান রিসোর্সের বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিয়ে ২০২২ সালের মে থেকে জুলাই মাসে প্রায় ৬৫০০ জন প্রতিযোগীদের মধ্য থেকে ২১ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করে বাছাই কমিটি।
প্রথম পর্বে ১০ জন প্রশিক্ষণার্থী ফ্লোরিডায় অবস্থিত স্মির্না বিচের এপিক ফ্লাইট একাডেমিতে ১০ মাসের ফ্লাইট ট্রেনিং কোর্স করার জন্য মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দেশ ত্যাগ করছেন।
ইউএস-বাংলায় দুই হাজার ৩৫০ জনের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে ১৯০ জনের বেশী দেশি-বিদেশি পাইলট রয়েছে। সূত্র: কালের কণ্ঠ