সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ
মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধে এগিয়ে রয়েছে কারা? এটি কি সেনাবাহিনী, যেটি সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটিকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে, নাকি বিভিন্ন সশস্ত্র প্রতিবাদী গোষ্ঠী, যারা গোরিলা কৌশল অবলম্বন করে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যাচ্ছে?
প্রশ্নটি শুধু দেশটির ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষের নয়, বরং প্রতিবেশি দেশগুলো এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা পর্যবেক্ষকরাও একই প্রশ্ন করছেন।
গত ছয় সপ্তাহে ইংরেজি ভাষায় বিভিন্ন প্রতিবেদন, বিশ্লেষণ এবং সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে যেখানে এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হয়েছে।
এশিয়া টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের শিরোনাম, “মিয়ানমারের সেনাবাহিনী কি যুদ্ধে হারতে শুরু করেছে?”
সামরিক বাহিনী এবং নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ডেভিস মনে করেন যে সেনাদের বিরুদ্ধে লড়া প্রতিবাদী শক্তিগুলো জয় পাচ্ছে যদিও সেনাঅভ্যুত্থানের পরপরই তিনি মনে করেছিলেন যে, কোনেও ধরনের প্রতিবাদ কোনেও ফল বয়ে আনবে না।
ডেভিস আরও কয়েকটি পত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে একই ধরনের মন্তব্য করেছেন।
তবে, আপনি কোন পত্রিকা পড়ছেন তার উপরেও বিষয়টি অনেকটা নির্ভর করে। যেমন, দ্য ইকোনোমিস্টে সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের শিরোনাম, “মিয়ানমারের প্রতিরোধ শক্তি নিজেদের প্রচারণা বিশ্বাসের ঝুঁকিতে রয়েছে।”
এতে লেখা হয়েছে যে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রেজিস্টেন্স মুভমেন্টের জয় আসন্ন বলা হলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন।
দ্য ইকোনোমিস্টের প্রতিবেদনে বরং বলা হচ্ছে যে জান্তাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো ক্রমশ ভেঙে ভেঙে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে এবং অস্ত্রের অভাবে তাদের পক্ষে গোরিলা হামলা এবং গুপ্তহত্যার বাইরে কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না।
ফলে একবারে সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না কারা এগিয়ে রয়েছে, বা কারা পিছিয়ে পড়ছে। এমনকি যোদ্ধ এবং অস্ত্র সংক্রান্ত পরিসংখ্যানগুলোও বিশ্লেষণভেদে আলাদা আলাদা হচ্ছে৷ যেমন ‘ওয়ার অন দ্য রকস’-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে যে মিয়ানমারের ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ)’-এর একলাখের মতো যোদ্ধা রয়েছে, যাদের ৪০ শতাংশের কাছে প্রচলিত এবং অপ্রচলিত বিভিন্ন অস্ত্র রয়েছে, যেগুলোর কোনও কোনোটি ঘরে তৈরি।
কিন্তু ডেভিসের হিসেবে সেনা সংখ্যা ৫০ হাজার থেকে একলাখের মধ্যে এবং তাদের মধ্যে বিশ শতাংশেরও কম সশস্ত্র।
সমস্যা হচ্ছে, মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধ নিয়ে প্রকাশিত অধিকাংশ প্রতিবেদনই অনির্ভরযোগ্য তথ্য নির্ভর। আর দেশটির গণমাধ্যমও এক্ষেত্রে প্রকৃত চিত্র তুলে ধরছে না। তাই, এই গৃহযুদ্ধ কোন দিকে মোড় নিচ্ছে বলা মুশকিল।
সুত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন