আইএমও’র ১৭ জানুয়ারির বৈঠকে প্রতিনিধিত্ব অনিশ্চিত

ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম কাউন্সিল (আইএমও) নির্বাচনে বাংলাদেশ হেরেছে গত ডিসেম্বরে। হারের পর ভাবর্মূর্তি পুনরুদ্ধার করতে লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশনে মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক একটি কাউন্সিলর পদ সৃষ্টি করে; সেখানে একজনকে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। উদ্দেশ্য জাতিসংঘের শিপিং বিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইএমও’তে বাংলাদেশের অবস্থার সুদৃঢ় এবং ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনা। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় সেই পদে যোগ দিতে পারেননি মেরিটাইম বিশেষজ্ঞ ক্যাপ্টেন কাজী এ বি এম শামীম।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পদের দ্রুত অনুমোদন হয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ক্যাপ্টেন কাজী এ বি এম শামীমের অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়ে সেটি আমলাতান্ত্রিক জটিলথায় আটকে গেছে। এর ফলে অনুমোদনের দুই মাসে চূড়ান্ত অনুমোদন মিলেনি। এতে মেরিটাইম কাউন্সিলের প্রথম সভা আগামী ১৭ জানুয়ারিতে বাংলাদেশের কোনো বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধির যোগদানে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

তার যোগ না দিলে কী সমস্যা হবে জানতে চাইলে আইএমও’র মেরিটাইম কনসালটেন্ট ক্যাপ্টেন জিল্লুর রহমান ভূঁইয়া বলছেন, ১৭৯ দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হবে লন্ডনে। সেখানে বিভিন্ন দেশ তাদের মেরিটাইম বিষয়ক অর্জন, সীমাবদ্বধতা তুলে ধরবে; ভবিষ্যত পরিকল্পনা দিবে। কিন্তু আমাদের প্রতিনিধি চূড়ান্ত অনুমোদন না হয়ায় বিশেষজ্ঞ মতামত দিতে পারব না।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি জিল্লুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, এসব পদে বিশ্বের সব দেশ একজন বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি স্থায়ীভাবে নিয়োগ দেন; বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে যাতে জবাব দিতে পারেন, নিজেদের অবস্থান সঠিক-যৌক্তিকভাবে তুলে ধরতে পারেন। গতবার এরকম একজন নিয়োগ না দেওয়ায় আমরা নির্বাচনে হেরেছি। এমনটা আর করতে দেওয়া যাবে না।

উল্লেখ্য, জাতিসংঘের শিপিং বিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম কাউন্সিল নির্বাচনে বাংলাদেশ আবারো হেরে গেছে। এর আগে ২০১৭ সালের নির্বাচনেও প্রতিদ্বিন্দ্বতা করে হেরেছিল বাংলাদেশ। এবার ২০২১ সালের ডিসেম্বের অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিন শ্রেণিতে ৪০ দেশ বিভিন্ন পদে নির্বাচিত হলেও কাউন্সিলের নির্বাহী পরিষদে বাংলাদেশের নির্বাচিত প্রতিনিধিত্ব থাকল না। এর ফলে বাংলাদেশ সমুদ্র নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়বে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের জন্য নির্বাচিত হওয়া খুবই জরুরি ছিল বলে মত দিয়েছেন মেরিটাইম বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, কাউন্সিলে বাংলাদেশের দুর্বল নেতৃত্ব এবং মেরিটাইম বিশেষজ্ঞ না থাকায় আমরা হেরেছি। বাংলাদেশ সবসময় কূটনৈতিক বা সরকারী কর্মকর্তা দিয়েই উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চেয়েছে। কিন্তু এই সেক্টরটা বিশেষায়িত কাজ; মেরিটাইম সেক্টরের বিশেষজ্ঞ নেতৃত্বের উপস্থিতি ছাড়া এই কাজটি করা কঠিন। বিশ্বের সব দেশই বিশেষজ্ঞ দিয়েই প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করেছে। এই অবস্থায় সরকার উদ্যোগি হয়ে দ্রুত একজন বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দিয়েছে গত ১৮ নভেম্বর ২০২১ সালে।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ