‘একটি ছাগলের জরিমানা কাহিনী’ নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। সম্প্রতি বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা পরিষদ চত্বরের পার্কের বাগানে ফুলগাছ খাওয়ার অপরাধে এক ছাগলের মালিককে দুই হাজার টাকা জরিমানা করেন সীমা শারমিন। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
অবশেষে ১০ দিন পর নিজের পকেট থেকে জরিমানার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে মালিককে সেই ছাগল ফেরত দিয়েছেন ইউএনও। বৃহস্পতিবার বিকালে ছাগলটি মালিক সাহারা বেগমের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
আদমদীঘি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সীমা শারমিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন,বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম খান, স্থানীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ওই নারীকে ছাগল ফেরত দেওয়া হয়েছে। তাকে সংশোধনের জন্য জরিমানা করেছিলাম, শাস্তি দেওয়ার জন্য নয়।
সীমা শারমিন বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের টার্গেট অন্য কিছু ছিল না। শুধুমাত্র সংশোধনের জন্য। ছাগল বিক্রির অভিযোগ ভিত্তিহীন। আর জরিমানা করার পর ছাগল আমার এখানে নিরাপত্তার জন্যই জিম্মায় রাখা হয়েছিল একজনের কাছে। যাতে ছাগলের কোনও ক্ষতি না হয়। ফুলগাছ খাওয়ার বিষয়ে ছাগলের মালিককে বারবার সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু তিনি কথা শোনেননি। এ কারণে ছাগল আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ছাগলের মালিককে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছিল।
ফেরত পাওয়ার পর ওই ছাগলের মালিক সাহারা বেগম বলেন, আমার ছাগল কয়েকদিনে খুব নাকাল হয়ে গেছে। এভাবে একটি পশুকে আটকে রাখা ঠিক না। তবে ছাগল ফেরত পেয়েছি এখন আর কোনও অভিযোগ নেই। তার ছাগল এর আগে বাগানের ফুল খায়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
এর আগে গত ১৭ মে উপজেলা পরিষদের বাগানের ফুল খাওয়ার অপরাধে ছাগলটি আটক করে ইউএনও।
এদিকে জরিমানার টাকা দিতে না পারায় ১০ দিন আটকে রাখার পর মালিক সাহারা বেগমকে না জানিয়ে ছাগলটি পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। বুধবার ছাগল মালিক সাহারা বেগম এ অভিযোগ তুলে গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, তিনি আদমদীঘি উপজেলা পরিষদ চত্বরের ডাকবাংলো সংলগ্ন এলকায় বসবাস করেন। তার স্বামীর নাম জিল্লুর রহমান। গত ১৭ মে তার ছাগলটি হারিয়ে যায়। অনেক জায়গায় তিনি ছাগলটির সন্ধান করেন। পরে এলাকার লোকজন তাকে জানান, ছাগলটি ইউএনও’র এক নিরাপত্তা কর্মীর কাছে রয়েছে। তিনি ইউএনও’র বাসার পাশে গিয়ে এক নিরাপত্তাকর্মীকে ছাগলকে ঘাস খাওয়াতে দেখেন। এ সময় সাহারা বেগম ছাগল নিতে চাইলে তাকে ছাগল দেওয়া যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন ওই নিরাপত্তাকর্মী এবং তাকে জানান, ফুলগাছের পাতা খাওয়ার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার টাকা দিয়ে ছাগল নিয়ে যান। পরে এ ঘটনায় জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে না পারায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গত ২২ মে ছাগলটি বিক্রি করে দিয়েছেন বলে সাহারা খাতুন অভিযোগ তুলেছিলেন।
সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন