সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
পদ্মা সেতুর ৩৬তম স্প্যান বসানো হয়েছে। আজ শুক্রবার (৬ নভেম্বর) সকাল ৯টা ৪২ মিনিটে ‘ওয়াব-বি’ নামের স্প্যানটি বসানো হয়েছে সেতুর মাওয়া প্রান্তের ২ ও ৩ নম্বর পিলারের ওপর।
সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক (মূল সেতু) দেওয়ান আবদুল কাদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর মাধ্যমে দৃশ্যমান হলো সেতুর ৫ হাজার ৪০০ মিটার।
এর আগে গত মাসে পদ্মা সেতুতে চারটি স্প্যান বসানো হয় যা প্রকৌশলীদের বড় একটি সাফল্য। চলতি মাসেও চারটি স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
জানা গেছে, শিডিউল অনুযায়ী ৩৬তম স্প্যান বসানোর জন্য দুই দিন সময় নির্ধারণ হয়। প্রথমদিন স্প্যানটিকে পিলারের কাছে নোঙর করে রাখা হয়। আজ আবার পিলারের উচ্চতায় স্প্যানটিকে তোলার কাজ শুরু হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার (০৫ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের মাওয়ায় অবস্থিত কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডের স্টিল ট্রাস জেটি থেকে স্প্যানটি বহন করে ভাসমান ক্রেন তিয়ান-ই রওনা দেয়। বেলা ১২টার দিকে কাঙ্ক্ষিত পিলারের কাছে পৌঁছে ৩ হাজার ৬০০ টন সক্ষমতার ক্রেনটি। নদী তীরবর্তী পথে কোথাও কোথাও পর্যাপ্ত গভীরতা না থাকায় বেশি সময় লাগে গন্তব্যে পৌঁছাতে।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ভাসমান ক্রেনের মাধ্যমে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের স্প্যানটি বহন করা হয়। এরপর সেখান থেকে রওনা দিয়ে নিয়ে যায় নির্ধারিত পিলারের কাছে। তবে স্প্যানটি বসানোর জন্য পর্যাপ্ত সময় না থাকায় আজ শুক্রবার পিলারের ওপর স্প্যান বসানোর কাজ শুরু হয়।
এদিকে, ৩৬তম স্প্যানটি আজ বসানোর পর পদ্মা সেতুতে বাকি রয়েছে আর পাঁচটি স্প্যান। এগুলো ১১ নভেম্বর পিলার ৯ ও ১০ নম্বরে ৩৭তম স্প্যান (২-সি), ১৬ নভেম্বর পিলার ১ ও ২ নম্বরে ৩৮তম স্প্যান (১-এ), ২৩ নভেম্বর পিলার ১০ ও ১১ নম্বরে ৩৯তম স্প্যান (২-ডি), ২ ডিসেম্বর পিলার ১১ ও ১২ নম্বরে ৪০তম স্প্যান (২-ই) ও ১০ ডিসেম্বর সর্বশেষ ৪১ নম্বর স্প্যান (২-এফ) বসবে ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের ওপর।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পুরো পদ্মা সেতু প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮২ শতাংশ। নদী শাসন কাজের অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ। মূল সেতুর বাস্তব কাজের অগ্রগতি এখন ৯০.৫০ শতাংশ। পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে। মূল সেতুর দুই হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ১ হাজার ১৬৬টির বেশি বসানো হয়েছে। দুই হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ১ হাজার ৬৪৬টির বেশি স্ল্যাব বসানো হয়েছে। মাওয়া ও জাজিরা ভায়াডাক্টে ৪৮৪টি সুপার টি গার্ডারের মধ্যে ২৫৮টি স্থাপন করা হয়েছে। স্প্যান বসানোর পাশাপাশি স্ল্যাব বসানোর কাজও এগিয়ে চলছে। বন্যা ও করোনা পরিস্থিতিতে চারমাস স্প্যান বসানো না গেলেও অক্টোবর মাসে চারটি স্প্যান বসানো হয়।
প্রকৌশলী সূত্রে জানা যায়, পদ্মা সেতুতে মোট ৪২টি পিলারে বসানো হবে ৪১টি স্প্যান। এর মধ্যে ৩৬টি স্প্যান বসিয়ে দৃশ্যমান হয়েছে ৫ হাজার ৪০০ মিটার। পুরো সেতু ৬, ১৫০ মিটার (৬.১৫ কিলোমিটার)।
মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে চীনের আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।
সূত্র: কালেরকন্ঠ