সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :
আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিতে কোনও মীরজাফরকে দেখতে চান না দলের কাউন্সিলররা। দলের সভাপতি শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে তারা বলেছেন, ‘আপনার প্রতি আমাদের আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। আপনি নিশ্চয়ই যোগ্য ও উপযুক্ত নেতা নির্বাচন করবেন। তবে কোনও মীরজাফরকে আমরা দেখতে চাই না।’
একই সঙ্গে কাউন্সিলররা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখতে চান বলেও দাবি করেছেন।
রবিবার সকালে আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে কাউন্সিলররা এ দাবি তোলেন। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সকাল সাড়ে ৯টায় কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়। সেখানে বিভিন্ন জেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকরা বক্তব্য দেন। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।
পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার শাহাদাৎ সম্রাট তার বক্তব্যে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আপনার প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আমরা চাই আপনি এমন একটি কমিটি উপহার দেবেন যাতে আমাদের আস্থা বজায় থাকে। আমরা কোনও মীরজাফরকে দলে দেখতে চাই না।’
রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজু বলেন, ‘আমাদের আগামী দিনের স্বপ্ন সজীব ওয়াজেদ জয়। তাকে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে দেখতে চাই। এ কাউন্সিল সে দাবি তুলে ধরছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনার পাশে থেকে ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে সজীব ওয়াজেদ জয় নেতৃত্ব দেবেন আমরা এটাই চাই।’
ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাকি বিল্লাহ বলেন, ‘আমরা মনে করি সজীব ওয়াজেদ জয়কে দলে অভিষিক্ত করা দরকার ‘
আর প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনিও আমাদের ছেড়ে যাবেন না।’
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি যাবো না তো, যাবো কোথায়?’
মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নেছার আহমেদ বলেন, ‘আমাদের সরকারের অর্জন জনগণের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে আমাদের দলে গুটি কয়েক নেতার সমস্যা রয়েছে। এসব সমস্যার কারণে আমরা এগুতে পারছি না। নেত্রী আপনাকে বলছি, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব উপহার দেবেন। গ্রহণযোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে দল এগিয়ে গেলে সেটাই ভালো হবে।’
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আজাদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগে নেতা বেড়েছে। তবে প্রশিক্ষিত নেতার সংখ্যা কম। এ জন্য একটি প্রশিক্ষণ শিবির চালু করা দরকার।’
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘যতোদিন বাঁচবেন, ততোদিন আপনাকে দলের সভাপতি হিসেবে দেখতে চাই।’
ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ কোরেশী বলেন, ‘আপনার বিশ্বস্ত, যার কাছে দল নিরাপদ থাকবে তার হাতেই নেতৃত্ব তুলে দেবেন বলে আমরা আশা করছি। সজীব ওয়াজেদ জয়কেও দলের নতুন কমিটিতে দেখতে চাই।’
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান ফারুক বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা আপনার আলোতেই আমরা আলোকিত। আমাদের বিজ্ঞ, প্রাজ্ঞ ও মহান অনেকেই আছেন, সবার আগে শেখ হাসিনা, তারপরেই তাদের অবস্থান। আওয়ামী লীগ আপনার সম্পদ। এই দলটাকে যতোদিন পারেন আপনাকেই টেনে নিয়ে যেতে হবে। আপনি বিজয়ের যে দিগন্ত উন্মোচন করেছেন পাশে থেকে সজীব ওয়াজেদ জয়কেও আপনার পেছনের কাতারে জায়গা করে দেবেন। তিনি স্মার্ট, দক্ষ। মনে রাখবেন সুগন্ধিত ফুল যদি না থাকে তবে খুশবু ছড়াবে কে? তাই জয়কে আমরা নেতৃত্বে দেখতে চাই।’
মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ বলেন,‘শেখ হাসিনা আপনি যতোদিন বেঁচে থাকবেন, ততোদিন আপনাকেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেখতে চাই।’
গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমতুল্লাহ খান বলেন, ‘আমাদের আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে একে অপরকে সাইজ করার একটি রাজনীতি আছে। দলকে ও দেশকে এগিয়ে নিতে হলে এই সাইজ করার রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। এ জন্য যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্ব বের করে আনতে হবে।’
লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নূর উদ্দিন চৌধুরী প্রধানমন্ত্রী প্রশংসা করে বক্তব্য দেওয়া শুরু করলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এতো তেল দিয়েন না’।
সূত্র : বাংলাট্রিবিউন