সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারে দেশে শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক কম্বিং অভিযান ‘অপারেশন আইরিন’। গত ৮ জুলাই থেকে এ অপারেশন শুরু হলেও আজ শুক্রবার থেকে এ অভিযান আরও জোরদার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কাস্টমস গোয়েন্দারা। বাংলাদেশ ছাড়াও এ অভিযান চলবে আসিয়ান ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৩৩টি দেশে। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সন্ত্রাসী হামলাসহ নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে ‘এনফোর্সমেন্ট কমিটি অব দ্য কাস্টমস অপারেশন কাউন্সিল’-এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ অভিযান শুরু হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
শুল্ক ও গোয়েন্দা অধিদফতরের সহকারি পরিচালক মোহাম্মদ জাকারিয়া জানান, বাংলাদেশসহ দেশে দেশে সন্ত্রাসী হামলার কারণে জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়া ছাড়াও সামাজিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নকারী এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ, বিস্ফোরক ও মাদক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত। অনেক ক্ষেত্রেই মিথ্যা ঘোষণা ও ঘোষণা ছাড়া চোরাকারবারীরা নানা কৌশলে এসব অবৈধ পণ্যের পাচার করছে।
শুল্ক ও গোয়েন্দা অধিদফতরের এ কর্মকর্তা জানান, বিগত তিন বছরে বিভিন্ন দেশের কাস্টমস প্রশাসন হাজারেরও বেশি অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরকের চালান আটক করেছে। ‘এনফোর্সমেন্ট কমিটি অব দ্য কাস্টমস অপারেশন কাউন্সিল’-এর পর্যালোচনায় দেখা যায়, আসিয়ান ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এ ধরনের ঘটনা দিন দিন বাড়ছে।
ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউসিও) অধীনে ‘রিজিওনাল ইন্টেলিজেন্স লিয়াজোঁ অফিস ফর এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক’ এ অভিযানের সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করছে। বাংলাদেশ এ সংগঠনের সক্রিয় সদস্য হিসেবে ‘অপারেশন আইরিন’ নামের অভিযানে অংশ নিচ্ছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট ন্যাশনাল কনট্যাক্ট পয়েন্ট (এনসিপি)-এর সদস্য হিসেবে অভিযানের বিষয়টি সার্বিকভাবে সমন্বয় করছে। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর এ অভিযানের অংশ হিসেবে পোস্টাল এবং কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে নিয়ে আসা পার্সেলগুলোর স্ক্যান কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের সহকারি পরিচালক মোহাম্মদ জাকারিয়া আরও জানান, এ অভিযান জোরদার করার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার দুপুরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ফ্রেইট ইউনিটের পোস্টাল ও কুরিয়ার শাখায় আগত পার্সেলগুলো র্যাবের ডগ স্কোয়াড দিয়ে বিশেষভাবে তল্লাশি করা হয়। ডগ স্কোয়াড সন্দেহজনক একটি প্যাকেট শনাক্ত করে। যার মধ্যে একটি প্লাস্টিকের কৌটায় ক্যাপসুল জাতীয় দ্রব্য পাওয়া যায়। যা রাসায়নিক পরীক্ষাসহ পরবর্তী আইনি পদক্ষেপের জন্য সাময়িকভাবে আটক করা হয়েছে।
অপারেশন আইরিন-এর অংশ হিসেবে বুধবার জিপিও-এর বিমানবন্দরস্থ কার্যালয় থেকে ৩০ কেজি ওজনের একটি পার্সেলে ভায়াগ্রাসহ বিভিন্ন ধরনের সাত হাজার ৪০০ পিস যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট আটক করা হয়। এছাড়াও ছয় পিস ধারালো ছুরি ও ১৫ লাখ টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আটক করা হয়।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের যুগ্ম পরিচালক সাইফুর রহমান জানান, অপারেশন আইরিন-এর অংশ হিসেবে গত ৮ জুলাই থেকে কাস্টমসের কয়েকটি দল এ অভিযান পরিচালনা করে আসছিল। অভিযানটি আরও জোরদার করার লক্ষ্যে আজ শুক্রবার থেকে র্যাব, সীমান্তরক্ষায় নিয়োজিত বিজিবি ও কোস্টগার্ডসহ সকল সংস্থার সদস্যদের সহযোগিতা নেওয়া হবে।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন