নিজস্ব প্রতিবেদক:
গাঁজা, ইয়াবা ও এলকোহলের মিশ্রন ঘটিয়ে একসঙ্গে পান করায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়।বিষয়টি নিশ্চিত করেছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। গতকাল রবিবার ভোরে ও সকালে মারা যান তারা।
মৃতরা হলেন, প্রকৌশলী বেলি দিমিত্রী (৪১), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মুহতাসিম রাফিদ খান এবং অর্থনীতি বিভাগের তুর্য রায়। তারা দুজনই তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
বেলি দিমিত্রী পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর প্রকল্পে কর্মরত ছিলেন। অতিরিক্ত মদপানের কারণে বিষক্রিয়ায় তারা মারা গেছেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
এ ছাড়াও একই ঘটনায় অসুস্থ হয়েছেন আরও দুই প্রকৌশলী মিকায়েল দিমা, লোগেচেভ লেভ এবং রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রকি। তারা রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রাবি ছাত্রফ্রন্টের তোহরাব হোসেন নামের এক নেতা জানান, রাফিদ ও তুর্য রাবি ছাত্রফ্রন্টের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
একাধিক গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, নগরীর উপরভদ্রা এলাকার সাঈদ টাওয়ারে অবস্থিত মেসে তুর্য থাকতেন। শুক্রবার রাতে (৫ এপ্রিল) তিনি তার দুই বন্ধুকে সেখানে ডাকেন। তারা তিনজন ইয়াবা, গাঁজা ও পানির সঙ্গে অ্যালকোহল মিশিয়ে একসঙ্গে পান করেন। এরপর থেকেই তাদের অবস্থার অবনতি হতে থাকে।
তোহরাব হোসেন সাংবাদিকদের জানান, শনিবার রাত ১০টার দিকে রাফিদ তাকে ফোন করে মদপানের কারণে তাদের অসুস্থতার কথা জানান। তোহরাব তাদের হাসপাতালে নিতে চাইলে তারা হাসপাতালে না যেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ৩টার দিকে তারা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে তোহরাব তাদেরকে রামেক হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে রোববার ভোর ৫টার দিকে রাফিদ এবং সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তুর্য রায় মারা যান।
এদিকে, শনিবার বিকেলে বেলি দিমিত্রীসহ পাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর প্রকল্পে কর্মরত চার প্রকৌশলী মদপান করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সন্ধ্যায়ই তাদেরকে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাদেরকে রামেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। হাসপাতালে আনা হলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক দিমিত্রীকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালের চিকিৎসক নাফিস রহমান বলেন, হাসপাতালে পৌঁছার আগেই দিমিত্রীর মৃত্যুহয়। বাকি তিনজনের মধ্যে দু’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং আরেকজনকে সুস্তু থাকায় হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে অতিরিক্ত মদপানের কারণেই বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে।
রাজশাহী মহানগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান জানান, আলাদা ঘটনায় মারা যাওয়া তিনজনের মরদেহ বর্তমানে হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। পরিবার বা প্রতিষ্ঠানের লোকজন এলে ময়নাতদন্ত শেষে তাদের মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা হবে বলেও জানান রাজপাড়া থানার এই পুলিশ কর্মকর্তা।
জানতে চাইলে রাবি প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘শুনেছি অতিরিক্ত ড্রিংকস করার কারণে অসুস্থ হয়ে রাবির দুই শিক্ষার্থী মারা গেছে।’
স/আর