বৃহস্পতিবার , ১৩ অক্টোবর ২০১৬ | ২৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

ভারতের যে গ্রামে কোনও শিশু জন্মায় না

Paris
অক্টোবর ১৩, ২০১৬ ৫:৩৪ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

গ্রামটি দুর্গম নয়। মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপাল থেকে মাত্র ৭০ কিলোমিটার দূরে। কিন্তু এক অন্ধ বিশ্বাসের ফলে গ্রামবাসীরা পড়ে রয়েছেন কয়েকশো বছর পিছনে।

গ্রামটিতে গত বহু দশক ধরে কোনও শিশু জন্ম নেয় নি। সেখানকার মানুষ বিশ্বাস করেন যে গ্রামে কোনও শিশু জন্ম নিলে হয় তার মৃত্যু হবে, অথবা বাচ্চাটি পঙ্গু হয়ে যাবে।

তাই গর্ভবতী নারীদের গ্রামের বাইরে গিয়ে সন্তানের জন্ম দিতে হয়। গ্রামের বাইরে একটি প্রসূতি ঘর তৈরি করা আছে, সেখানেই বেশীরভাগ মা সন্তানদের জন্ম দেন। আজকাল কেউ অবশ্য স্থানীয় হাসপাতালেও যান প্রসবের জন্য। তবে গ্রামের ভেতরে সন্তান প্রসব কখনই হয় না।

রাজগড় জেলায় নরসিংগড় মহকুমার অধীন সাঁকা জাগীর নামের এই গ্রামটিতে প্রায় ১২০০ মানুষ থাকেন। বেশীরভাগই গুর্জর সম্প্রদায়ের মানুষ। গ্রামে আছে একটি সুপ্রাচীন মন্দিরও।

নরসিংগড়ের তহশীলদার অমিতা সিং তোমর বলছিলেন, “অন্ধ বিশ্বাসের কারণেই ওই গ্রামের বাইরে গিয়ে শিশুদের জন্ম দেন মায়েরা। তবে এক যুবক নতুন সরপঞ্চ (পঞ্চায়েত প্রধান) হয়েছেন। তিনি চেষ্টা করছেন গ্রামের মানুষদের এই বিশ্বাস ভাঙ্গতে। আমি নিজেও দিন কয়েকের মধ্যে ওখানে যাব ঠিক করেছি।”

গ্রামের নতুন সরপঞ্চ নরেন্দ্র সিং ও তার আট ভাইয়েরও জন্ম হয়েছে গ্রামের বাইরেই।

গুর্জর

মি. সিং  জানাচ্ছিলেন, “গ্রামের ভেতরে কোনও শিশু জন্ম নেয় না ঠিকই। এটা কয়েক শো বছরের পুরণো প্রথা। কিন্তু কোনও শিশু জন্ম নিলেই যে সে মারা যাবে বা পঙ্গু হয়ে যাবে, এটা একটা অন্ধ বিশ্বাস। অনেকেই মনে করে আমাদের গ্রামের ওপরে কোনও অভিশাপ আছে। ব্যাপারটা তা নয়।”

“আসলে গ্রামের মধ্যেই যে শ্যামজী মন্দির রয়েছে, সেটা প্রসবের সময়ে অপরিচ্ছন্ন হয়ে যাবে বলেই প্রাচীন কালে এরকম একটা প্রথা চালু হয়েছিল। তবে বছর কুড়ি আগে গ্রামের ঠিক বাইরে একটা প্রসূতি ঘর তৈরি করা হয়, যেখানে মায়েরা সন্তান প্রসবের কয়েকদিন আগে থেকে গিয়ে থাকতেন। এখন সেটার অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। কিন্তু এখন অনেকেই নরসিংগড়ের হাসপাতালে যান সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য,” জানাচ্ছিলেন নরেন্দ্র সিং।

তার বাবা মাঙ্গীরাম কয়েক দশক গ্রামের সরপঞ্চ ছিলেন। এখন দায়িত্ব নিয়ে সাধারণ মানুষকে বোঝাতে শুরু করেছেন যুবক নরেন্দ্র যে গ্রামের ওপরে কোনও অভিশাপ নেই – সন্তান প্রসব করলেই যে সে মারা যাবে বা পঙ্গু হয়ে যাবে, এই ধারণাও ভুল।

সাঁকা জাগীর গ্রাম থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র আছে, যদিও সেখানে সন্তান প্রসবের কোনও ব্যবস্থা নেই।

মহকুমা শাসক ঋষি গর্গ অবশ্য জানতেন না যে তার এলাকায় এরকম কোনও গ্রাম আছে যেখানে বহু দশক ধরে কোনও শিশু জন্ম নেয় নি।

“এরকম কোনও গ্রামের খবর আমি জানি না। তবে আপনি যখন বলছেন নিশ্চয়ই খোঁজ নেব।”

সূত্র: বিবিসি

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক