সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ যে যথেষ্ট সক্রিয়, তা আবার প্রমাণিত হলো আজ বুধবার।
জেএমবি নেতা কাওসার ওরফে বোমারু মিজানকে ছিনতাইয়ের ছক আগেভাগেই ভেস্তে দিয়ে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স মুর্শিদাবাদ থেকে দুই জঙ্গি মুশিবুর রহমান এবং রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তার করল।
সূত্র দাবি করেছেন, গোয়েন্দাদের খবর ছিল, কাওসারকে ছিনতাইয়ের ছক কষেছে জেএমবি। কাওসার গ্রেফতার হওয়ার পরে এখন কলকাতাতে জেলে আছেন এবং মাঝে মাঝেই তাকে কোর্টে নিয়ে যাওয়া হয় মামলার কাজে।
সূত্র জানায়, কিছু দিন আগে কলকাতা থেকে আরিফুল ইসলাম নামে এক জঙ্গি ধরা পড়ার পর, তাকে জেরা করে জানা যায় যে পুলিশের গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কাওসারকে নিয়ে যাবার ছক কষেছিল জেএমবির নেতৃবৃন্দ। তার পরেই ওই দুই জঙ্গির খোঁজে তল্লাশি শুরু করা হয়।
‘বুধবার আমরা তাদের ধরি। তারা দুজনেই বোমা বানাতে এবং নাশকতা ঘটাতে পারদর্শী।’ বলেন ওই সূত্র।
তিনি আরও জানান, কাওসার পশ্চিমবঙ্গের অনেক জায়গায় গ্রামের ছেলেদের মগজধলাই করে জেএমবির সক্রিয় সদস্য বানিয়ে ফেলেছে। এই সদস্যরা বাংলাদেশের জেএমবি নেতাদের কাছ থেকে সময় সময় নির্দেশ পেত।
ধৃতদের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে এবং তাই পুলিশ চিন্তিত। পুলিশ সূত্রে খবর, ছিনতাইয়ের জন্য জঙ্গি শিবিরে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। অ্যাসিড বোমা কিভাবে তৈরি করা হয়, তাও জানত মুশিবুর এবং রুহুল।
‘আমরা ওদের কাছে কলকাতার অনেক জায়গার নকশা পেয়েছি। কাওসারকে ছাড়িয়ে নিতে যাবার সাথে সাথে ওদের হয়ত কোন বড় হামলার পরিকল্পনা ছিলো।’ বলেন এক পুলিশ কর্মকর্তা।
যদিও বাংলাদেশে জেএমবির কার্যকলাপ ইদানিং অনেক কমেছে, পশ্চিমবঙ্গে কিন্তু মাঝে মাঝেই ধরা পড়ছে এই সংগঠনের সাথে যুক্ত ভারতীয় এবং বাংলাদেশি নাগরিক।
গত মাসে আসিফ ইকবাল নামের এক যুবককে গ্রেফতার করে এসটিএফ মুর্শিদাবাদ থেকে। পুলিশ জানিয়েছে, তাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল কাওসার নিজেই। তাকে জেরা করে এই দু’জনের গতিবিধির ওপরে নজর রাখছিলেন গোয়েন্দারা।
ভারতে নানা জায়গায় নাশকতার সাথে জড়িত ছিল কাওসার। পশ্চিমবঙ্গে ২০১৪ সালের খাগড়াগড় বিস্ফোরণে হাত রয়েছে কওসরের। ২০১৮-র জানুয়ারিতে বুদ্ধগয়ায় বিস্ফোরণের ছকও কষা হয় তারই নেতৃত্বে। গত বছর দক্ষিণ ভারতের বাংগালোর থেকে কাওসারকে গ্রেফতার করে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) এবং পরে তাকে হেফাজতে নেয় কলকাতা পুলিশ।
পলিশ সূত্র জানিয়েছেন, এই দুই জঙ্গি সংক্রান্ত সব তথ্য তারা বাংলাদেশের তদন্তকারী সংস্থার হাতে তুলে দেবেন।
‘জঙ্গি সংগঠনের সাথে এই লড়াইয়ে ভারত এবং বাংলাদেশ এক সাথে আছে।’ বলেন এক পুলিশ কর্মকর্তা।