সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
জরুরি প্রয়োজনে মোবাইলে অর্থ লেনদেন, স্কুল-কলেজের ফি প্রদান, মোবাইলে রিচার্জ, ইউটিলিটি বিল পরিশোধ, বাস ট্রেনের টিকিট ক্রয়, রাইড শেয়ারিংয়ের ভাড়া পরিশোধ, অনলাইনে খাবারের অর্ডারসহ অনলাইন ভিত্তিক কেনাকাটা এমএফএস বা মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস দেশের মানুষের জীবনের অংশ হিসেবে পরিণত হয়েছে।
বর্তমানে দেশের মোট এমএফএস এর গ্রাহক সংখ্যা ৬ কোটি ৬৮ লাখ। প্রতিদিন প্রায় ৬৫ লাখ গ্রাহক মোবাইলের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করে এক হাজার কোটি টাকার বেশি।
জনপ্রিয় এই মোবাইল ওয়ালেট সেবা থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে একদল অসাধু সক্রিয় চক্র। এ বিষয়ে কিছু সচেতন হলেই আপনার নিজের ওয়ালেট সুরক্ষিত রাখতে পারবেন। পাঠকদের সুবিধার্থে মোবাইল ওয়ালেট সুরক্ষিত রাখার কয়েকটি কৌশল তুলে ধরা হলো—
আমাদের ব্যবহূত বিভিন্ন ডিজিটাল অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখার জন্য পিন বা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে থাকি। ডিজিটাল ওয়ালেটের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়। পিন নম্বরই আসলে ডিজিটাল ওয়ালেটের অন্যতম নিরাপত্তার চাবি। এজন্য মোবাইল ওয়ালেটের পিন বা পাসওয়ার্ড অন্য কারো সঙ্গে শেয়ার করা যাবে না। এতে আপনার ওয়ালেটের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।
একটি বিষয় নিশ্চিত যে, পিন নম্বর বা পাসওয়ার্ড ছাড়া মোবাইল ওয়ালেটের লেনদেন কোনো অবস্থাতেই সম্ভব নয়। এজন্য ওয়ালেটের পিন নম্বর শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন।
অনেক সময় অভিনব কৌশলে প্রতারকরা সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের কর্মী সেজে ফোন দিচ্ছে গ্রাহকদের। গ্রাহকরাও সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের কর্মী ভেবে তাদের গোপন পিন নম্বর শেয়ার করছেন। একটি বিষয় মনে রাখা ভালো আর তা হলো, সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের আপনার পিন নম্বরের প্রয়োজন নেই। পিন নম্বর শুধু ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট নিরাপত্তার জন্য প্রদান করা হয়। ওয়ালেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান কখনোই আপনার পিন নম্বর চাইবে না।
কখনো যদি কেউ আপনার ওয়ালেটের পিন নম্বর চায় তাহলে আপনি বুঝবেন যে, আপনি প্রতারিত হচ্ছেন। এজন্য পরিস্থিতি যাই হোক আপনি পাসওয়ার্ড শেয়ার করবেন না।
আপনি লটারি জিতেছেন, চাকরি পেয়েছেন, আপনার নিকট আত্মীয় চরম বিপদে আছেন, ভুল করে আপনার অ্যাকাউন্টে টাকা চলে গেছে, অ্যাকাউন্টের হালনাগাদের কাজ চলছে, আপনার অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে-এমন বলে আপনার কাছে পিন নম্বর চাইলে বা অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত তথ্য চেয়ে কেউ ফোন করলে বা এসএমএস এর মাধ্যমে কোনো তথ্য চাইলে আগে তার পরিচয় নিশ্চিত করুন। যে নম্বর থেকে ফোন এসেছে সেই নম্বর পরিচিত হলেও ভিন্ন উপায়ে পরিচয় নিশ্চিত করুন। পরিচয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কোনো প্রকার লেনদেন করবেন না।
অনেক গ্রাহক হ্যান্ডসেটে মোবাইল অ্যাকাউন্টের নম্বর সংরক্ষণ করে রাখেন। যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কোনো কারণে মোবাইল হারিয়ে গেলে মোবাইল অ্যাকাউন্ট ঝুঁকিতে পড়বে। সুতরাং পিন নম্বর, ইউজার আইডি মোবাইলে সংরক্ষণ করে রাখবেন না। সবসময় লেনদেন শেষে অ্যাকাউন্ট থেকে লগআউট করবেন।
অনেক ক্ষেত্রে যেসব গ্রাহক প্রতারণার শিকার হন তাদেরকে ফোনে কথা বলতে বলতেই নির্দেশনা দেওয়া হয়। বলা হয় এখন ১ চাপুন, এখন অ্যামাউন্ট দিন, পিন নম্বর দিন। কখনোই ফোনের নির্দেশনা অনুসারে বাটনে প্রেস করবেন না। ফোনের নির্দেশনা অনুসরণ করিয়ে আপনাকে দিয়েই আপনার অ্যাকাউন্টের টাকা প্রতারক তার অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নিতে পারে।
ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার, ইমো বা অন্য কোনো মাধ্যমে খুব কাছের পরিচিত কেউ টাকা ধার চাইলে বা বিকাশ করতে বললে সঙ্গে সঙ্গে তা করবেন না। টাকা পাঠানোর আগে আসলেই তিনি টাকা ধার চেয়েছেন কিনা নিশ্চিত হয়ে নিন।
কোনো অবস্থাতেই কাউকে ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) নম্বর শেয়ার করবেন না বা ওটিপি’র মেসেজ শেয়ার করবেন না।