নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীর শাহ মখদুম বিমানবন্দরে সাড়ে তিন কোটি টাকার উন্নয়নকাজে ব্যাপক অনিয়ম করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর আগে অনিয়মের মাধ্যমে বিমানবন্দরের সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করায় কয়েক বছরের মধ্যে প্রাচীরটি ভেঙে পড়ে।
আবারও সেখানে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি চলছে ড্রেন নির্মাণকাজ। দুটিতেই নিম্নমানের কাজ হচ্ছে বলে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় লোকজন। তবে উন্নয়নকাজের তদারককারী কর্মকর্তা বলছেন, কোনো অনিয়ম হচ্ছে না কাজে।
জানা গেছে, শাহ মখদুম বিমানবন্দরের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে ড্রেন এবং সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজ চলছে। এর মধ্যে বিমানবন্দরের পশ্চিম পাশে প্রায় দুই হাজার ২০০ ফিট ড্রেন নির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি ৯৮ লাখ টাকা। আর পূর্ব পাশের সীমানাপ্রাচীর এবং ৪৩০ ফিট ড্রেন নির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, দুটি কাজেই ব্যাপক অনিয়মের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। পূর্ব পাশের ড্রেন নির্মাণের জন্য যে পরিমাণ রড ও সিমেন্ট দেওয়ার কথা, এর তুলনায় খুব কম দেওয়া হচ্ছে।
আকবর আলী নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘বিমানবন্দরের পূর্ব পাশের অংশ দিয়ে লোকজনের যাতায়াত তেমন না থাকায় কাজ হচ্ছে ইচ্ছামতো। এ নিয়ে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করেছেন কয়েকবার। এর পরও কোনো লাভ হয়নি। একইভাবে কাজ করা হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী স্থানীয় সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনের কাছেও অভিযোগ করেছেন। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। একইভাবে কাজ চলছে। ’
নূর ইসলাম নামের স্থানীয় আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘এই বিমানবন্দরের প্রাচীর এর আগে কয়েক দফা ভেঙে পড়েছে। আবার সেই প্রাচীর নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু এবারও যেভাবে কাজ করা হচ্ছে তাতে কয়েক বছরও যাবে না হয়তো। যেকোনো সময় হয়তো ভেঙে পড়বে। আবার ড্রেনগুলো যেভাবে করা হচ্ছে সেগুলোও ভেঙে পড়বে দ্রুত। ’
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্র মতে, শাহ মখদুম বিমানবন্দরের পশ্চিম পাশের কাজটি করছেন আমিনুল ইসলাম নামের একজন ঠিকাদার। পূর্ব পাশের কাজটি করছেন রুহুল আমিন নামের একজন ঠিকাদার। তবে অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে এই দুই ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে শাহ মখদুম বিমানবন্দর উন্নয়নকাজের তদারককারী ও সিভিল এভিয়েশনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হাসিবুল হক বলেন, ‘স্থানীয়রা অভিযোগ করছে। তবে নিয়মতমতোই কাজ হচ্ছে। কোনো অনিয়ম হচ্ছে না। কাজের মান নিয়েও আমাদের কাছে কোনো ছাড় নাই। ফলে একেবারে সঠিক মানের কাজই হচ্ছে। ’
শাহ মখদুম বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক সেতাফুর রহমান বলেন, ‘স্থানীয় এমপি (সংসদ সদস্য) বিষয়টি নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে কাজটি সুষ্ঠুমতোই হচ্ছে বলে জানি। এর পরও কাজটি দেখাশোনা করছেন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী। তিনিই এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন। ’
সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন বলেন, ‘স্থানীয়দের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমি বিষয়টি নিয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। ’ স/আর