সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
বুধবার রাতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল পেজ থেকে ফেসবুক এবং টুইটারে ভিন্ন ভিন্ন চারটি ছবিতে চারটি বার্তা সম্বলিত পোষ্ট দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে দুইটি সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি নিয়ে।
পোষ্টগুলোতে সাংবাদিকদের বেআইনিভাবে তথ্য সংগ্রহ এবং তথ্যের জন্য সরকারি অফিসের কম্পিউটার হ্যাক হওয়া ঠেকাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
নতুন একটি আইনের পক্ষে ক্ষমতাসীন দলের এমন অবস্থান নেবার কারণ কি? প্রশ্নের জবাবে এসব পোষ্টে বাংলাদেশের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলছেন, সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতি তার দলের সমর্থন থাকাটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু প্রচারণায় সাংবাদিকদের সংবাদ সংগ্রহের পদ্ধতিকে গুরুত্ব দেবার কারণ কী?
মিঃ জব্বার বলছেন, “কারণ আইন প্রণীত হবার পরে ‘হাইপার সেনসিটিভ রিঅ্যাকশন’ হচ্ছে সাংবাদিকদের। কিন্তু আমরা সাংবাদিক ও তাদের কয়েকটি সংগঠনের সাথে, সম্পাদকদের সাথে বসেছি, বলেছি, আইন প্রণীত হবে, রুলস প্রণীত হবে, তারপরও যদি কোন কনসার্ন থাকে, আমরা চেষ্টা করবো যাতে সেসব দূর করা যায়।”
সেপ্টেম্বরে জাতীয় সংসদে আইনটি পাশ হবার পর গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই সাংবাদিকদের কয়েকটি সংগঠন এর প্রতিবাদ জানিয়েছে।
উদ্বেগ প্রকাশ করে ইতিমধ্যেই তথ্য এবং আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছে সংবাদপত্রের সম্পাদকদের পরিষদ। যদিও সরকার বলছে আইনটি নিয়ে সাংবাদিকদের উদ্বেগের কিছু নেই।
তবে, আইনটির একটি ধারায় বলা আছে ডিজিটাল মাধ্যমে সরকারি গোপনীয়তা ভঙ্গ করা হলে ১৪ বছরের সাজা হবে।
এর মানে হলো, যে বিষয়টি সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে জনগণকে জানাচ্ছে না, তা নিয়ে রিপোর্ট করলে একজন সাংবাদিককে শাস্তি পেতে হতে পারে।
আবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দেয়া পোষ্টগুলোর একটিতে বলা হয়েছে, পৃথিবীর কোন দেশই সাংবাদিকদের বেআইনিভাবে তথ্য সংগ্রহ করার অধিকার দেয়না।
কিন্তু বেআইনিভাবে তথ্য সংগ্রহ করা মানে কি? ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলছেন, ১৯২৩ সালের অফিসিয়াল সিক্রেটস আইনটি এখনো বলবত আছে।
“সে আইনে বলা আছে, সরকার যদি কোন প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে, সামরিক স্থাপনা ও সরঞ্জাম, অথবা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে পারে,কোন নাগরিক তো তাহলে সে তথ্য সংগ্রহ করতে পারে না।”
“এটা তো অপরাধ। কারণ আমার রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে তার ফলে।”
তবে তিনি উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে, নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘে এবং বুধবার গণভবনে সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করেছেন, মিথ্যা খবর না দিলে এই আইনের কারণে তাদের উদ্বিগ্ন হবার কিছু নেই।