নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীতে পদ্মার পানি বৃদ্ধি অব্যহত রয়েছে। পানি বৃদ্ধি হয়ে প্রতিনিয়তই বিপদসীমার দিকে ধাবিত হচ্ছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় পদ্মার পানি ছিল ১৮ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার। আজ রোববার সকাল নয়টায় ১৮ দশমিক ৪৬ সেন্টিমিটার। আর চার সেন্টিামিটার হলেই বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে পদ্মার পানি।
আজ রোববার সকাল ১১ টায় রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ লিডার শহিদুল ইসলাম এ পানি বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পানি বৃদ্ধির ফলে প্রতিদিনই একে পর এক গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। আর ঘর ছাড়া হচ্ছে হাজারো মানুষ। শুধু ঘর ছাড়াই নয়, হরাতে হচ্ছে নিজের বাবা-দাদার ঘরবাড়ি সয়সম্বল। অনেকেই সেই সব ঘরবাড়ি রেখে চলে আসছেন উপকুলের দিকে। তাদের চোখে মুখে অতঙ্কের ছাপ। নেই তাদের ঘরবাড়ি নেই খাদ্য। যেন পদ্মা কেড়ে নিলো সবটুকুই।
এদিকে, পদ্মায় অব্যাহতভাবে পানি বেড়ে যাওয়ায় রাজশাহীর গোদাগাড়ী, পবা, চারঘাট ও বাঘার পদ্মাপাড়ের মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। এসব এলাকায় পানি ঢুকে যাওয়ায় ফলে ইতিমধ্যে এসব এলাকার শত শত পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে নির্দিষ্ট আশ্রয়কেন্দ্রে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছেন বান ভাষী মানুষ। এসব পরিবারের প্রধান আয়ের উৎস কৃষিকাজ ও গবাদিপশু। এদিকে তারা গবাদিপশু নিয়ে পড়েছেন চরম বেকায়দায়।
নগরীর পদ্মা নদী সংলগ্ন সিমলা পার্ক, লালন শাহ পার্ক, পদ্মা গার্ডেন, বড়কুঠি, কুমারপাড়া, আলুপট্টি এলাকায় বাঁধের উচ্চতার সমান পানির উচ্চতা হয়ে গেছে। আর কয়েক সেন্টিমিটার পানি বাড়লে পানি শহররক্ষা বাঁধ অতিক্রম করবে। এ ছাড়া নগরীর শ্রীরামপুর এলাকায় পুলিশ লাইন সংলগ্ন বাঁধ গত বছর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এবং তা সময়মতো সংস্কার করতে না পারায় তা নিয়েও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে নগরীর মানুষদের মধ্যে। ওই বাঁধের বেশ কয়েক জায়গায় লাল পতাকা দিয়ে বিপদসংকেত দেখানো হচ্ছে।
শ্রীরামপুর এলাকার বাসিন্দা আসরাফ হোসেন বলেন, যেভাবে পদ্মার পানি বাড়ছে তাতে মনে হচ্ছে, বাঁধ ডুবে শহর প্লাবিত হবে। পানি বাঁধ ছুঁই ছুঁই করছে। ইতিমধ্যে আমাদের মহলার ভেতর পদ্মার পানি ঢুকে গেছে। এভাবে কয়েকদিন পানি বাড়লে আমি নিশ্চিত বাঁধ ডুবে যাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমান জানান, প্রতিবছর ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেওয়া থাকে। ফারাক্কা বাঁধের পানি ধরে রাখার সক্ষমতা ৫০ হাজার কিউসেক। এর অতিরিক্ত পানি ধরে রাখতে পারে না। এ বছর গঙ্গা বেসিনের বিহার, উড়িষ্যা ও উত্তর প্রদেশে প্রবল বর্ষণ হওয়ায় সেই বর্ষণের পানি ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে এসে পদ্মার পানির উচ্চতা বাড়িয়ে দিচ্ছে। এটা আরো বাড়বে। ভয়ের কোনো কারণ নেই। যাতে বাঁধ কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
স/আ