সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
কথিত আইএস ভিডিওতে বাংলাদেশে আরও জঙ্গি হামলার হুমকিদাতা তরুণদের একজন সাবেক নির্বাচন কমিশনার সফিউর রহমানের ছেলে বলে শনাক্ত করেছেন তার পরিচিতজনরা।
এই তরুণকে তাহমিদ রহমান শাফি বলছেন তারা। জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ক্লোজ আপ ওয়ানের প্রথম আয়োজনে তিনি শীর্ষ ১৫ কণ্ঠশিল্পীর মধ্যে ছিলেন বলে ফেইসবুকে কয়েকজন জানিয়েছেন। ওই প্রতিযোগিতায় তার গাওয়া ‘মন শুধু মন ছুঁয়েছে’ শিরোনামের গানের একটি ভিডিও শেয়ার করছেন তারা।
নির্ঝর মজুমদার নামে একজন ফেইসবুকে লিখেছেন, “আজকে আইসিসের ভিডিওতে আহমেদ শাফি নামের যে ছেলেকে নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে, সেই ছেলেও গ্রামীণফোনেই চাকরি করত।”
তাহমিদ ২০০০-২০০১ সালে নটরডেম কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকের বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র ছিলেন বলে তার সে সময়ের সহপাঠী জানিয়েছেন।২০০২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক শেষে তাহমিদ ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএতে পড়েছেন বলে জানান তিনি।
তাহমিদ পরে বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণ ফোনে কিছু দিন চাকরি করেন বলে সেখানকার কয়েকজন সহকর্মী জানিয়েছেন।
যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের এক ছেলে এবং মতিউর রহমান নিজামীর এক নাতনী গ্রামীণ ফোনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখায় চাকরি করতেন।
স্বাধীনতাবিরোধী হিসেবে পরিচিত এরশাদ সরকারের মন্ত্রী প্রয়াত রাজিয়া ফয়েজের ছেলে আমান আশরাফ ফয়েজও গ্রামীণ ফোনের বিপণন বিভাগের উপ-পরিচালক পদে চাকরি করতেন। তিনি এখন জিটিভির প্রধান নির্বাহী হিসেবে কাজ করছেন।
গ্রামীণ ফোনের কারিগরিসহ বিভিন্ন শাখায় মৌলবাদী রাজনৈতিক দল সংশ্লিষ্ট অনেকে চাকরি করছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাদের কয়েকজন সহকর্মী জানিয়েছেন। এ নিয়ে বিভিন্ন ব্লগেও লেখালেখি হয়েছে।
তাহমিদ সাবেক নির্বাচন কমিশনার সফিউর রহমানের ছেলে বলে জানান সাবেক সহপাঠী ও সহকর্মীরা।
নির্বাচন কমিশনের একজন জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব জানান, সফিউর রহমান ২০০০ থেকে ২০০৫ সাল মেয়াদে নির্বাচন কমিশনার ছিলেন।
সে সময় তিনি সফিউরের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন জানিয়ে এই সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ওই নির্বাচন কমিশনারের এক ছেলের নাম তাহমিদ রহমান শাফি।
তার সাবেক সহপাঠীদের কয়েকজন বলছেন, প্রায় তিন বছর আগে তাহমিদের সঙ্গে শেষ দেখা হয় তাদের।“যখন থেকে বুঝতে পারা গেল সে অন্য দিকে ঝুঁকছে তখন থেকে তার সঙ্গে অন্য বন্ধুদের যোগাযোগও কমে যায়,” বলেন তাদের একজন।
রাজধানীর নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকায় প্রয়াত সফিউর রহমানের বাসা বলে নির্বাচন কমিশনের ওই কর্মকর্তা জানান। তবে বিস্তারিত ঠিকানা জানাতে পারেননি তিনি।
নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে ২০০০ সালের ২৫ জুন থেকে ২০০৫ সালের ২৫ জুন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনার হিসেবে সফিউর রহমানের দায়িত্ব পালনের তথ্য রয়েছে।
পাকিস্তান আমলে সিভিল সার্ভিসে যোগ দিয়ে স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সচিবের দায়িত্ব পালন করেন সফিউর। ২০১৪ সালের ১৮ অগাস্ট ৭৫ বছর বয়সে মারা যান তিনি।
সূত্র: বিডিনিউজ