বুধবার , ৬ জুলাই ২০১৬ | ২৫শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

গুলি-বোমায় মৃত্যু জঙ্গিদের, লাশ নিতে আসেনি কেউ

Paris
জুলাই ৬, ২০১৬ ১২:০২ পূর্বাহ্ণ
গুলি-বোমায় মৃত্যু জঙ্গিদের, লাশ নিতে আসেনি কেউ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

তিন দিন পেরিয়ে গেলেও গুলশানের রেস্তোরাঁয় জিম্মি উদ্ধার অভিযানে নিহত ছয় জঙ্গির লাশ কেউ নিতে আসেননি। আজ মঙ্গলবার ছয় জঙ্গির লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। তাঁদের লাশ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) হিমঘরে রাখা হয়েছে।

পুলিশ ও সেনাবাহিনীর দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সূত্র জানায়, নিহত ছয় জঙ্গির লাশ সিএমএইচে আছে। সেখানে আজ তাঁদের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। লাশ নিতে হলে তা পুলিশের মাধ্যমে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে যেসব প্রক্রিয়া আছে, তা নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশ।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ছয় জঙ্গির মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে গুলি ও বোমার আঘাতে। বাকি চারজন মারা গেছে গুলিতে।

মঙ্গলবার নিহত কয়েকজন জঙ্গির পরিবারের সদস্যরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের পরিবারের সন্তানদের ঘটনায় তাঁরা লজ্জিত, মর্মাহত। এমন ঘটনা তারা ঘটাতে পারে, এটা বিশ্বাস করা কঠিন। তাঁরা বলেন, বাসার সবাই ভেঙে পড়েছে। এ কারণে কেউ লাশ আনতে যাননি। এক জঙ্গির বাবা বলেন, ‘যেতে নিশ্চয়ই হবে। কেননা আমি তো বাবা। এটা তো আর অস্বীকার করতে পারব না।’

গত শুক্রবার রাত পৌনে নয়টার দিকে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে ঢুকে হত্যাযজ্ঞ চালায় জঙ্গিরা। ১৭ জন বিদেশি, ৩ জন বাংলাদেশিসহ ২০ জনের মৃত্যু হয়। জিম্মি উদ্ধার অভিযানে নিহত হন আরও ছয়জন। এর আগে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রথম দফা উদ্ধার অভিযান চালাতে গিয়ে নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা।

আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস নিহত পাঁচজনকে তাদের সদস্য বলে দাবি করলেও বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, তাঁরা সবাই বাংলাদেশি, দেশে বেড়ে ওঠা।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, এখন তাঁরা মনে করছেন, আইএসের কথিত বার্তা সংস্থা আমাক নিউজের বরাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাইট ইন্টেলিজেন্স যে পাঁচজনের ছবি দিয়েছে, তাঁরাই মূলত হামলায় অংশ নিয়েছিলেন। তাঁরা সবাই অভিযানে নিহত হন। এই পাঁচজনের মধ্যে বগুড়ার খায়রুলকে ছয়-সাত মাস ধরে পুলিশ খুঁজছিল। বাকিদের সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না তাঁদের।

নিহত ছয় জঙ্গির মধ্যে যে পাঁচজনের পরিচয় মিলেছে :

রোহান : অভিযানে নিহত রোহান ইবনে ইমতিয়াজের বাবা এস এম ইমতিয়াজ খান ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা। রোহানের মা শিক্ষিকা। দুই ভাইবোনের মধ্যে রোহান বড়। তিনি ঢাকার স্কলাসটিকা থেকে ‘এ’ লেভেল শেষ করে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন।
মোবাশ্বের : গত ২৯ ফেব্রুয়ারি কোচিংয়ে যাওয়ার কথা বলে মীর সামেহ মোবাশ্বের বনানীর ডিওএইচএসের বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। ওই বাসায় তাঁর বাবা মীর এ হায়াৎ কবিরের সঙ্গে প্রথম আলোর কথা হয়। তিনি বলেন, সামেহ স্কলাস্টিকা স্কুল থেকে ‘ও’ লেভেল পাস করেছে। ‘এ’ লেভেল পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। যে দিন সামেহ নিখোঁজ হয়, সে দিন তার গুলশানের আজাদ মসজিদের পাশের একটি কোচিং সেন্টারে যাওয়ার কথা ছিল।
বাবা মীর এ হায়াৎ কবির একটি টেলিকম প্রতিষ্ঠানে উচ্চপদে চাকরি করেন। মা একটি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক।
নিরবাস: মনোশ বিশ্ববিদ্যালয়ের মালয়েশিয়া ক্যাম্পাসের ছাত্র ছিলেন নিরবাস ইসলাম। ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে নিরবাস বড়। বাসা ঢাকার উত্তরায়। তাঁর নিকটাত্মীয়রা সরকারের বিভিন্ন উচ্চপদে চাকরি করেন।
খায়রুল: বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার চুতিনগর ইউনিয়নের ব্রিকুষ্টিয়া গ্রামের দিনমজুর আবু হোসেনের ছেলে খায়রুল। ব্রিকুষ্টিয়া দারুল হাদিস সালাদিয়া কওমি মাদ্রাসায় কিছুদিন পড়েছিলেন খায়রুল। এরপর ডিহিগ্রাম ডিইউ সেন্ট্রাল ফাজিল মাদ্রাসা থেকে তিনি দাখিল পাস করেন বলে প্রতিবেশীরা জানান।
শফিকুল: শফিকুলের বাবা বদিউজ্জামান (৫৫) ও বড় ভাই আসাদুল ইসলাম (৩২) দুজনই কৃষিশ্রমিক। বদিউজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, গ্রামের লোকজন বলাবলি করছিল যে টেলিভিশনে শফিকুলের ছবি দেখাচ্ছে, তিনি ঢাকায় জঙ্গি হামলা করতে গিয়ে মারা গেছেন।
শফিকুল ধুনটের গোঁসাইবাড়ি উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও গোসাইবাড়ি ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজে ভর্তি হন।

সূত্র: প্রথম আলো

সর্বশেষ - জাতীয়