সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে বিউটি আক্তার (২৫) নামে এক স্ত্রীকে হত্যার পর মাদকাসক্ত স্বামী রাসেল মিয়া (৩৫) নিজেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১১ টার দিকে উপজেলার বড়তলী-বানিয়াহারী ইউনিয়নের বানিয়াজুড়া গ্রামে এ লোমহর্ষক ঘটনাটি ঘটে। ঘাতক স্বামী রাসেল বানিয়াজুড়া গ্রামের মৃত জবেদ আলীর ছেলে। ঘটনার পরপরই বারহাট্টা-মোহনগঞ্জ সার্কেলের এএসপি শফিউল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বড়তলী-বানিয়াহারী ইউনিয়নের বানিয়াজুড়া গ্রামের মৃত জবেদ আলীর ছেলে রাসেল মিয়ার সাথে গত পাঁচ বছর আগে একই ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের দুলাল মিয়ার মেয়ে বিউটি আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের প্রায় বছর খানেক যেতে না যেতেই স্বামী রাসেল মিয়া মাদক সেবন করে সংসারের নানান বিষয় নিয়ে তার স্ত্রী বিউটি আক্তারের উপর শারীরীক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। এরই মধ্যে ওই দম্পতির গর্ভে আড়াই বছর বয়সের বায়েজিদ ও এক বছর বয়সের আয়াতুল নামে দুইটি শিশু সন্তানেরও জন্ম দেন।
গত প্রায় দুই মাস আগে পাষণ্ড স্বামী রাসেল মাদক সেবন করে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে তার স্ত্রী বিউটি আক্তারকে শারীরীকভাবে নির্যাতন করে তার দুই সন্তানসহ তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। গত সাতদিন আগে রাসেল তার শশুরবাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রী বিউটি আক্তারকে বুঝিয়ে শুনিয়ে আবার তাদেরকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসার পর কয়েকদিন তাদের মধ্যে ভালই চলছিল।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে রাসেল মাদক সেবন করে নিজ বসতঘরে গিয়ে সে ঘর থেকে একটি কুড়াল হাতে নিয়ে আকস্মিকভাবে তার স্ত্রী বিউটি আক্তারকে এলোপাথারী কুপিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করার পর স্বামী রাসেল তার দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন।
নিহত বিউটি আক্তারের বাবা দুলাল মিয়া কাঁদতে-কাঁদতে বলেন, আমার আদরের মেয়েটা বিয়ের পর থেকেই ওই পাষণ্ডর নির্যাতন সহ্য করে আসছিল কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে আমার মেয়েটাকে একেবারেই মেরে ফেলল। আমি খুনী রাসেলের ফাঁসি চাই।
মোহনগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মো. আব্দুল মোতালেব ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, রাসেল তার স্ত্রীকে খুন করে তাদের দুই সন্তানকে নিয়ে থানায় এসে সন্তানদের রেখে সে চলে যাচ্ছিল। এ সময় থানায় তার আচরণে আমাদের সন্দেহ হলে আমরা তাকে আটক করি।
তিনি আরো বলেন, থানায় পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল তার স্ত্রীকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে এবং আমরা নিহত বিউটির লাশের সুরতহাল শেষে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য আজ বিকেলেই নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। সূত্র: কলের কণ্ঠ