বুধবার , ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

শিক্ষার নামে বাণিজ্য করেই শতকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন

Paris
সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৪ ১:১৭ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য (এমপি) ও আওয়ামী লীগ সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী  আব্দুল ওয়াদুদ দারা টাকা ছাড়া কিছুই বুঝতেন না। ওই আসনে ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে ১০ বছর এমপি ছিলেন। এমপি হওয়ার পর শুধু শিক্ষা-বাণিজ্য করেই শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।

এ ছাড়া সরকারি পুকুর ইজারা, পুকুর খনন, বিভিন্ন প্রকল্পের কমিশন আদায়তো ছিলই। তিনি নির্বাচনি এলাকায় উন্নয়ন করেননি। কিন্তু পরিবারের সব সদস্যের উন্নতি হয়েছে। পুঠিয়া উপজেলার বিড়ালদহ গ্রামে মাটির বাড়িতে তার বসবাস ছিল। বর্তমানে সেই বাড়ির স্থলে পাশাপাশি তিন ভাইয়ের জন্য তিনটি দোতালা বিলাস ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। তার বাবা আওয়াল কাজী ছিলেন বিয়ে রেজিস্ট্রার। দারা ২০০৯ সালে প্রথম যখন এমপি হন তখন একটি ছোট গার্মেন্টের অংশীদার মালিক ছিলেন। তার মেয়েকে যুক্তরাজ্যে রেখে লেখাপড়া করাচ্ছেন। সেখানে তিনি টাকা পাচার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

দারা এমপি থাকাকালীন তার এবং পরিবারের বিরুদ্ধে যারা গিয়েছেন তাদের একের পর এক হত্যার শিকার হতে হয়েছে। আর যারা হত্যার শিকার হয়েছেন তারা সবাই তার বাড়ির আশপাশের লোকজন। নিহতরা হলেন আবু দাউদ ও তার ছেলে নুহু। তার চাচাতো ভাই রয়েল। চাল ব্যবসায়ী আবুল ও তার স্ত্রী।

পুঠিয়া-দুর্গাপুরে ১৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এমপি নির্বাচিত হয়ে প্রথমে এ আসনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নতুন ভবন নির্মাণ করে দেওয়ার নামে কমিশন নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তার ১০ বছরে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সর্বনিম্ন ১০ জন করে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রতিটি চাকরি প্রার্থীর কাছ থেকে ১০ লাখ থেকে ৩০ লাখ পর্যন্ত টাকা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

দারার চাচা বিড়ালদহ বালিকা বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আলীউজ্জামান মুন্টু ছিলেন শিক্ষা-বাণিজ্যের প্রধান। দুই উপজেলা থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ নেওয়ার জন্য দারা এমপির বাড়িতে টাকার চুক্তি করতে আসতেন। নিয়োগ প্রত্যাশীদের কাছে চুক্তির ব্যাপারে কথা বলতেন মুন্টু। তখন মুন্টুর উপাধি ছিল শিক্ষামন্ত্রীর নাম। দারা যতদিন এমপি ছিলেন ততদিন তার প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে শিক্ষকদের উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক ছিল।

মুন্টু বাদে আরও কয়েকজন শিক্ষা-বাণিজ্যের চুক্তি করতেন। এরা হলেন, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এবং সাবেক মেয়র রবিউল ইসলাম রবি, ধোপাপাড়া বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মতিউর রহমান মুন্টু। তার চাচাতো ভাই শরীফ কাজী নিয়ন্ত্রণ করতেন দুই উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ বিষয়ের বাণিজ্য। কোনো এলাকায় নতুন বিদ্যুৎসংযোগ দিলে তাদের আয় হবে-তা দেখভালের দায়িত্ব ছিল তার। দারার আরেক চাচাতো ভাই রিপন টানা ১০ বছর উপজেলা পর্যায়ের সব টেন্ডার নিয়ে নিজে কাজ করতেন। পুঠিয়া-দুর্গাপুর নির্বাচনি এলাকায় সরকারি কয়েকশ খাস পুকুর রয়েছে। প্রতিবছর পুকুরগুলো পানির দামে ইজারা দিয়ে কোটি আয় করেছেন। দুই উপজেলার কাবিখা কাবিটারসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের প্রকল্পের ৪০ শতাংশ টাকা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের মাধ্যমে তিনি নিতেন। সমেন ঘোষ নামে একজনকে মাস্টার রোলে ওই অফিসে নিয়োগ দেওয়া হয়। সমেন প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের কামিশনের টাকা উঠিয়ে দারাকে দিতেন। সমেনও বর্তমানে কোটিপতি।

দারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে নাটোর জেলায় বিদ্যুতের কুটল্যান্ড প্যানেলসহ কয়েকটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। তিনি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় কমিটির সভাপতি হয়ে ছিলেন। তার সময়ে ব্রাজিল থেকে কয়েক হাজার টন পচা গম আমদানি করা হয়েছিল।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আব্দুল ওয়াদুদ দারা শুধু শিক্ষা খাত থেকে কয়েকশ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।সূত্র: যুগান্তর

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর