শনিবার , ৩০ জুলাই ২০১৬ | ২৫শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

আত্রাইয়ের হাতিয়াপাড়া উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি নিজেই যেন রোগী

Paris
জুলাই ৩০, ২০১৬ ১২:০২ অপরাহ্ণ

নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ):

গরীবের হাসপাতাল নামে খ্যাত নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার ১নম্বর শাহাগোলা ইউনিয়নের হাতিয়াপাড়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বহুবিধ সমস্যার ভারে নিজেই এখন যেন রোগীতে পরিণত হয়েছে।
সরেজমিনে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ৯০ এর দশকে শাহাগোলা ইউনিয়নের হাতিয়াপাড়া নামক স্থানে স্থাপিত হয় উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। জনবল কাঠামো অনুযায়ী উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে একজন এমবিবিএস ডাক্তার, একজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার, একজন ফার্মাসিস্ট ও একজন এমএলএসএস পদ রয়েছে।

শুরুতেই এসব পদে ডাক্তার কর্মচারী থাকলেও গত একযুগ ধরে একটি পদ ছাড়া সকল পদ শূন্য রয়েছে এবং বহিঃবিভাগ স্বাস্থ্য সেবা বন্ধ রয়েছে। ফলে ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক জনগণ প্রত্যাশিত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দিন দিন ইউনিয়নবাসীর মাঝে শুধুই ক্ষোভ বাড়ছে।
উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি দেখলেই বোঝা যায় প্রাচীন স্থাপত্য শৈলী’র এক অর্পূব নির্দশন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্তৃপক্ষের রক্ষণাবেক্ষণের অভাব এবং কোয়ার্টারগুলো অব্যাবহৃত অবস্থায় ফেলে রাখার কারণেই বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ে নির্মিত ভবনটি আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে।

এখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থাও নেই। কেন্দ্রটি পরিদর্শনেও যান না উচ্চ পদের কেউ। অভিভাবকশূন্য উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটির এ বেহাল অবস্থার ফলে চিকিৎসা কার্যক্রম চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

প্রতিদিন এলাকার মানুষ জরুরী চিকিৎসাসেবা নিতে এসে বিমুখ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। দিনে দিনে এমন চিকিৎসাহীনতায় ক্ষুব্ধ-বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকার সাধারণ মানুষ। ডাক্তারদের কোয়ার্টার ও তৃতীয় শ্রেনীর কোয়ার্টার অনেক আগেই পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

Atrai News=Photo copy

বিগত প্রায় ২০ বছর আগে সীমানা প্রাচীর ভেঙে গেলেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। বাউন্ডারি ওয়াল না থাকায় পার্শ্ববর্তী জমির মালিকেরা দিনের পর দিন উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের জায়গা জবর দখল করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এভাবে চলতে থাকলে ক্রমেই কোন এক দিন বেহাত হয়ে যাবে সরকারি এ প্রতিষ্ঠানের জায়গা।
শাহাগোলা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ শফিকুল ইসলাম বাবু সিল্কসিটি নিউজকে জানান, বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানের অবস্থা খুবই নাজুক। উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে বর্হিবিভাগ স্বাস্থ্যসেবা চালু না থাকায় ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক জনগণ তাদের প্রত্যাশিত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাদের জনসেবা মূলক প্রতিষ্ঠানটির দিকে একটু সুনজর দিয়ে পুনরায় বর্হিবিভাগ স্বাস্থ্য সেবা চালু করবেন এমনটিই প্রত্যাশা করছি।
এ ব্যাপারে কর্মরত উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রেটির ফ্যামিলি প্লানিং পরিদর্শিকা মোছাঃ ডলি আক্তার জানান, সপ্তাহে ছয় দিন ডিউটি করলেই কি ুষধ পরিমান মতো বরদ্দো না থাকায় রোগীরা তাদের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এবং একা আমার পক্ষে এত রোগীর চাপ সামলানো সম্ভব নয়। বার বার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোন লাভ হয়নি।
এ বিষয়ে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটির ইনচার্জ ফার্মাসিষ্ট মোঃ রুহুল ইসলাম (রাজ) এর সাথে কথা বলে জানা যায়, এখানে প্রতিদিন ২৪০ থেকে ২৬০ জন রোগী আসে (ঔষধ থাকলে), আর ১০০ থেকে ১২০ জন রুগী আসে (ওষুধ না থাকলে)। উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রটি মেইন রস্তার পাশে হওয়ার কারনে এক্সিডেন্ট এর রুগী প্রায়ই আসতে থাকে। অথচ রুগীর তুলনায় সরবরাহকৃত ওষুধ পত্রাদির পরিমাণ খুবই নগন্য।
এ ব্যাপারে আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. শ্রী কালী কিশোর দাস জানান, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলো নেদারল্যান্ডের একটি প্রজেক্ট ছিল। শুধুমাত্র শাহাগোলা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র নয়, আহসানগঞ্জ, ভোঁপাড়া ও হাটকালুপাড়া উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির সেবা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে প্রজেক্টটি না থাকায় বর্হিবিভাগ বন্ধ রয়েছে। পুনরায় উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির বর্হিবিভাগে স্বাস্থ্য সেবা চালু করার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানায়েছি। আশাকরি কেন্দ্রগুলো পুনরায় আমরা চালু করতে পারবো।
এদিকে অতিদ্রুত ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠান গুলো মেরামত করে বহিঃবিভাগ স্বাস্থ্য সেবা চালু করে এলাকাবাসীর সেবা গ্রহনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করবেন কর্তৃপক্ষ, এমনটিই মনে করেন এলাকার সচেতন মহল ।

স/আর

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর