সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:  যশোরের বেনাপোল সীমান্ত স্বর্ণ ও হুন্ডি চোরাকারবাদিদের নিরাপদ স্বর্গ। বেনাপোলের পেট্রাপোল-হরিদাসপুর সীমান্তের ৮ কিলোমিটার এলাকা ‘ফ্রি ক্রাইম জোন’ এলাকা ঘোষণার পরও থেমে নেই চোরাচালন। এ সীমান্ত দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ এবং করিডোর থাকায় চোরাকারবারিরা স্বর্ণ ও হুন্ডি পাচারের জন্য এ পথ ব্যবহার করছে।

দীর্ঘদিন ধরেই বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বৈধ-অবৈধ দু’ভাবেই ভারতে স্বর্ণ পাচার হচ্ছে। বিজিবি ও কাস্টমসের গোয়েন্দা বিভাগ সোনার একাধিক চালান আটক করলেও অল্প সময়ের মধ্যে জামিনে বেরিয়ে যায় চোরাচালানকারীরা।

চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি থেকে ১৬ মে পর্যন্ত বেনাপোল সীমান্ত থেকে প্রায় ২৮ কেজি স্বর্ণ জব্দ করা হয়েছে। একই সময়ে হুন্ডির প্রায় পৌনে ৪ কোটি টাকাও জব্দ করা হয়। আটক করা হয়েছে ২০ জনকে।

স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে স্থানীয় কিছু লোকজন। যারা ‘বাহক’ হিসেবে পরিচিত। বিজিবি, বিএসএফ ও কাস্টমসের গোয়েন্দা সদস্যরা বাহকদের আটক করলেও ধরা পড়েনি মূল হোতা বা মহাজনরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বেনাপোল বাজারে গড়ে ওঠা একটি সিন্ডিকেট স্বর্ণ পাচারের সঙ্গে জড়িত। স্থানীয় ভাষায় বাহক বা ক্যারিয়ার বেনাপোল বাজার থেকে মাত্র ৩০০ টাকার বিনিময়ে প্রতিটি স্বর্ণের বার পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নেয়।  এখান থেকে নামমাত্র কিছু চালান আটক হয়। বাকি চালান অধরাই রয়ে যায়।

স্বর্ণ বহন বা পাচারের সঙ্গে জড়িত তিনটি গ্রুপকে এরই মধ্যে চিহ্নিত করা গেছে। কাস্টমস, বিজিবি ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রথম গ্রুপটি বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে যাত্রী সেজে স্বর্ণ বহন করে। শরীরের বিভিন্ন অংশে কৌশলে স্বর্ণ লুকিয়ে রাখে। পরে অবৈধপথে বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে স্বর্ণ পাচার করে ভারতে নিয়ে যায় সোনা বহনকারীরা। সিঅ্যান্ডএফ-এর কিছু অসাধু কর্মচারীও স্বর্ণ পাচারের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।

এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, পাচারের সঙ্গে জড়িত অধিকাংশদের বাড়ি ঢাকার উত্তরা, মুন্সীগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুর এলাকায়।

বেনাপোল কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দার উপ-পরিচালক সাইফুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়ে আমরা সোনাসহ পাচারকারীদের আটক করে থাকি। পাশাপাশি আমাদের গোয়েন্দারা সর্বদা সজাগ দৃষ্টি রাখেন, যাতে দেশের স্বর্ণ পাচার হয়ে বাইরে না যায়।’

এ ব্যাপারে বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি (তদন্ত) ফিরোজ হোসেন বলেন, ‘পুলিশ স্বর্ণ ও হুন্ডি পাচারের কোনও তথ্য পেলে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে তা আটক  করে। বেনাপোল পোর্ট থানার রেকর্ড আছে অতীতে স্বর্ণের বড় বড় চালান আটক করার।’

 

বাংলা ট্রিবিউন