শুক্রবার , ৩০ আগস্ট ২০২৪ | ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

৬৯ লাখ টন সারের চাহিদার বিপরীতে মজুদ ১৮ লাখ টন

Paris
আগস্ট ৩০, ২০২৪ ১০:৪৮ পূর্বাহ্ণ

 

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

দেশে প্রতিবছর সারের মোট চাহিদা প্রায় ৬৯ লাখ টন। যার ৮০ শতাংশই আমদানিনির্ভর। এর মধ্যে শুধু বোরো ও রবি মৌসুমে রাসায়নিক সারের চাহিদা রয়েছে ৭০ শতাংশের বেশি। বোরো ও রবি মৌসুমে দেশে সবচেয়ে বেশি খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়ে থাকে। এই মৌসুম দুটির উৎপাদননির্ভর করে সারের ওপর। যে কারণে এ সময় সার ও অন্যান্য উপকরণের চাহিদাও তুলনামূলক বেশি থাকে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সারের চাহিদা ছিল ৬৮ লাখ ৪২ হাজার ৫০০ টন। চলতি অর্থবছরে এই চাহিদা কিছুটা বেড়ে প্রায় ৬৯ লাখ টনে দাঁড়াতে পারে। বর্তমানে দেশে সব রকমের সারের চাহিদার বিপরীতে এ পর্যন্ত সরকারের কাছে মজুদ রয়েছে ১৭ দশমিক ৭৪ লাখ টন। এদিকে ২৭ লাখ টন ইউরিয়া সারের চাহিদার বিপরীতে মজুদ রয়েছে ৬ লাখ টন। সাড়ে ৭ লাখ টন টিএসপির বিপরীতে মজুদ রয়েছে ৩ দশমিক ২৫ লাখ টন। ১৫ লাখ টন ডিএসপির চাহিদার বিপরীতে ৪ দশমিক ১৪ লাখ টন এবং এমওপির সাড়ে ৯ লাখ টন চাহিদার জায়গায় মজুদ রয়েছে ৪ দশমিক ৩১ লাখ টন।

কৃষিসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে দেশের সরকারি গুদামগুলোতে সারের যে মজুদ রয়েছে তা দেশের আসন্ন প্রয়োজনে তাৎক্ষণিকভাবে মেটাতে পর্যাপ্ত নয়। ফলে আসন্ন রবি ও বোরো মৌসুমে সারের প্রয়োজনীয় জোগান নিয়ে একধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তারা বলছেন, যাবতীয় প্রক্রিয়াগত জটিলতা দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমাধান করে প্রয়োজনমতো আমদানির মাধ্যমে সারের পর্যাপ্ত জোগান নিশ্চিত করা দরকার।

জানা যায়, ইউরিয়াসহ প্রয়োজনীয় সার সরবরাহ নিয়ে একধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ইউরিয়ার উৎপাদন ও আমদানি নিয়েও একধরনের অনিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে। এ অবস্থায় সার আমদানি ও উৎপাদন উভয় দিকেই সংকট থাকায় উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, সাম্প্রতিক বন্যার পরিপ্রেক্ষিতে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে বোরো উৎপাদনে আরো বেশি গুরুত্ব দেওয়ার বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু ডলার সংকটের কারণে এলসি জটিলতায় সার আমদানি করাটা কঠিন হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে, দেশে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে ইউরিয়া সারের। গ্যাসের মাধ্যমে উৎপাদন করা যায় বলে অন্যান্য সারের তুলনায় ইউরিয়া সার উৎপাদনে সক্ষমতা বেশি রয়েছে। তবে বর্তমানে দেশের ৫টি ইউরিয়া সার কারখানা থাকলেও গ্যাসের অভাবে টানা কয়েক মাস ধরে ৩টি কারখানার উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।

এদিকে দেশে রাসায়নিক সার আমদানি হয় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) মাধ্যমে। এর মধ্যে ইউরিয়া সার উৎপাদন ও আমদানি পুরোটাই করে বিসিআইসি আর বাকি সারগুলো আমদানি করে বিএডিসি। এই প্রতিষ্ঠান দুটি চাইলে বছরের যে কোনো সময় সার আমদানি করতে পারে। তবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বছরের কেবল মে মাসে দরপত্রে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে সার আমদানি করার অনুমতি পায়।

কৃষি অর্থনীতিবিদরা ও ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিকসের পরিচালক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘মোট ধানের ৫৪ শতাংশ আসে বোরো মৌসুমে। তাই বন্যার প্রভাব মোকাবিলা করে মানুষের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে কমপক্ষে ৪০-৪৫ লাখ টন সারের মজুদ নিশ্চিত করতে হবে। ডলার সংকটে আমদানি পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়েছে। আর আমদানি করতেও দেড় থেকে দুই মাস সময় লেগে যায়। তাই এখন উৎপাদনে গুরুত্ব দেয়া উচিত। প্রয়োজনে রেশনিং করে হলেও গ্যাস সরবরাহ করে ৫টি ইউরিয়া সারকারখানা পুরোপুরি সচল করা উচিত।’

কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি আমন মৌসুমে সার নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। আসন্ন বোরো ও রবি মৌসুমের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এখনো আছে। এর মধ্যেই সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সার উইংয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. নূরুন্নাহার চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিবছরের মতো নিয়মিত প্রক্রিয়ায় সার ব্যবস্থাপনার কাজ চলমান রয়েছে। আমদানির কাজও চলমান রয়েছে।’

কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী গত ২১ আগস্ট সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর বা সংস্থা প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি বলেন, কৃষকের কাছে সার যেন সময়মতো পৌঁছে, এটা নিশ্চিত করতে হবে। এ সময় উপদেষ্টা সারের সাপ্লাই চেইন ঠিক রাখার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

 

 

সর্বশেষ - কৃষি