৩ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে কারখানার মালিক হওয়ার গল্প

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

মাত্র ৩ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে উদ্যোক্তা জীবনের পথচলা শুরু।এখন নিজস্ব কারখানার মাধ্যমে প্রতি মাসে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকার শুধু সরিষার তেল বিক্রি করেন তরুণ উদ্যোক্তা আল মাফিক।

তার এ উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছিল করোনার ঘরবন্দি সময়ে।আলেমদের জন্য চালু হওয়া ব্যবসায়ীক প্লাটফর্ম কওমি উদ্যোক্তার মাধ্যমে তিনি এখন সফল ব্যবসায়ী।

বৈশ্বিক মহামারি করোনা যখন অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশে আঘাত হানে তখন সবাই ঘরবন্দি হয়ে যায়। অফিস, আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রও তখন বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় জীবিকার তাগিদে অনেকেই অনলাইনে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন।

তরুণ আলেম উদ্যোক্তা রোকন রাইয়ান করোনার ওই ভয়াবহ সময়ে কয়েকজন তরুণকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ব্যবসায়ীক প্লাটফর্ম গড়ে তোলেন কওমি উদ্যোক্তা‘ নামে। গ্রুপটি কওমি মাদরাসা পড়ুয়া আলেমদেরকে ব্যবসায় আনার জন্য তৈরি করা হলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষও এতে যুক্ত হন। কেউ ক্রেতা হয়ে কেউবা বিক্রেতা হয়ে।

জয়পুরহাট সদরের আল মাফিক তেমনই একজন তরুণ উদ্যোক্তা। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড লাইব্রেরী ম্যানেজমেন্ট বিভাগের তৃতীয় বর্ষের একজন শিক্ষার্থী। তিনিও উদ্যোক্তা হয়েছেন কওমি উদ্যোক্তা গ্রুপের মাধ্যমে। বর্তমানে তিনি ৬০-৭০ লাখ টাকার শুধু সরিষার তেল বিক্রি করেন কওমি উদ্যোক্তা গ্রুপের মাধ্যমে।

তিনি বলেন, আমার উদ্যোক্তা জীবনে আজকে এই অবস্থানে আসার পেছনে আল্লাহর অশেষ রহমত ও বরকত ছিল। পাশাপাশি যাদের অবদান কোনোদিনই ভুলবার নয় তারা হলেন কওমি উদ্যোক্তা গ্রুপের দায়িত্বশীলরা। তারা অনেক কষ্ট করে, পরামর্শ দিয়ে, সহযোগিতা করে আমাকে আজকের এই জায়গায় নিয়ে এসেছেন।

তরুণ উদ্যোক্তা আল মাফিক বলেন, ২০২০ সালের মে মাসে মাত্র ৩ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে আমার উদ্যোক্তা জীবনের পথচলা শুরু হয়। ২০২০ সালে অক্টোবর মাসে কওমি উদ্যোক্তা গ্রুপে যুক্ত হই। প্রথমে মধু ও খেজুরের গুড় এবং রাজশাহীর আম বিক্রয় করার মাধ্যমে এই গ্রুপে পরিচিতি লাভ করি। পরবর্তীতে সরিষার তেল নিয়ে কাজ শুরু করার পরে আল্লাহর রহমতে ও কওমি উদ্যোক্তা গ্রুপের কল্যাণে ব্যাপক সাড়া পাই, যা আমার উদ্যোক্তা জীবনের পথ পরিবর্তন করে দেয়।

তিনি বলেন, ২০২২ সাল আমার উদ্যোক্তা জীবনের জন্য খুব গুরুত্ব পূর্ণ একটি বছর ছিল। এ বছর আমাদের গ্রীন অয়েল মিলের নিজস্ব কারখানা কওমি উদ্যোক্তা গ্রুপের এডমিন ও মডারেটর, ক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষী ভাইদের হাত ধরে উদ্বোধন হয়েছিল।

আল মাফিক বলেন, বর্তমানে আমাদের শুধুমাত্র সরিষার তেলের পাইকারি ক্রেতা ও রিসেলার সংখ্যা প্রায় ৩৫০ এর বেশি। যার ৯০ শতাংশ এই গ্রুপের কল্যাণে আমি পেয়েছি। বর্তমানে প্রতি মাসে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকার শুধু মাত্র সরিষার তেল বিক্রি করে থাকি কওমি উদ্যোক্তা গ্রুপের মাধ্যমে।

তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা ও কর্মচারী মোট ১৬ জন। যাদের মাসিক বেতন প্রায় ২ লাখ টাকা। সূত্র: যুগান্তর