রবিবার , ২৪ জুলাই ২০১৬ | ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

৩৫তম বিসিএস: ১০০ দিনেও ফল প্রকাশিত হয়নি

Paris
জুলাই ২৪, ২০১৬ ৯:৪৮ পূর্বাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

৩৫তম বিসিএসের (বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস) মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার ১০০ দিন পার হলেও এখনো ফল প্রকাশ করছে না বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে দেখছেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বলছেন, এর আগের পাঁচটি বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার পর ফল প্রকাশ করা হয়েছিল ৪০ থেকে সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে। এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যাও ছিল তুলনামূলক কম। সে ক্ষেত্রে ফল প্রকাশে এত দেরি কেন?

পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, লিখিত পরীক্ষার পর ৩৫তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার জন্য উত্তীর্ণ হয়েছিলেন ছয় হাজার ৮৮ জন শিক্ষার্থী। গত ১২ এপ্রিল ৩৫তম বিসিএসের  মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া শেষ হয়। সে হিসেবে গতকাল শনিবার পর্যন্ত পার হয়েছে ১০২ দিন।

তবে পিএসসির দাবি, ৩৫তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার ফল প্রকাশে তাদের পক্ষে গাফিলতি নেই। বিসিএস ছাড়াও একসঙ্গে অনেক পরীক্ষার মৌখিক পরীক্ষা চলমান থাকায় ফল প্রকাশে দেরি হচ্ছে।

পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক গতকাল টেলিফোনে বলেন, ‘ভাইভার ফল প্রকাশের কাজ চলছে। একটু বিলম্ব হওয়ার কারণ হলো এই মুহূর্তে আমরা নার্সদের ভাইভা নিচ্ছি, বেশ কিছু বিভাগীয় পরীক্ষার ভাইভাও চলছে। এ কারণে আমাদের কমিশনের কর্মকর্তারা ব্যস্ত থাকায় ফল প্রকাশে দেরি হচ্ছে। আশা করছি, খুব শিগগিরই ফল প্রকাশ করা হবে।’

মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, মৌখিক পরীক্ষার পর সাধারণত ৪০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশ করে পিএসসি। এবার বেশি সময় নেওয়ার বিষয়টি সন্দেহের চোখে দেখছেন শিক্ষার্থীরা। কারণ হিসেবে তাঁরা বলেছেন, ৩৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষায় ব্যাপক কারচুপি হয়েছে। যাঁরা ওই বিসিএসে চাকরি পেয়েছেন তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন পরে স্বীকার করেছেন, মৌখিক পরীক্ষায় তাঁদের বেশি নম্বর দিয়েছেন পিএসসির কিছু সদস্য। মৌখিক পরীক্ষায় বেশি নম্বর পাওয়ায় তাঁদের মধ্যে অনেকে পররাষ্ট্র, প্রশাসন, কর, পুলিশসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্যাডারে চাকরি পেয়েছেন। এবার মৌখিক পরীক্ষার ফল প্রকাশে এত দেরি হওয়ায় ভেতরে দুর্নীতির আশঙ্কা করছেন পরীক্ষার্থীরা।

প্রসঙ্গত, মৌখিক পরীক্ষায় নম্বর বাড়িয়ে দেওয়া নিয়ে সে সময় কালের কণ্ঠে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

গত চারটি বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশের তথ্য থেকে জানা গেছে, ৩০তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয় ২০১১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর, ৪১ দিন পর ফল প্রকাশ হয় ওই বছরের ২ নভেম্বরে। ৩১তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয় ২০১২ সালের ২২ এপ্রিল, ফল প্রকাশ হয় ৭৮ দিন পরে ৮ জুলাই। মৌখিক পরীক্ষার পর ৩২তম বিসিএসের ফল প্রকাশে সময় লেগেছিল ৪২ দিন। মৌখিক পরীক্ষা শেষে ৭২ দিন পর ৩৩তম বিসিএসে ফল প্রকাশ করা হয়েছিল। সর্বশেষ গত ৩৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়েছিল মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার ৮৯ দিন পর।

জানা গেছে, ৩৪তম বিসিএসে মৌখিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থী ছিল প্রায় ১০ হাজার। এত বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী থাকায় মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয় ২০১৫ সালের ১ জুন। ফল প্রকাশ হয় ওই বছরের ২৯ আগস্ট। এবার ৩৫তম বিসিএসে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছয় হাজার ৮৮ জন। তাই এবার ফল প্রকাশে দেরি নিয়ে নানা শঙ্কা প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বরে ৩৫তম বিসিএসের সার্কুলার জারি করে পিএসসি। দুই লাখ ৪৪ হাজার ১০৭ জন পরীক্ষার্থী প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশ নেন গত বছরের ৬ মার্চ। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয় ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল। তাতে উত্তীর্ণ হন ২০ হাজার ৩৯১ জন। এরপর লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয় গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর, তার ফল বের হয় গত ১৩ জানুয়ারি। ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষার মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয়েছিল গত ৩১ জানুয়ারি, শেষ হয় গত ১২ এপ্রিল।

৩৫তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া আফজাল ইসলাম ফারুক বলেন, ২০১৪ সালে সার্কুলার দিয়ে ২০১৬ সালের মাঝামাঝিও পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে না পারাটা দুঃখজনক। ফল প্রকাশে এত লম্বা সময় নেওয়ায় বহু শিক্ষার্থী ইতিমধ্যে সরকারি চাকরির নির্ধারিত বয়স ৩০ পার করে ফেলেছেন।

আফজাল ইসলাম আরো বলেন, গত বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। যাঁরা অনিয়মের মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন তাঁরা নিজেরাই পরে তা স্বীকার করেছেন। কিন্তু অনিয়মের বিরুদ্ধে পিএসসি কোনো অ্যাকশন তো নেয়নি, উল্টো দোষী ব্যক্তিদের পক্ষ নিয়েছে। এ কারণে এবার ফল প্রকাশে যত দেরি হবে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে সন্দেহ ততই বাড়বে।

সূত্র: কালের কণ্ঠ