৩০ হাজার বন্দির সাজা মওকুফ করলেন থাই রাজা

প্রয়াত থাই রাজা ভূমিবল আদুলাদেজের জন্মবার্ষিকীর প্রাক্কালে কমপক্ষে ৩০ হাজার বন্দির সাজা মওকুফ এবং আরও দুই লাখ বন্দির সাজা কমিয়ে দেশটির বর্তমান রাজার পক্ষ থেকে একটি ডিক্রি জারি করা হয়েছে।

রাজপরিবারের পক্ষ থেকে শুক্রবার এই ঘোষণা দেয়া হয় যে, শনিবার বাবা ভূমিবলের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে থাইল্যান্ডের বর্তমান রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন বন্দিদের সাজা মওকুফ ও কমানোর এই ডিক্রি জারি করেন।

ব্যাংকক পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী সাজা কমানোর এই তালিকায় সাংবাদিক সোরায়ুথ সুথাসসানাছিনদা, রেড শার্ট নামক বিক্ষোভের নেতা নাত্তাউত সাইকুয়ার এবং সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী বুনসং তেরিয়াপ্রিয়মও রয়েছেন।

দুই হাজারের দশকে সংবাদভিত্তিক এক অনুষ্ঠানের বিজ্ঞাপন থেকে প্রাপ্ত আয়ের বিষয়ে তথ্য জানাতে তার এক সহকারী ব্যর্থ হওয়ায় চলতি বছরের শুরুতে সাংবাদিক সোরায়ুথকে আট বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা ও তার বোন আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার সমর্থনে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য কারাদণ্ড ভোগ করছেন রেড শার্ট বিক্ষোভের নেতা নাত্তাউত সাইকুয়ার।

এ ছাড়া ইংলাক সিনাওয়াত্রা যখন প্রধানমন্ত্রী তখন ধানের ব্যবসায় অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার জন্য অভিযোগে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী বুনসং তেরিয়াপ্রিয়মকে ৪৮ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল।

দেশটির কারাগার কর্তৃপক্ষের দেয়া হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে মোট ৩ লাখ ৪৪ হাজার ১৬১ জন বন্দির মধ্যে ২ লাখ ৪৭ হাজার ৫৫৭ জন তাদের সাজা কমানোর জন্য আবেদন করার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।

থাই সিংহাসনে আরোহণের পর থেকে মহা ভাজিরালংকর্ন তার শাসনের পক্ষে এক অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন। হাজার হাজার মানুষ রাজতন্ত্রের সংস্কার ও ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন।

প্রধানন্ত্রী প্রায়ুত চান ওচার পদত্যাগও দাবি করছেন বিক্ষোভকরারী। কয়েক দফা বিক্ষোভের পর রাজতন্ত্রের প্রতি অসম্মান জানানোর অভিযোগে দেশটির পুলিশ হাজার হাজার বিক্ষোভকারী ও অ্যাক্টিভিস্টকে আটক করে।

থাইল্যান্ডে বিশ্বের অন্যতম কঠোর রাজকীয় মানহানিবিরোধী আইন রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ কোথাও রাজতন্ত্রের কোনও ধরনের সমালোচনা করা হলে সেটাকে বেআইনি বলে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যায়।

থাইল্যান্ডের দণ্ডবিধির ১১২ ধারার অধীনে, যে কেউ রাজা, রানি বা উত্তরাধিকারীর বদনাম, অবমাননা বা হুমকি দেয়ার জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছে তার প্রতিটির জন্য তিন থেকে ১৫ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।