৩রা নভেম্বরকে জাতীয় দিবস ঘোষণার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

জেল হত্যা দিবসকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। বৃহস্পতিবার (০৩ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি সরকারের কাছে এ দাবি জানান।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ‘৩রা নভেম্বরকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হোক। কারণ এটি আমাদের জন্য একটি বড় দুঃখ জাগানিয়া দিন। আমরা এ দুঃখকে, শোককে, শক্তিতে পরিণত করতে চাই। সেইসাথে আমি আরও একটি প্রস্তাব রাখতে চাই যে, আমাদের জাতীয় শিক্ষানীতিতে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের যে ব্যবস্থা আছে সেখানে জাতীয় চার নেতার জীবনী এবং তাদের রাজনৈতিক জীবন যেন সন্বিবদ্ধ করা হয়।

উপাচার্য আরও বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু বলেছেন সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ লাগবে। সোনার মানুষ মানে শিক্ষিত মানুষ। সোনার মানুষ মানে সেই শিক্ষা তাদের মধ্যে থাকবে যে শিক্ষার উদ্দেশ্যই হবে অন্তরের অন্ধকারকে দূরীভূত করা।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি, জাতীয় চারনেতার অন্যতম শহীদ কামারুজ্জামানের ছেলে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘অদ্ভূত মিল ছিলো এ চার নেতার মধ্যে। এই মিল বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রচুরভাবে কাজে লেগেছে। এই চার নেতা তাদের নেতার (বঙ্গবন্ধু) জন্য জীবন দিয়ে গেছেন, তবু আপোশ করেননি। আমাদের চিহ্নিত করা দরকার জাতির পিতার হত্যা ও চার নেতার হত্যার সাথে কারা জড়িত ছিলেন, তারা জীবিত হোক কিংবা মৃত তাদের খুঁজে বের করা দরকার। আমাদের দেখা দরকার এই হত্যার ফলে কারা হৃষ্ট-পুষ্ট হলেন।’

দেশের বর্তমান রাজনীতির প্রসঙ্গ টেনে মেয়র লিটন আরও বলেন, ‘গতকালকেই দেখলাম বিএনপি গর্ব করেই বলছে বিএনপির নেতৃত্বেও যদি একটু আধটু চির ধরে থাকে ভোট ব্যাংক নষ্ট হয়নি, যা ছিল তাই আছে। তারা যতটা বলছে হয়তো ততটা না। নতুন জেনারেশন আমাদের দিকে ঝুঁকেছে। তারপরও তাদেরকে ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নাই।’

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে আলোচনা করেন রাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ^াস। তিনি বলেন, ‘জেল হত্যাকাণ্ড অনেক আছে। কিন্তু সেখানে হয়তো অন্যভাবে মৃত্যু ঘটানো হয়েছে। কিন্তু একদম প্রকাশ্যে সশস্ত্র অবস্থায় গিয়ে হত্যাকাণ্ড পৃথিবীতে নজিরবিহীন।’

তিনি আরও বলেন, ‘চারজন নেতা ভিন্ন ভিন্ন চারটি রুমে ছিলেন। যখন তাদেরকে ডাকা হয়েছে তখন মনসুর আলী, নজরুল ইসলাম মনে করেছেন আওয়ামী লীগের পক্ষে বোধ হয় একটা অভ্যূত্থান হয়েছে। তাদেরকে আবার রাজনীতিতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যই তাদেরকে ডাকা হয়েছে। কিন্তু তাজউদ্দীন আহমদ বিষয়টি বুঝতে পেরেছিলেন। তিনি তাদেরকে বলেন- আপনারা নামাজ পড়ে নিন। আল্লাহকে ডাকেন। তারপর একটা রুমে ডেকে নিয়ে এসে তাদেরকে গুলি করে হত্যা করা হয়।’

বিশ^বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালামের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ^বিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক অবায়দুর রহমান প্রামানিক। এর আগে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজশাহীর কাদিরগঞ্জস্থ শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

জি/আর