২ লাল কার্ড, ৫ গোলের ঘটনাবহুল ম্যাচ জিতে আশায় জুভেন্টাস

লিগ শিরোপা হারানোর পর উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা পাওয়া নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে জুভেন্টাসের। তবে গত রাতে ইন্টার মিলানকে ৩-২ গোলে হারিয়ে শেষ চারে জায়গা করে নেওয়ার আশা বাঁচিয়ে রাখলো আন্দ্রে পিরলোর দল।

শনিবার (১৫ মে) গতবারের চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে এই আসরের শিরোপাজয়ীদের লড়াই হলো তুমুল। দুই দলের একজন করে দেখলেন লাল কার্ড। তিনটি গোলে থাকল ভিএআরের ভূমিকা। দুই দল মিলিয়ে পেল তিনটি পেনাল্টি। ঘটনাবহুল ম্যাচে অনেকটা সময় ১০ জনের দল নিয়েও ইন্টার মিলানকে হারিয়ে দিল জুভেন্টাস।

আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠা ম্যাচে ২৪তম মিনিটে জুভেন্টাসকে এগিয়ে নেন রোনালদো। পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডের স্পট কিক ফিরিয়ে দিলেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি সামির হানদানোভিচ। ফিরতি বল জালে ঠেলে দেন রোনালদো। চলতি আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতার এটি ২৯তম গোল। কর্নারে কিয়েল্লিনিকে ইন্টারের মাত্তেও দারমিয়ান ফাউল করায় ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টিটি দেন রেফারি।

৩৫তম মিনিটে সফল স্পট কিকে ম্যাচে সমতা আনেন রোমেলো লুকাকু। লাউতারো মার্তিনেসকে মাটাইস ডি লিখট ফাউল করায় ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টি দেন রেফারি। এই গোলে সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকার দুই নম্বরে উঠে এলেন লুকাকু। বেলজিয়ান স্ট্রাইকারের গোল হলো ২৩টি।

প্রথমার্ধের শেষ দিকে একের পর এক আক্রমণে ইন্টারকে চেপে ধরে জুভেন্টাস। যোগ করা সময়ে এগিয়েও যায় তারা। কুয়াদরাদোর বুলেট গতির শট ক্রিস্টিয়ান এরিকসনের পায়ে লেগে একটু দিক পাল্টে জড়ায় জালে। ঝাঁপিয়েও বলের নাগাল পাননি গোলরক্ষক।

৫১তম মিনিটে সমতা প্রায় ফিরিয়ে ফেলেছিলেন মার্তিনেস। একটুর জন্য লক্ষ্যে থাকেনি এই আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারের শট। চার মিনিট পর ১০ জনে পরিণত হয় জুভেন্টাস। লুকাকুকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন রদ্রিগো বেন্তানকুর। একজন কমে যাওয়ার পর রক্ষণে বাড়তি মনোযোগ দেয় জুভেন্টাস। ৭০তম মিনিটে রোনালদোকেও তুলে নেন কোচ।

৮২তম মিনিটে মাতিয়ান ভেসিনোর দারুণ হেড কোনোমতে ঠেকিয়ে জুভেন্টাসের ত্রাতা গোলরক্ষক ভয়চেখ স্ট্যাসনি। ৮৪তম মিনিটে আর পারেননি তিনি। নিকোলো বারেল্লার ক্রস কিয়েল্লিনির গায়ে লেগে দিক পাল্টে জড়ায় জালে। কিছুই করার ছিল না স্ট্যাসনির।

শুরুতে মনে হচ্ছিল জুভেন্টাস অধিনায়ককে ফাউল করেছেন লুকাকু। গোল দেননি রেফারি। রিপ্লেতে দেখা যায়, লুকাকুর জার্সি ধরে টান দিয়ে তাকে সহ পড়ে যান কিয়েল্লিনি। ভিএআরের সাহয্যে তাকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি, আত্মঘাতী গোলে ম্যাচে ফেরে সমতা।

শেষ ২ ম্যাচ জিতলেও যেখানে শেষ চারে থাকার নিশ্চয়তা নেই জুভেন্টাসের সেখানে এই ম্যাচ ড্র করলে পথটা হয়ে যেত বহুগুণ কঠিন। সেটা হলো না কুয়াদরাদোর জন্য। ৮৮তম মিনিটে সফল স্পট কিকে দলকে তৃতীয়বারের মতো এগিয়ে নেন কলম্বিয়ার এই ফরোয়ার্ড। ইভান পেরিসিচ তাকেই ফাউল করায় ম্যাচে নিজেদের দ্বিতীয় পেনাল্টিটি পায় জুভেন্টাস।

যোগ করা সময়ে প্রতি-আক্রমণ ঠেকাতে একটি বিপজ্জনক ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন ইন্টারের মার্সেলো ব্রজোভিচ। বাকি সময়টায় কোনোমতে রক্ষণ আগলে রেখে দারুণ এক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে জুভেন্টাস।

এই জয়ে ৩৭ ম্যাচে ৭৫ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার চার নম্বরে উঠে এসেছে জুভেন্টাস। সমান ম্যাচে ৮৮ পয়েন্ট নিয়ে এরই মধ্যে শিরোপা নিশ্চিত করেছে ইন্টার মিলান। ৩৭ ম্যাচে ৭৮ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে আছে আটলান্টা। ইন্টারের সঙ্গে ইতালির দ্বিতীয় দল হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলা নিশ্চিত করেছে তারা।

জুভেন্টাসের সমান ৭৫ পয়েন্ট হলেও মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে থাকায় এসি মিলান আছে তিনে। তারা খেলেছে ৩৬ ম্যাচ। সমান ম্যাচে ৭৩ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে নেমে গেছে নাপোলি। এই তিন দলের যে কোনো দুটি খেলবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের পরের আসরে।

 

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ