২০ ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষক আটক

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:  নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মিজিমিজি এলাকায় এক স্কুলশিক্ষকের বিরুদ্ধে ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুর ১২টার দিকে মিজমিজি অক্সফোর্ড হাই স্কুলে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক আরিফুল ইসলামকে আটক করেছে র‌্যাব। এছাড়া তাকে মদদ দেওয়ার অভিযোগে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামকেও আটক করা হয়।

র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত আরিফুল ইসলাম নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করে বলেছেন, ‘আমি পাঁচ বছর ধরে একাধিক শিক্ষার্থীকে যৌন হেনস্তা করেছি। অনেক শিক্ষার্থীকে ব্লাকমেইল করে অবৈধভাবে ছবি তুলেছি, গোপনে ভিডিও করেছি। আমি বড় অপরাধ করেছি। আমি শিক্ষক হিসেবে লজ্জিত। আমার শাস্তি হওয়া উচিত।’
এর আগে স্থানীয়রা অভিযুক্ত শিক্ষককে গণপিটুনি দেয়। মিজমিজি এলাকার বাসিন্দা রাকিব হাসান জানান, দুই দিন আগে অক্সফোর্ড হাই স্কুলের নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে বিবাহবহির্ভূত অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেয় আরিফুল ইসলাম। বিষয়টি ওই শিক্ষার্থী তার বাবা-মা ও এলাকার অন্যদের জানায়। পরে স্থানীয় লোকজন ওই শিক্ষকের মোবাইল ফোন জব্দ করে একাধিক শিক্ষার্থীর আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও দেখতে পান। পরে ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক বিষয়টি র‌্যাবকে জানান। পরে র‌্যাব সদস্যরা আরিফুল ইসলাম ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে আটক করেন।

র‌্যাব-১১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষক আরিফুল ইসলাম ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত অক্সফোর্ড স্কুলের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী এবং স্কুলের বাইরের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন কৌশলে একাধিকবার ধর্ষণ করেছেন বলে আমরা জেনেছি। পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী তার যৌন হেনস্তার শিকার হয়েছে। আটক শিক্ষক আরিফুল ইসলামের মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপসহ বিভিন্ন ডিভাইস জব্দ করে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ জন ছাত্রীকে ধর্ষণ ও আপত্তিকর ছবি পাওয়া গেছে। তাকে মদদ দেওয়ার অভিযোগে প্রধান শিক্ষককেও আটক করা হয়েছে।’ তিনি জানান, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি ও সাইবার অপরাধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া কোনও ভুক্তভোগী চাইলে তার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, র‌্যাব যে অভিযোগে মামলা করবে তা রেকর্ড করা হবে। এছাড়া কোনও ভুক্তভোগী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে মামলা নেওয়া হবে।
এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তি দাবিতে সকাল থেকে অক্সফোর্ড হাই স্কুল ঘিরে রেখে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা। তারা আরিফুল ইসলামের শাস্তি দাবি করেছেন। এক অভিভাবক বলেন, ‘স্কুলের শিক্ষকের কাছে শিক্ষার্থীরা যদি নিরাপদ না থাকে তার চেয়ে দুচিন্তার আর কিছু নেই। আমি ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’