২০১৮ সালে রাজশাহীতে ২৫ হত্যাসহ নির্যাতনের শিকার ৩৯৯ নারী-শিশু

নিজস্ব প্রতিবেদক: একদিনের ব্যাবধানে এসে উপস্থিত হয়েছে নতুন বছর। কিন্তু যায়নি গত বছরের হিসেব-নিকেশ। ভুলা যায়নি কিছু বিষয়। গত বছরে অর্থাৎ ২০১৮ সালে রাজশাহীতে বিভিন্নভাবে হত্যাসহ বহু নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। গত বছর ২৫ হত্যা, হত্যার চেষ্টা ৩, আত্মহত্যা ৪৫, ধর্ষণ-যৌন নির্যাতন, নির্যাতন ও ভিকটিম অফ পর্নোগ্রাফি মিলিয়ে ১৬১ এবং নিখোঁজ ও অপহরণের শিকার হয়েছে ৩১ নারী ও শিশু।

সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে উন্নয়ন সংস্থা লেডিস অর্গানাইজেশন ফর সোসাল ওয়েলফেয়ার’র (লফস) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সংস্থাটি রাজশাহী জেলায় দীর্ঘদিন যাবৎ নারী ও শিশুর উন্নয়নে কাজ করছে।

সংগঠনটি বলছে, মানবাধিকার সংগঠন হিসেবে লফস সংস্থার ডকুমেন্টেশন সেল থেকে রাজশাহীর প্রচারিত দৈনিক পত্রিকার সংবাদের ভিক্তিতে নিয়মিত নারী ও শিশু নির্যাতনের এসব পরিস্থিতি প্রকাশ করা হয়েছে।

লফস মনে করে, এ অঞ্চলে নারী ও শিশু নির্যাতন পরিস্থিতি বিভিন্ন মাত্রায় অবনতি ঘটছে। যৌতুক ও পরকীয়ার কারণে অধিকাংশ নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে বলেও মনে করে সংস্থাটি। অনেক ক্ষেত্রে বিদেশি কিছু টিভি সিরিয়াল পরকিয়াকে উৎসাহিত করছে। এছাড়া পারিবারিক কলহ ও প্রেম ঘটিত কারণে হত্যা-আত্মহত্যা ও অমানবিক নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটছে বলেও মনে করে সংস্থাটি।

সংগঠনটির দেয়া তথ্য মতে ২০১৮ সালে নারী-শিশু হত্যাসহ বিভিন্ন নির্যাতনের চিত্র:

হত্যা: শিশু – ০৭ জন নারী – ১৭ জন মোট – ২৪ জন
হত্যার চেষ্টা : শিশু – ০১ জন নারী – ০২ জন মোট – ০৩ জন
আত্বহত্যা: শিশু – ২০ জন নারী – ২৫ জন মোট – ৪৫ জন
আত্বহত্যার চেষ্টা: শিশু – ২৩ জন নারী – ০৩ জন মোট – ২৬ জন
ধর্ষণ: শিশু – ২৫ জন নারী – ০৮ জন মোট – ৩৩ জন
গণধর্ষণ: শিশু – ০২ জন নারী – ০৩ জন মোট – ০৫ জন
ধর্ষণ চেষ্টা: শিশু – ১০ জন নারী – ০৩ জন মোট – ১৩ জন
ধষর্ণের পর হত্যা: শিশু – ০১ জন নারী – ০০ জন মোট – ০১ জন
যৌন নির্যাতন: শিশু – ০৯ জন নারী – ১৩ জন মোট – ২২ জন
নির্যাতন: শিশু – ২৮ জন নারী – ৫৭ জন মোট – ৮৫ জন
ভিকটিম অফ পর্নোগ্রাফি: শিশু – ০১ জন নারী – ০৩ জন মোট – ০৪ জন
অপহরণ: শিশু – ১৪ জন নারী – ০২ জন মোট – ১৬ জন
নিখোঁজ: শিশু – ১৩ জন নারী – ০২ জন মোট – ১৫ জন
অস্বাভাবিক মৃত্যু: শিশু – ৪০ জন নারী – ২৮ জন মোট – ৬৮ জন
আহত: শিশু – ২৫ জন নারী – ১৪ জন মোট – ৩৯ জন

উপরের তথ্যানুসারে এক বছরে হত্যাসহ নির্যাতনের শিকার হয়েছে ২১৯ জন শিশু এবং ১৮০ জন নারী। একবছরে হত্যাসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৩৯৯ জন শিশু ও নারী।

লফস’র নির্বাহী পরিচালক শাহানাজ পারভীন বলেন, সংবাদপত্রে প্রকাশিত ঘটনার বাইরেও অনেক ঘটনা ঘটে যা প্রকাশিত হয় না বা কোনো তথ্য জানা যায় না। রাজশাহীতে নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রকাশিত এই তথ্য হতাশাজনক। এ অঞ্চলে নারী-শিশু নির্যাতনসহ সার্বিক ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা না গেলে ক্রমশই অপরাধীরা উৎসাহিত হবে এবং অপরাধের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে।

স/শা