২য় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে ভয়াবহ মন্দায় অর্থনীতি: বিশ্বব্যাংক

মহামারি কোভিড-১৯ বিশ্ব অর্থনীতিকে ভয়াবহ মন্দার মুখে ফেলে দিয়েছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যা আর কখনোই ঘটেনি। মারাত্মক এ সংকটের কারণে চলতি বছরে বিশ্ব অর্থনীতি ৫ দশমিক ২ শতাংশ সংকুচিত হবে বলে ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস ২০২০’ প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

গতকাল সোমবার রাতে বিশ্বব্যাংকের জুনের ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস ২০২০’ শিরোনামের এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হচ্ছে, বিশ্বের বৃহৎ সব অর্থনীতির দেশগুলোর মাথাপিছু আয় রেকর্ড পরিমাণে কমবে; যা হবে ১৮৭০ সালের পর সর্বনিম্ন।

বিশ্বব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‌‘দেশীয় চাহিদা এবং সরবরাহ, বাণিজ্য এবং আর্থিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ায় ২০২০ সালে বিশ্বে উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ৭ শতাংশ হ্রাস পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’

‘এছাড়া উদীয়মান বাজার এবং উন্নয়নশীল অর্থনীতির (ইএমডিই) দেশগুলোর অর্থনীতি এই বছর ২ দশমিক ৫ শতাংশ সংকুচিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। একসঙ্গে এই দলভূক্ত দেশগুলোর হিসেবে কমপক্ষে বিগত ষাট বছরে প্রথম কোনো সংকোচনের ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে’ বলে প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘চলতি বছর মাথাপিছু আয় ৩ দশমিক ৬ শতাংশ হ্রাস পাবে, যা এই বছর লক্ষ লক্ষ মানুষকে চরম দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দেবে।’ বিশ্ব ব্যাংকের সংজ্ঞা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি দিনে ১ দশমিক ৯০ ডলার বা ১৬১ টাকার চেয়ে কম অর্থে জীবন যাপন করেন তবে তা চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে।

গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস ২০২০ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘এই মহামারি সবচেয়ে বেশি আঘাত হেনেছে সেসব দেশের অর্থনীতিতে যেখানে ভাইরাসটির সংক্রমণ সবচেয়ে মারাত্মক এবং যেসব দেশ বিশ্ব বাণিজ্য, পর্যটন, পণ্য রফতানি এবং বাহ্যিক অর্থায়নের ওপর অতিরিক্ত মাত্রায় নির্ভরশীল।’

চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে আসতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এ ছাড়া আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি আরও কমে ১ শতাংশে আসতে পারে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংক মনে করে, দক্ষিণ এশিয়ায় করোনা পরিস্থিতি প্রকট হলে দারিদ্র্য বাড়বে।