১৫ বছর পর খুঁজে পাওয়া ‘আবেদা পাগলী’ কারো মা না, তিনি নিঃসন্তান!

সাতক্ষীরা উপকূলের দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা থেকে খুঁজে পাওয়া মানসিক ভারসাম্যহীন আবেদা বেগম (৫২) কারো মা না। তিনি নিঃসন্তান। ফেনীর বাহারুল্যা পাটোয়ারীর ছেলে মো. ইয়াছিন আরাফাত অভি এমনটি দাবি করছেন। গতকাল শুক্রবার রাতে কালের কণ্ঠে ‘বিয়ের দাওয়াতে এসে ১৫ বছর পর মায়ের সন্ধান’ খবর দেখে এই প্রতিনিধিকে ফোন করে এমনটাই দাবি করেন তিনি।

এদিকে মানসিক ভারসাম্যহীন আবেদাকে দীর্ঘ ১৫ বছর পর মা সনাক্ত করে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া সন্তানরা। আজ শনিবার যোগাযোগ করা হলে তারা জানায়, খুঁজে পাওয়া নারীই তাদের হারিয়ে যাওয়া মা। তারা খুঁজে পাওয়া মাকে সেবা যত্ন দিয়ে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করছেন।

ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার দক্ষিণ মটুয়া এলাকার বাহারুল্যা পাটোয়ারীর ছেলে মো. ইয়াছিন আরাফাত অভি মোবাইল ফোনে জানান, খুঁজে পাওয়া মানসিক ভারসাম্যহীন নারী আবেদা বেগম সম্পর্কে তার ফুফু হন। আবেদার পিতার নাম মৃত. রাজা মিয়া পাটোয়ারী। তাদের আদী নিবাস ফুলগাজী উপজেলার উত্তর তারকুজা (পাটোয়ারী বাড়ি)। তিনি ‘আবেদা পাগলী’ বলেই বাড়ির সদস্যদের কাছেও পরিচিত।

অভি জানান, গত ২০১৮ সালের ১৪ অক্টোবর ভোরে জন্ম থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন আবেদা বেগম বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। গত দুই বছর ধরে বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে ছবিসহ পরদিন একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। তিনি তার ফুফুকে ফেরত দেওয়ার জন্য আইন শৃংখলা বাহিনীর সহায়তা কামনা করেন।

এদিকে খুঁজে পাওয়া আবেদার নাম ও শাররীক গঠন হুবাহু মিলে গেলেও বাগেরহাট জেলার মোংলা থানার জিরোধারাবাজি এলাকার ঘরখোল গ্রামের আলামিন তা মানতে নারাজ। শনিবার বিকালে তিনি মোবাইল ফোনে জানান, খুঁজে পাওয়া আবেদাই তার হারিয়ে যাওয়া মা। যিনি তার খুঁজে পাওয়া মাকে হারিয়ে যাওয়া ফুফু হিসাবে দাবি করছেন তার অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে। তিনিও বিষয়টি সুরহা করার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার দুপুরে বাগেরহাট জেলার জিরোধারাবাজি এলাকার ঘরখোল গ্রামের আলামিন ও তার ভাই আলাউদ্দিন শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা এলাকায় বিয়ের দাওয়াতে আসেন। বিয়ের বাড়ির আনন্দমুখর পরিবেশ ছেড়ে দুই ভাই স্থানীয় চাঁদনীমুখো বাজারে যায়। সেখনে জানতে পারে গত দুই বছর ধরে বাজারে এক পাগলী থাকে। তারা কাছে যেয়েই ১৫ বছর আগে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় হারিয়ে যাওয়া মাকে সনাক্ত করে।

এবিষয়ে গাবুরা ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম জানান, বাজারে তার ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়। পাগলী বছর দুয়েক হলো এখানে থাকে। গত শুক্রবার সন্তানরা ওই পাগলীকে হরিয়ে যাওয়া মা হিসাবে সনাক্ত করলে তাদের সাথে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আজ আবার নতুন খবর পাগলী নাকি সন্তানহীন। সে ফেনী জেলার বাসিন্দা। ভারসাম্যহীন আবেদাকে দাবি করা দুই পরিবারের লোকজন মিমাংসার স্বার্থে ডিএনএ পরীক্ষা করলেই ঝামেলা মিটে যাবে। আমরা চাই শেষ বয়য়ে বৃদ্ধার যত্ন হোক।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ