হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলার দায়ে রাজশাহীতে বাদিকে ৭ দিনের কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক:

হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা করার দায়ে বাদিকে ৭ দিনের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে মামলার দুই আসামিকে এক হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আজ বুধবার (৩ আগস্ট) রাজশাহীর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক মারুফ আল্লাম এই আদেশ দেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের সহকারী মো. নজরুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম মো. মতিউর রহমান শাহ। তিনি জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার শিয়ালা প্রেমতলী গ্রামের বাসিন্দা।

মো. নজরুল ইসলাম জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে অনধিকার প্রবেশ, ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলা, শ্বাসরোধ করে হত্যাচেষ্টার মতো গুরুতর কিছু অভিযোগ এনে সাজাপ্রাপ্ত ওই ব্যক্তি ফৌজদারি মামলা করেছিলেন। কিন্তু বিচার শেষে আদালতের কাছে স্পষ্ট হয় যে, বাদির অভিযোগ মিথ্যা ও হয়রানিমূলক। ফলে আদালত আসামিদের খালাস দিয়ে বাদিকেই ৭ দিনের কারাদণ্ড দেন। একইসঙ্গে দুজন আসামিদের প্রত্যেককে ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে বলা হয়েছে ।

আদালত সূত্র জানায়, আসামিদের বিরুদ্ধে শ্বাসরোধ করে হত্যাচেষ্টার মতো গুরুতর অভিযোগ আনা হলেও বাদি কিংবা তার কোনো একজন সাক্ষী আদালতকে শ্বাসরোধ সম্পর্কে একটি শব্দও বলেননি। তদন্তকারীর প্রতিবেদনেও থেকেও দেখা যায়, শ্বাসরোধ করে হত্যার মতো কোনো ঘটনাই ঘটেনি।

আদালত সূত্র আরও জানায়, বাদির জমিতে প্রবেশ করে আসামিরা তার ঘরবাড়ি ভেঙেছেন মর্মে বাদি যে অভিযোগ করেছেন, তার পক্ষেও বাদিপক্ষের সাক্ষীরা সাক্ষ্য দেননি। বাদীপক্ষের উপস্থাপিত দুজন সাক্ষীর একজন বলেছেন, ঘটনার দিন তিনি ঘটনাস্থলেই ছিলেন না। অপরজন বলেছেন, ওই জমিতে মূলত বাদি নয়, বরং আসামির স্থাপনা ছিল।

সাক্ষ্যপ্রমাণ, তদন্তকারীর প্রতিবেদন এবং উভয়পক্ষের বক্তব্য অনুসন্ধানে আদালতের কাছে স্পষ্ট হয় যে, বাদি তার জমি আসামির কাছে বিক্রি করে ভিন্ন জায়গায় গিয়ে বসবাস করছিলেন। পরে আসামি সেই জমিটি তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রি করার উদ্যোগ নিলে বাদি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। বাদি চেয়েছিলেন, জমিটি তৃতীয়পক্ষের কাছে বিক্রি না করে বাদির কাছেই যেন বিক্রি করেন আসামি। কিন্তু ভালো দাম না পাওয়ায় আসামি বাদির কাছে ওই জমি বিক্রি না করে তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রি করে দেন। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে আসামিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেন বাদি।

আদালতের সহকারী জানান, মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়েরের জন্য বাদিকে কেন কারাদণ্ড প্রদান করা হবে না তা জানতে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে কারণ দর্শাতে বলা হয়। পরে বাদি কারণ দর্শানোর জন্য দুই দিনের সময় চান। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কারণ দর্শানোর কোনো ব্যাখ্যা না দাখিল করায় আদালত বৃহস্পতিবার এই রায় দেন।

এএইচ/এস