হ্যান্ডকাফসহ হেরোইন ব্যবসায়ী চম্পট, রাজশাহী-চাঁপাই সীমান্তে অভিযান

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পুলিশের হ্যান্ডকাফসহ পালিয়েছেন এক মাদক ব্যবসায়ী। আরিফুল হক (২৮) নামের পলাতক ওই মাদক ব্যবসায়ীকে গত ৪৮ ঘণ্টায় ধরতে পারেনি পুলিশ। রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের কামারপাড়ার একটি লিচু বাগান থেকে পুলিশের হেফাজত থেকে পালিয়ে যান আরিফ।

আরিফকে ধরতে রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানা পুলিশের যৌথ দল শুক্রবার সকাল থেকে সীমান্তের গ্রামগুলিতে ব্যাপক তল্লাশি চালাচ্ছে। তবে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আরিফকে ধরতে পারেনি তারা।

আরিফের বাবার নাম নাজিবুর রহমান। তার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার আলাতুলি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী জেলে পাড়া গ্রামে।

পুলিশের দাবি, আরিফ একজন বড় মাপের হেরোইন ব্যবসায়ী। তাকে আটক করে বড় আকারের হেরোইনের একটি চালান উদ্ধারে পুলিশ তাকে সীমান্তে নিয়ে যায়। বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সময় হ্যান্ডকাফ নিয়ে সেখান থেকে তিনি পালিয়ে যান।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার বিকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানা পুলিশের একটি দল আরিফকে সীমান্তের জেলেপাড়ার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসে থানায় আসেন। এরপর ওইদিন গভীর রাতে পুলিশের দলটি আরিফকে নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের চর আলাতুলির পার্শ্ববর্তী রাজশাহীর গোদাগাড়ীর সীমান্তের দুর্গম চরাঞ্চলের কামারপাড়ায় নিয়ে মাদক উদ্ধারের কথা বলে। রাত ১টার দিকে কামপাড়ার হান্নান মেম্বারের লিচু বাগানে আরিফকে নিয়ে বসেছিলেন পুলিশের দল। এরই মধ্যে হ্যান্ডকাফ পরা আরিফ পুলিশের হেফাজত থেকে পালিয়ে যান। ভোর পর্যন্ত এলাকায় খোঁজাখুঁজি করেও আরিফকে আর ধরা যায়নি। সদর থানা পুলিশের দলটি বৃহস্পতিবার সারাদিন এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে তল্লাশি করেন আরিফকে ধরতে। তবে তারা বিফল হন।

এদিকে আরিফকে ধরতে না পেরে পুলিশ বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আলাতুলি ইউনিয়নের নং ওয়ার্ড সদস্য সেন্টু, ৮নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ও আলাতুলি ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি মারফত মেম্বার এবং ভুট্টো নামের একজনসহ তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তাদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শুক্রবার দুপুরের পর চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও গোদাগাড়ী থানা পুলিশের যৌথ পুলিশ দল দুই জেলার সীমান্তের জেলেপাড়ায় নিয়ে যায় আওয়ামী লীগ নেতা মারফত মেম্বারকে। আরিফকে ধরতে এই তিনজনকে পুলিশ প্রাথমিকভাবে আটক করেছেন বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে শুক্রবার সন্ধ্যায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চরাঞ্চলের চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও পার্শ্ববর্তী  রাজশাহীর গোদাগাড়ীর সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত ছিল। এ সময় আটক মারফত মেম্বারকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ সীমান্তের চরাঞ্চলের এসব গ্রামে অভিযান করছে বলে জানিয়েছেন এলাকার মানুষ।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন শুক্রবার সন্ধ্যায় জানান, আরিফকে নিয়ে মাদক উদ্ধারের অভিযানের সময় চরাঞ্চলের গ্রামগুলিতে প্রচুর বৃষ্টি ও বজ্রপাত হচ্ছিল। আরিফকে আটক করে মাদকের একটি বড় চালানের সন্ধান জানতে পারে পুলিশ। ওই রাতে তাকে নিয়ে মাদক উদ্ধারে গেলে বজ্রপাত ও প্রচণ্ড বৃষ্টির সময় তিনি পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে যান। আমরা এলাকার তিনজন জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার মানুষের সহায়তায় তাকে গ্রেফতারের অভিযান করছি। আশা করি শিগগিরই আরিফ ধরা পড়বে। গোদাগাড়ী থানা পুলিশও অভিযানে আমাদের সহায়তা করছে। কারণ গোদাগাড়ী থানা এলাকার গ্রাম কামারপাড়া থেকে তিনি পালিয়েছেন। আমরা দুই জেলার চরাঞ্চলের কয়েকটি গ্রামে অভিযান করছি।