নিষেধাজ্ঞা শেষের পরই বরফ দেয়া ইলিশে সয়লাব বাজার

২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে বুধবার রাত ১২টা থেকে শুরু হয়েছে ইলিশ শিকার। কিন্তু মাত্র ৪-৫ ঘণ্টার মধ্যে বরফ দেয়া ইলিশে ভরে গেছে বরিশালের ইলিশ মোকাম। শুধু বরিশাল ইলিশ মোকামই নয়, দক্ষিণের সব ইলিশ মোকামে ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্য।

বৃহস্পতিবার সকালে বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড ইলিশ মোকামে দেখা গেছে, টানা ২২ দিন নিষ্প্রাণ এ মোকামটি ইলিশ ক্রয়-বিক্রয়ে সরগরম হয়ে উঠেছে।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোর ৭টা থেকে সেখানে ট্রলার ও নৌকাযোগে ইলিশ আমদানি শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও ইলিশের আমদানি হবে বলে জানিয়েছেন তারা। ২২ দিন পর ইলিশ বিক্রির প্রথম দিন ক্রেতাও ছিল পর্যাপ্ত।

আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অজিত দাস বেলা ১টায় জানান, তখন পর্যন্ত পোর্ট রোড মোকামে দেড় শতাধিক মণ ইলিশের আমদানি হয়েছে।

এলসি সাইজের (৬০০-৯০০ গ্রাম ওজন) পাইকারি মূল্য ছিল প্রতি কেজি ৭০০-৭৫০ টাকা। এক কেজি সাইজের ইলিশ বিক্রি হয় ৯০০ টাকা কেজি দরে। খুচরা বিক্রেতারা আরও ১০০-২০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি করেছেন।

প্রবীণ এই মৎস্য ব্যবসায়ী জানান, মোকামে যে ইলিশের আমদানী হয়েছে তা বুধবার মধ্যরাতে নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর স্থানীয় নদ-নদীতে আহরণ করা হয়। সাগরের ইলিশের আমদানি হবে আরও ২-৩ দিন পর।

সরেজমিন দেখা গেছে, বিক্রি হওয়া বেশিরভাগ ইলিশ সদ্য ডিম ছেড়েছে। যে কারণে চ্যাপ্টা ও লম্বা হয়ে গেছে। তবে পেটে ডিম থাকা ইলিশও ছিল। তবে অনেক মাছ দেখে বোঝা গেছে ওই মাছগুলো নিষেধাজ্ঞার মধ্যে আহরণ করে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। তবে এ ধরনের ইলিশের পরিমাণ ছিল কম।

পাথরঘাটা প্রতিনিধি জানান, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই ইলিশ মোকামে আমদানি না থাকায় পাইকারি বিক্রি হয়নি। স্থানীয় নদ-নদীতে পাওয়া সীমিতসংখ্যক ইলিশ খুচরা বিক্রেতারা বিক্রি করেছেন।

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুম আকন জানান, বুধবার সন্ধার পর থেকে শত শত ট্রলার গভীর সাগরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে ইলিশ শিকারে। আগে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় সব ট্রলারে দিনেই বরফসহ অন্যান্য সরঞ্জাম মজুদ করে প্রস্তুত ছিলেন জেলেরা।

মাসুম আকন বলেন, যে ট্রলার আগে গিয়ে সাগরে জাল পাততে পারবেন তারা বেশি ইলিশ পাবেন- এমন প্রতিযোগিতা দেখা গেছে জেলেদের মধ্যে।

২২ দিন ইলিশ নিধনে নিষেধাজ্ঞার মূল্যায়ন জানতে চাওয়া হলে চাঁদপুর ইলিশ গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ড. আনিসুর রহমান বলেন, আগামী ৯ অক্টোবর পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে পর্যবেক্ষণ করে ১০ অক্টোবর ইলিশের প্রজনন বৃদ্ধির হার মূল্যায়ন করা যাবে।

তবে নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বেশি পরিমাণ ইলিশ নদ-নদীতে প্রবেশ করে ডিম ছাড়তে পেরেছে বলে মনে করেন এই ইলিশ বিশেষজ্ঞ।

 

 

সূত্রঃ যুগান্তর