রবিবার , ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৪ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

হার্টের চিকিৎসায় যত বৈষম্য

Paris
সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৪ ৬:৩৫ পূর্বাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :

পৃথিবীজুড়ে এখন হার্টের চিকিৎসা সমানভাবে হচ্ছে না। একই দেশে হয়তো গরিবরা এক রকম চিকিৎসা পাচ্ছে, ধনীরা এক রকম পাচ্ছে, নারীরা এক রকম পাচ্ছে। অর্থাৎ একেক দেশে ব্যক্তিরা যার যার অবস্থান অনুযায়ী একেক রকম চিকিৎসা পাচ্ছে। এবারের বিশ্ব হার্ট দিবসের প্রতিপাদ্য লক্ষ করলে আমরা দেখব, হার্টের চিকিৎসাকে ছড়িয়ে দেওয়া এবং এখানে সমতা আনার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।

আগামী ২০২৬ সাল পর্যন্ত এই প্রতিপাদ্যের ওপরই কাজ করা হবে। অর্থাৎ স্থানীয় ও বৈশ্বিক পর্যায়ে একটি প্ল্যাটফরম করে সেই প্ল্যাটফরমের অধীনে হার্টের রোগীদের হৃদয় দিয়ে চিকিৎসা করা হবে এবং এই চিকিৎসায় যাতে সামাজিক অবস্থান অনুযায়ী কোনো ভেদাভেদ না হয়, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। এখন আমাদের দেশে তো চিকিৎসায় সমতা নেই। এখানে সরকারি হাসপাতালে এক রকম চিকিৎসা, বেসরকারি পর্যায়ে এক রকম চিকিৎসা।

আবার জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আরেক রকম চিকিৎসা। হার্টের চিকিৎসার জন্য একটি সর্বজনীন প্ল্যাটফরম করে সবার একই রকম চিকিৎসা পাওয়া নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের এখানে চিকিৎসার পার্থক্যটা কোথায় হচ্ছে? দেখা যাচ্ছে, হার্ট অ্যাটাকের রোগী যখন উপজেলায় যাচ্ছে সে হয়তো কোনো ওষুধই পাচ্ছে না। বেসরকারি হাসপাতালে গেলে যাদের সামর্থ্য আছে তারা হয়তো সঙ্গে সঙ্গেই এনজিওগ্রাম করাতে পারছে।

আবার সরকারি হাসপাতালে যারা যাচ্ছে তারা কিছুটা সুবিধা পাচ্ছে, আবার কিছুটা পাচ্ছে না। এটাকে আমাদের সমান করতে হবে।

আবার একজন নারী কার্ডিওলজিস্ট হিসেবে নারীদের কথাও একটু আলাদা করে বলতে চাই। আগে একটা মিথ ছিল, নারীদের হার্টের অসুখ কম হয়। কিন্তু এখন আর এটা মনে করা হয় না।

নারীদের পুরুষদের মতো সমান হার্টের অসুখ হয়, কিন্তু পুরুষদের তুলনায় ১০ বছর পর হয়। নারীরা এখন অনেক বেশি বাইরে যায়। সেই সঙ্গে তাদের ঘর ও সংসারের চিন্তা, বাচ্চাদের চিন্তা—এসবও করতে হয়। স্থূলতা, মানসিক চাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি বেড়েছে। বিদেশে ধূমপায়ী নারীর সংখ্যা বেড়েছে। সব মিলিয়ে এখন নারী হৃদরোগীর সংখ্যাও অনেক।

এখন হার্টের চিকিৎসার ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষদের মধ্যে অসমতা আছে। অনেক ক্ষেত্রেই নারীদের বুকে ব্যথা শুরু হলে আমরা দেখি তাদের তুলনামূলক দেরি করে হাসপাতালে আনা হয়। ভাবা হয়, এটা খুব উদ্বেগজনক কিছু নয়। ফলে চিকিৎসাও বিলম্বিত হয়। বিশেষ করে গ্রামের নারীদের পেছনে খরচ করার প্রবণতা আমরা কম দেখি। কারণ তারা উপার্জন করছে না। আমাদের দেশে মনে করা হয়, যে উপার্জন করে তাকেই বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

এ জন্যই একটা গ্লোবাল প্ল্যাটফরম দরকার, যেখানে সবাই সমান চিকিৎসা পাবে। আরেকটি বিষয় বলি, এখনো আমাদের দেশে ও অন্যান্য দেশে মানুষ মনে করে যে উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন রোগীদের চিকিৎসার জন্য নারী চিকিৎসকদের ওপর নির্ভর করা যায় না। আমাদের এই চিন্তা ও উপলব্ধির জায়গাটাও বদলাতে হবে। আমাদের দেশে দুই শর বেশি যোগ্য নারী কার্ডিওলজিস্ট আছেন। কিন্তু কর্মক্ষেত্রে বা ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে দেখা যায়, নারীদের সব সময় উপেক্ষা করা হচ্ছে। আমাদের এখানে নারী কার্ডিওলজিস্টরা যে অবমূল্যায়িত, তা নিয়েও আমাদের কাজ করতে হবে। আমরা যখন আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফরমে যাই তখন দেখি তাদেরও একই অবস্থা। সুতরাং হার্টের চিকিৎসায় রোগী, চিকিৎসক ও চিকিৎসাব্যবস্থার সব ক্ষেত্রেই সমতা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

লেখক : সিনিয়র কনসালট্যান্ট
ইউনাইটেড হাসপাতাল

 

সূত্র: কালের কণ্ঠ

সর্বশেষ - স্বাস্থ্য