সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:
হামলার আশঙ্কা উসকে দিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পুতিনের অভিযোগ ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে ‘পরিস্থিতির অবনতি’ হয়েছে। সেখানে রাশিয়ান সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। বিবিসি শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ক্রেমলিনে একটি সংবাদ সম্মেলনে পুতিন এসব অভিযোগ করেন।
এ সময় তিনি কিয়েভ কর্তৃপক্ষকে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান।
৬৯ বছর বয়সী এই রুশ সেনা সাংবাদিকদের বলেন, তিনি পশ্চিমা নেতাদের সঙ্গে ইউক্রেনের সঙ্কট নিয়ে আলোচনা করতে ইচ্ছুক ছিলেন। কিন্তু পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার নিরাপত্তা ইস্যু উপেক্ষা করার অভিযোগ তুলেছেন তিনি। একই সঙ্গে যেকোনো চুক্তির জন্য ন্যাটোকে অবশ্যই ইউক্রেনকে সদস্যভুক্ত না করা অঙ্গীকার করতে হবে বলেও দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এ সময় পুতিন পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা যুক্তি দেন। বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা সব সময়ই রাশিয়ার ওপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের অজুহাত খোঁজে।
এবং যুক্তি দিয়েছিলেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা সর্বদা তার শাসনের উপর আর্থিক জরিমানা আরোপের একটি অজুহাত খুঁজে পাবে।
কিয়েভ এবং বিদ্রোহীরা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাসে আট বছর ধরে লড়াই চালিয়ে আসছে। দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ আছে। তবে রাশিয়াপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ডনবাসে গণহত্যা, গণকবর পাওয়া ও রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের ‘মিথ্যা’ অজুহাতের ভিত্তিতে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে বলে এর আগে দাবি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
এবার পুতিন ওই অঞ্চলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে যুক্তরাষ্ট্রের সেই দাবিতেই যেন সিলমোহর দিলেন।
এদিকে ইউক্রেন নিয়ে উত্তেজনার মাঝেই এবার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উপস্থিতিতে ক্ষেপণাস্ত্র মহড়া শুরু করতে যাচ্ছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, রুশ সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডার ইন চিফ ভ্লাদিমির পুতিনের উপস্থিতিতে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ক্ষেপণাস্ত্র মহড়া শুরু হচ্ছে। মহড়ায় ব্যালেস্টিক ও ক্রুজ- দুই ধরনের ক্ষেণাস্ত্রই ব্যবহার করা হবে।
এএফপির খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়া এমন এক সময় ক্ষেপণাস্ত্র মহড়ার ঘোষণা দিল যখন ইউক্রেন ইস্যুতে পশ্চিমাদের সঙ্গে তাদের উত্তেজনা তুঙ্গে।
সাবেক সোভিয়েতভুক্ত ইউক্রেন কয়েক বছর আগে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদ পেতে আগ্রহের কথা জানায়। এর পর থেকেই রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়।
যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ, গত দুই মাস ধরে রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে ১ লাখেরও বেশি সেনা মোতায়েন রেখেছে। ইউক্রেনে হামলা করতেই এই সৈন্য সমাবেশ বলেও তাদের অভিযোগ।