সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানচেষ্টার পর জরুরি অবস্থা জারি করা তুরস্কে এক আদেশে হাজারের বেশি বেসরকারি স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল ইনস্টিটিউট বন্ধ করলেন প্রেসিডেন্ট রিজেপ তায়েপ এরদোয়ান।
গত বুধবার জরুরি অবস্থা জারির পর প্রথম আদেশে বন্ধের তালিকায় হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও ফাউন্ডেশন রয়েছে। ট্রেড ইউনিয়নের কার্যক্রম বন্ধেরও আদেশ দিয়েছিলেন এরদোয়ান।
যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লাহ গুলেনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার সন্দেহে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেন তিনি।
গত ১৫ জুলাই তুরস্কে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান চেষ্টার পিছনে গুলেনের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ এরদোয়ান সরকারের। তবে এ অভিযোগ নাকচ করে গুলেন বলছেন, ভিন্ন মতাবলম্বীদের দমনে ওই সেনা অভ্যুত্থান চেষ্টা এরদোয়ানের ছক অনুযায়ী হয়েছে।
গুলেনের ভাতিজা মুহাম্মেদ সাইত গুলেনকে আটক করা হয়েছে বলে খবর দিয়েছে তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদলু। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনা হতে পারে বলে তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ব্যর্থ অভ্যুত্থানচেষ্টায় ২৪৬ জন নিহতের ঘটনার পর এই প্রথম গুলেনের কোনো আত্মীয়কে গ্রেপ্তারের খবর এসেছে।
এর আগে গুলেনের অনুসারীদের দমন অভিযানে দেশজুড়ে ৬ হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে উচ্চপদস্থ সেনা সদস্যসহ প্রায় তিন হাজার বিচারক, ৯ হাজার পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন।
এছাড়া ১৫ হাজার ২০০ শিক্ষক ও শিক্ষায় জড়িত অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হয়। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজার ৫৭৭ জন ডিনের পদত্যাগ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ৮ হাজার ৭৭৭ জন কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
বরখাস্ত করা হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ২৭৫ জন, অর্থমন্ত্রণালয়ের দেড় হাজার কর্মীকে। ২৪টি বেতার ও টিভি চ্যানেলের লাইসেন্সও বাতিল করা হয় আগেই।
এরইমধ্যে ৫০ হাজারের বেশি মানুষকে আটক, পদচ্যুত বা বরখাস্ত করা হয়েছে।
এরদোয়ানের শনিবার জারি করা আদেশ প্রকাশ করেছে আনাদলু বার্তা সংস্থা, এতে সন্দেহভাজনদের আটকের মেয়াদ চার দিন থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৩০ দিন করা হয়েছে।
অভ্যুত্থানচেষ্টার পূর্ণ তদন্তে এটা সাহায্য করবে বলে ওই আদেশে বলা হয়েছে।
আদেশে এক হাজার ৪৩টি বেসরকারি স্কুল, এক হাজার ২২৯টি চ্যারিটি ও ফাউন্ডেশন, ১৯টি ট্রেড ইউনিয়ন, ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৩৫টি মেডিকেল ইনস্টিটিউট বন্ধের কথা বলা হয়েছে।
সেনা অভ্যুত্থানচেষ্টার সময় অল্পের জন্য গ্রেপ্তার ও সম্ভাব্য মৃত্যু এড়িয়ে আসা এরদোয়ান বৃহস্পতিবার রয়টার্সকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, সশস্ত্র বাহিনীকে নতুন করে সাজাবেন তিনি এবং সেখানে ‘নতুনদের’ আনবেন।
এরদোয়ানের তত্ত্বাবধানে তুরস্কের সুপ্রিম মিলিটারি কাউন্সিলের আগামী ২৮ জুলাই বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।
সূত্র: বিডি নিউজ