রবিবার , ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ধরতে না পারলে চাকরি থাকবে না : নুরুল হক নুর

Paris
সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৪ ৭:৩৩ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন অথচ তার দোসররা এখনো সক্রিয়। তারা গোপালগঞ্জে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে গোপালগঞ্জে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের আটক করতে হবে, তা না হলে সেখানকার প্রশাসনের কারো চাকরি থাকবে না।’

দেশে বেকারত্ব মহামারি নিরসনে অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের ৭ দফা প্রস্তাবনা শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি বলেন, ‘এই গোপালগঞ্জের সন্ত্রাসীরা সংগঠিত হয়ে সেনাবাহিনীর উপর হামলা করেছিল, এটা আমাদের জন্য লজ্জার। তাদের শায়েস্তা করতে না পারলে ভবিষ্যতে বড় রকমের অঘটন ঘটাতে পারে।’

অন্তবর্তীকালীন সরকারের সফলতার উপর দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই সরকার সফল হলে দেশের মানুষের জন্য ভালো হবে, আর যদি ব্যর্থ হয় তাহলে দেশের মানুষকে ভুগতে হবে।

তাই সরকারকে সফল করার জন্য সবার উচিত সহযোগিতা করা। আমরা আমাদের জায়গা থেকে সরকারকে সমর্থন দিয়ে আসছি এবং ভবিষ্যতেও দেব।’

নুরুল হক নুর বলেন, ‘পত্রিকায় এসেছে নতুন ডিসির ৫৬ জনের ৪৯ জনই কোনো না কোনোভাবে আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী, তাদের প্রশাসনে রেখে দেশ সংস্কার সম্ভব নয়। ছাত্র জনতা দেশকে নতুনভাবে গড়ার সুযোগ করে দিয়েছে, এখন যুবকদের দায়িত্ব হবে তাদের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করা।

যুব সংগঠনগুলোর উচিত ঐকবদ্ধভাবে দেশ গঠনে কাজ করা। আগামীতে সংসদে কমপক্ষে ১৫০ জন তরুণ এমপি থাকতে হবে। বর্তমানে সংসদ সদস্য নির্বাচন করতে ২৫ বছর বয়স হতে হয়,এটা কমিয়ে ২১ বছর করতে হবে। তরুণদের সুযোগ দিতে হবে।’

দলের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেন, ‘আওয়ামীলীগকে পুনর্বাসন করে রাষ্ট্র সংস্কার সম্ভব নয়।

বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী সুবিধাভোগীদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এটা শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি। এক ব্যক্তির এক মন্ত্রণালয় বরাদ্দ থাকতে হবে। কিন্তু ১ জনকে কয়েকটি করে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এতে সর্বত্র হযবরল অবস্থা। উপদেষ্টা পরিষদে কমপক্ষে ৫০ জনকে দরকার। যোগ্য ব্যক্তি ছাড়া রাষ্ট্র সংস্কার কখনোই সম্ভব নয়। ইতিমধ্যে সর্বত্র বিশৃঙ্খলা শুরু হয়েছে। রাষ্ট্র স্থবির হয়ে আছে। রাষ্ট্র সংস্কার করতে হলে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোকে কাজে সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে অনীহা দেখা যাচ্ছে। রাজনৈতিক দলকে দূরে রেখে কি রাষ্ট্র সংস্কার করতে পারবেন?’
বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন বলেন, ‘এই ৭ দফা প্রস্তাবনা তরুণদের মুক্তির লক্ষে অবিসংবাদিত প্রস্তাবনা। সরকার অনতিবিলম্বে এই প্রস্তাবনা আমলে নেবে, অন্যথায় সারা দেশে তরুণ সমাজের মাঝে জনমত তৈরি করা হবে। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার মানববন্ধন ও ২২ সেপ্টেম্বর রবিবার জেলা প্রশাসক বরাবর সারা দেশে স্মারকলিপি প্রদান করবে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ।’

আলোচনা সভায় বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মুনতাজুল ইসলাম ৭ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হলো : এক. সব ধরনের চাকুরী ও কর্মসংস্থানকে মৌলিক অধিকার হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রতিবছর নিয়মিত বেকারত্বের জরিপ প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করতে হবে।

দুই. শিক্ষার সকল স্তরে চাহিদা ভিত্তিক ও কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আইসিটি সেক্টরে তরুণদের দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

তিন. সকল প্রকার চাকরিতে আবেদন ফি, অবৈধ সুপারিশ, যেকোনো জামানত ও বয়সসীমা মুক্ত চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে। ঘুষ ও দূর্নীতির মতো অসদুপায়ে নিয়োগের সকল প্রক্রিয়া বন্ধ এবং সরকারি ও বেসরকারি চাকরির বৈষম্য অবসান ঘটাতে হবে।

চার. স্থানীয় পর্যায়ে সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রশিক্ষণকেন্দ্র তৈরি এবং স্থানীয় উৎপাদন ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হবে। তরুণদের সম্পৃক্ত করে দেশের স্থানীয় উৎপাদিত পণ্যের উৎপাদন ও আন্তজার্তিক বাজার ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে।

পাঁচ. শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সনদ জামানতে সুদবিহীন ঋণ প্রদান, শিক্ষিত ও শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে ঝড়ে পড়াদের এর আওতায় আত্মকর্মসংস্থানের অগ্রাধিকার দিতে হবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের দেশের মোট ঋণ প্রদানের ৫০ শতাংশ ঋণ প্রদান করতে হবে। কর্ম ও ঋণ আওতার বাইরে সকল তরুণদের প্রয়োজনে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বেকার ভাতা প্রদান করতে হবে।

ছয়. দেশের প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে শতভাগ চাকরি ও কর্মসংস্থানের আওতায় আনতে হবে। চাকরি ও কর্মসংস্থানের আওতার বাইরে থাকাদের উপযুক্ত পরিমাণ ভাতা প্রদান করতে হবে।

সাত. বিদেশে জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে সরকারি ব্যাবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষিতদের রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে বা সুদমুক্ত ঋণসুবিধার আওতায় বিদেশে প্রেরণ করতে হবে। বিদেশে তরুণদের জন্য যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে অবাধ কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে। তাদের দেশে অবস্থানরত পরিবারের সদস্যদের শিক্ষা, চিকিৎসা, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রবাস গমনে তৃতীয় পক্ষের দৌরাত্ম অবসান, প্রবাসে সকল চিকিৎসা, দেশের দূতাবাসগুলো প্রবাসী বান্ধব ও দূর্নীতিমুক্ত করতে হবে। প্রবাসীদের প্রবাসে থাকা অবস্থায় সকল জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে ভোট প্রদানের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বিদেশ প্রেরণের প্রতিটি স্তরে গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক (ভিআইপি) মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসানের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন,গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, অ্যাড. সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, ফয়সাল আহমেদ, বাংলাদেশ এলডিপি যুবদলের আহ্বায়ক হাদীউজ্জামান খোকন, এবি যুব পার্টির সদস্য সচিব নিজামউদ্দিন আল আদনান, যুব জমিয়ত বাংলাদেশের সি. যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবলু, যুব জাগপার সভাপতি আতিকুর রহমান মুজাহিদ, ইসলামী যুব আন্দোলনের সহ সভাপতি মাও. রাকিবুল ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের সম্পাদক বাবর চৌধুরী প্রমূখ।

 

সূত্র: কালের কণ্ঠ

সর্বশেষ - রাজনীতি