হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের ‘টু প্লাস টু’ বৈঠক, বড় প্রতিরক্ষা চুক্তির সম্ভাবনা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল ঘোষণার মুখেই আজ সোমবার হঠাৎ দিল্লিতে ‘টু প্লাস টু’ বৈঠক। আমেরিকার পররাষ্ট্রসচিব মাইক পম্পেয়ো ও প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক টি এসপারের সঙ্গে ভারতের পক্ষে আলোচনায় অংশ নেবেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।

দু’দিনের এই বৈঠকে সামরিক ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে একাধিক বড় চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা। সেই কারণেই টু প্লাস টু বৈঠকের দিকে নজর রয়েছে কূটনৈতিক শিবিরের। ক্রমেই আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শক্তিশালী দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে ভারত। বৈঠকের আগেই তাকে স্বাগত জানিয়েছে ওয়াশিংটন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফরের আট মাস পর গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকে বসছে নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন।

আমেরিকার পররাষ্ট্র দফতর বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের আগামী বৈঠকে ভারতের সঙ্গে আমেরিকা পারস্পরিক বোঝাপড়া আরও বাড়াবে।’ পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও বৈঠক রয়েছে দুই আমেরিকান কূটনীতিকের। নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন কৌশলগত বোঝাপড়া নিয়ে আলোচনা হবে ওই বৈঠকে। ভারতের পর শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও ইন্দোনেশিয়া সফরের কর্মসূচিও রয়েছে পম্পেয়োর।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, আঞ্চলিক নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষার তথ্য আদানপ্রদান, সেনা পর্যায়ের আলোচনা এবং প্রতিরক্ষা বাণিজ্যের মতো বিষয় রয়েছে আলোচ্যসূচিতে। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, এই টু প্লাস টু বৈঠকেই বাইল্যাটারাল এক্সচেঞ্জ কো-অপারেশন এগ্রিমেন্ট (বিইসিএ) বা ‘দ্বিপাক্ষিক মত বিনিময় ও সহযোগিতা চুক্তি’ স্বাক্ষর হওয়ার সম্ভাবনা জোরদার।

হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে আগেই এ নিয়ে বলা হয়েছিল, ‘এই চুক্তির ফলে দু’দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে আঞ্চলিক তথ্য আদানপ্রদান আরও বাড়বে। আমরা সেনা প্রতিরক্ষা ও বিদেশ সচিব পর্যায়ে তথ্য আদানপ্রদানের বিষয়টি আরও জোরদার ও সুরক্ষিত করতে চাই।’ চুক্তি হলে উপগ্রহের মাধ্যমে রিয়েল টাইম ভিত্তিতে আঞ্চলিক তথ্য পাবে আমেরিকা।

পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) ভারত-চীন সেনার মধ্যে উত্তেজনা চলছে মে মাসের গোড়া থেকে। ১৫ জুন গালওয়ানে রক্তক্ষয়ী সেনা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তার পর নয়াদিল্লি-বেইজিং আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা কমানোর প্রচেষ্টা শুরু হলেও এখনও স্বাভাবিক স্থিতাবস্থা ফেরেনি। এই গোটা পর্বের উপর নজর রয়েছে আমেরিকার।

গত সপ্তাহেই ওয়াশিংটন জানিয়েছিল, এলএসি-তে ভারত-চীন উত্তেজনার উপর নজর রেখেছে আমেরিকা। নয়াদিল্লির সঙ্গে তথ্য আদানপ্রদান চলছে। পরিস্থিতি আরও খারাপ না হোক, সেটাই চায় আমেরিকা। ফলে পররাষ্ট্র-প্রতিরক্ষামন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকেও এ নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা প্রবল বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

 

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন