স্বাধীনতার ৪৯ বছরেও বারশত দিয়াড় গ্রামে লাগেনি উন্নয়নের ছোয়া

মিজানুর রহমান, চারঘাট:


রাজশাহীর চারঘাট ও বাঘা দুটি উপজেলা সদর থেকে শুরু হয়ে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে লেগেছে উন্নয়নের ছোয়া। বর্তমান সরকারের ক্ষমতাকাল সময়ে এ দুটি উপজেলায় বিদ্যুতায়ন, নতুন নতুন সড়ক নির্মান থেকে শুরু করে বিভিন্ন শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এতে সরকারের ব্যয় হয়েছে কয়েক হাজার কোটি টাকা। দুটি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের কাজও শেষ হয়েছে। উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এক ধরণের মাইনফলক বলা যেতে পারে এ দুটি উপজেলাকে।

কিন্তু এতো উন্নয়নের পরেও দুটি উপজেলার সীমার্ন্তী এলাকা বারশত দিয়াড় গ্রামে লাগেনি উন্নয়নের চাবিকাঠি। বাঘা উপজেলার সব চেয়ে বেশী সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধার বসবাসকারী এ গ্রামটি এখনও রয়েছে অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত গ্রাম হিসেবে। প্রায় সাড়ে সাত হাজার মানুষের বসবাস এ গ্রামটির উন্নয়নে এগিয়ে আসেনি কেউ। ফলে চরম অবহেলিত গ্রাম হিসেবে এ গ্রামটি এখন পরিচিত।

সরজমিন উন্নয়ন ও সুবিধা বঞ্চিত বারশতদিয়াড় গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, গ্রামটিতে প্রবেশের জন্য একমাত্র রাস্তাটি কাচা ও কাদামাটিতে একাকার। ওই গ্রাম মানুষকে প্রতিনিয়তই সেই কাদামাটি ঠেলে চলতে হয়। বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ রাস্তাটি পাকা করণের প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে আর এগিয়ে আসেনি কেউ।

সাড়ে সাত হাজার মানুষের গ্রামটিতে একটি মাত্র মসজিদ তাও জরাজির্ন। দরিদ্র গ্রামের মানুষের সাপ্তাহিক ও মাসিক সহযোগীতায় গড়ে উঠা মসজিদটির দরজা জানালা ভেঙ্গে পড়েছে। পলেস্তার খসে পড়ছে। সেটিও সংস্কারে এগিয়ে আসেনি কেউ। শুক্রবার ধারণ ক্ষমতার বেশী মুসল্লি নামাজ পড়তে চরম কষ্ট ভোগ করতে হয় গ্রামটির লোকজনদের। একটি সামাজিক কবরস্থান থাকলেও এক ডালি মাটিও ফেলা সম্ভব হয় গ্রামটির মানুষের। রাস্তা, মসজিদ ও কবরস্থানে সরকারী ভাবে আসেনি কোন বরাদ্ধ। ফলে চরম ক্ষোভ ও হতাশার মাঝে রয়েছে গ্রামটির সাধারন মানুষ। তাদের প্রশ্ন অন্য গ্রামে গেলে দেখা যায় মাঠে চলাচলের রাস্তাটিও পাকা করণ করা হয়েছে। অথচ এ গ্রামের মানুষের চলাচলের এক মাত্র রাস্তাটি আজ কাচা ও কাদামাটিতে রয়ে গেলো।

গ্রামের অটো চালক হাবিবুর রহমান বলেন, চেয়ারম্যান, মেম্বার, এমপি কেউ আসেনি কাচা রাস্তাটি পাকা করণে। বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটি দিয়ে চলাচল চরম কষ্টের। অটো নিয়ে যাওয়া যায় না। তাই আমরা কয়েকজন মিলে টাকা তুলে বালু কিনে কোন রকম মানুষের চলাচলের জন্য টেষ্টা করেছি। একটু পানি হলেই রাস্তাটি দিয়ে চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়ে।

মরহুম মুক্তিযোদ্ধা রয়েজ উদ্দিনের ছেলে তয়েজ উদ্দিন বলেন, নির্বাচনের সময় অনেকেই বলে থাকেন রাস্তাটি পাকা হবে, মসজিদের উন্নয়ন হবে। কিন্তু আজ অবধি কেউ আসেনি আমাদের গ্রামের উন্নয়নে। আমরা চরম ঝুকি নিয়ে প্রবিন ও বাচ্চাদের নিয়ে চলাচল করতে হয়। রাত বিরাত চলতে গিয়ে কাদামাটিতে পড়ে অনেকেট ক্ষতিগ্রস্থও হচ্ছে।

গ্রামটির উন্নয়ন প্রসঙ্গে মনিগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, গ্রামটির এক মাত্র রাস্তাটি কাচা ও কাদামাটিতে ভরপুর কথাটি সত্য। তবে রাস্তাটি পাকা করণের জন্য টেন্ডার হয়ে গেছে।

টেন্ডার হলেও এখনও কাজ শুরু না হওয়ার কারন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, করোনার কারণে অনেক কাজই করছে না ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গুলো। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরুর ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।

উপজেলা প্রকৌশলী রতুন কুমার বলেন, রাস্তাটির আইডি রয়েছে। তবে রাস্তাটির অবস্থা এখন কোন পর্যায়ে তা না জেনে বলা সম্ভব হচ্ছে না।

স/অ