সোমবার , ১৪ জানুয়ারি ২০১৯ | ১৬ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

স্থায়ী কমিটির ফাঁকা পদ বিএনপির নিষ্ক্রিয়তার কারণ

Paris
জানুয়ারি ১৪, ২০১৯ ৯:৫২ পূর্বাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বিএনপির স্থবিরতার প্রধান কারণ স্থায়ী কমিটির ফাঁকা পদ। বিএনপির ১৯ সদস্যের স্থায়ী কমিটির মধ্যে দুটি পদ ঘোষণার সময়ই ফাঁকা ছিল। বাকি ১৭ সদস্যের মধ্যে তরিকুল ইসলাম, আ স ম হান্নান শাহ ও এমকে আনোয়ার মারা গেছেন। ফলে বর্তমানে ৫টি পদ ফাঁকা।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজয় এবং মামলা-হামলাসহ নানা কারণে বিএনপির সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে এক ধরনের স্থবিরতা নেমে এসেছে। বিপর্যয় কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে হলে দ্রুত দল পুনর্গঠন করতে হবে।

কেন্দ্রীয় কমিটির ফাঁকা পদ পূরণের পাশাপাশি অঙ্গসংগঠনগুলোর মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিতে হবে।

হাত দিতে হবে তৃণমূলেও। সুবিধাবাদীদের বাদ দিয়ে যোগ্য ও ত্যাগীদের নেতৃত্বে আনার দাবি করেছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীসহ সংশ্লিষ্টরা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির দুটি পদ ঘোষণার সময়ই ফাঁকা ছিল। বাকি ১৭ সদস্যের মধ্যে তরিকুল ইসলাম, আ স ম হান্নান শাহ ও এমকে আনোয়ার মারা গেছেন। ফলে বর্তমানে ৫টি পদ ফাঁকা।

লে. জে. মাহবুবুর রহমান ও ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া অসুস্থতার কারণে নিয়মিত সময় দিতে পারছেন না। স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ কমিটি ঘোষণার আগে থেকেই ভারতের শিলংয়ে আছেন।

দলটির ৭৩ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটির বেগম সরোয়ারি রহমান, হারুনার রশিদ খান মুন্নু, ফজলুর রহমান পটলসহ সাতজন মারা গেছেন।

উপদেষ্টাদের মধ্যে মুশফিকুর রহমান, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক মাজেদুল ইসলাম, এএসএম আবদুল হালিম, এসএম জহুরুল ইসলাম, আবদুর রশিদ সরকার, ডা. আবদুল বায়েজ ভুইয়া, ডা. আবদুল কুদ্দুস, সৈয়দ আলমগীর, একেএম আমিনুল হকসহ অনেকেই নিষ্ক্রিয়।

বিএনপির ৩৭ জন ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্যে কমিটি ঘোষণার পরপরই পদত্যাগ করেন মোসাদ্দেক আলী ফালু। ইনাম আহমেদ চৌধুরী দলত্যাগ করে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন।

ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে বিচারপতি টিএইচ খান বয়সের ভারে ন্যুব্জ, সাদেক হোসেন খোকা দেশের বাইরে চিকিৎসাধীন। কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ দীর্ঘদিন দেশের বাইরে। আবদুস সালাম পিন্টু আছেন কারাগারে।

ড. ওসমান ফারুকও দেশের বাইরে। এ ছাড়া মোর্শেদ খান, হারুন আল রশিদ, অধ্যাপক আবদুল মান্নানসহ আরও কয়েকজন অসুস্থতাসহ নানা কারণে নিষ্ক্রিয়।

নির্বাহী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ ছাত্র ও সহ-ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক পদ দুটি কমিটি ঘোষণার পরই ফাঁকা।

বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ এ সহযোগী সংগঠনটির কমিটি দীর্ঘদিন ধরেই মেয়াদোত্তীর্ণ। অভিভাবক না থাকায় নতুন কমিটি ঘোষণার ক্ষেত্রেও তেমন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। তাই আন্দোলনের ভ্যানগার্ড হিসেবে পরিচিত ছাত্রদল কাক্সিক্ষত সাফল্য দেখাতে ব্যর্থ।

নির্বাহী কমিটির সাতটি আন্তর্জাতিক সম্পাদকের মধ্যে ২টি ফাঁকা। সহ-যুববিষয়ক সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হলেও যুববিষয়ক সম্পাদকের পদটি এখনও ফাঁকা।

এ ছাড়া নির্বাহী কমিটির সদস্যদের মধ্যে মারা গেছেন ৪ জন। নির্বাহী কমিটির সদস্য নুর মোহাম্মদ মণ্ডল দলত্যাগ করে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন।

সাত যুগ্ম মহাসচিবের মধ্যে তিনজনই কারাগারে আছেন। দশ সাংগঠনিক সম্পাদকের মধ্যে চারজন কারাগারে। সম্পাদকদের মধ্যে অনেকেই নিষ্ক্রিয়।

উপ-কমিটি গঠন করার কথা থাকলেও তা নিয়ে কোনো টু শব্দ নেই দলটিতে। এ ব্যাপারে কয়েকজনকে চিঠি দেয়া হলেও পরে চেয়ারপারসনের কাছে নানা অভিযোগ আসতে থাকে।

নিষ্ক্রিয় ও অযোগ্যদের উপ-কমিটিতে রাখা হচ্ছে এমন অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর এ কমিটির ঘোষণা থমকে যায়।

কেন্দ্রীয় কমিটির এত পদ ফাঁকা থাকার পরও এগুলো দ্রুত পূরণে এখন পর্যন্ত দৃশ্যত কোনো উদ্যোগ নেই।

তবে দলটির কয়েকজন নীতিনির্ধারক জানান, শিগগির এ ব্যাপারে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে তা হাইকমান্ডকে অবহিত করবেন।

কারাগারে থাকা দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও লন্ডনে অবস্থানরত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সবুজ সংকেত পেলেই শূন্য পদগুলো পূরণ করা হবে।

জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নানা কারণেই কমিটির ফাঁকা পদগুলো পূরণ করা সম্ভব হয়নি।

দল পুনর্গঠনের চেয়ে মামলা-হামলা নিয়েই আমাদের বেশি ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারান্তরীণ করে রাখা হয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে রয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাহী কমিটির ফাঁকা পদ পূরণসহ যেসব কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ আছে সেগুলো পুনর্গঠনে দ্রুতই উদ্যোগ নেয়া হবে।

দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ও তৃণমূল পুনর্গঠনের সমন্বয়ক মোহাম্মদ শাহজাহান  বলেন, সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে বিএনপির নির্বাচনে ফল বিপর্যয় হয়েছে- এটার সঙ্গে আমি একমত নই।

নির্বাচনে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা অস্ত্র নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে।

সেখানে গণতান্ত্রিক দল হিসেবে আমাদের কি করার আছে? আমরা কি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব। তিনি বলেন, এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে এ দেশে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হবে না। সরকার পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন গণআন্দোলন। সেই আন্দোলনে নেতৃত্বের জন্য দলকে শক্তিশালী করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন পুনর্গঠন।

কেন্দ্রীয় কমিটির মতোই বেহাল দশা ঢাকা মহানগর বিএনপিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি করে চেয়ারপারসনের কাছে জমা দেয়া হয়। কিন্তু তা ঘোষণার আগেই কারাগারে যান তিনি। এরপর আর সে কাজে হাত দেয়া হয়নি। একই অবস্থা যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও মহিলা দলের।

গত বছর ১৬ জানুয়ারি রাতে সাইফুল আলম নীরবকে সভাপতি ও সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে সাধারণ সম্পাদক করে যুবদলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এক মাসের সময় বেঁধে দেয়া হলেও এখনও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়নি।

২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর শফিউল বারী বাবুকে সভাপতি এবং আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েলকে সাধারণ সম্পাদক করে স্বেচ্ছাসেবক দলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এতদিনেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হয়নি।

এ বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল বলেন, কমিটি গঠনের কাজ প্রায় শেষ। কিন্তু প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে তা ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুত সময়ে তা ঘোষণা করা হবে।

একই পরিস্থিতি মহিলা দলের ক্ষেত্রেও। গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর আফরোজা আব্বাসকে সভাপতি ও সুলতানা আহমেদকে সাধারণ সম্পাদক করে মহিলা দলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটি করে চেয়ারপারসনের কাছে জমা দেয়া হয়।

কিন্তু খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর থমকে যায় ঘোষণা। এ ছাড়া কৃষক দল, তাঁতী দল, মৎস্যজীবী দলসহ অন্য সংগঠনগুলোরও একই অবস্থা।

সর্বশেষ - রাজনীতি