স্ত্রী হত্যা মামলায় সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের বিচার শুরু

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক :

চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী ও সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে চার্জগঠন হয়েছে। এর মাধ্যমে এ মামলার বিচার শুরু হলো।

সোমবার (১৩ মার্চ) তৃতীয় চট্টগ্রাম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালত তাদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। আগামী ৭ এপ্রিল মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুর রশিদ। তিনি বলেন, আসামিপক্ষ অব্যাহতির আবেদন করেছিলেন। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ তার বিরোধিতা করে। শুনানি শেষে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণ হওয়ায় আদালত সাত আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠনের আদেশ দেন। এদিন আদালতে সাত আসামির মধ্যে পাঁচজন উপস্থিত ছিলেন।

আদালতে উপস্থিত আসামিরা হলেন- সাবেক এসপি বাবুল আক্তার, মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন, এহতেশামুল হক ভোলা, শাহজাহান মিয়া। এছাড়া মামলার শুরু থেকে পলাতক থাকা কামরুল ইসলাম শিকদার প্রকাশ মুছা ও খায়রুল ইসলাম প্রকাশ কালুর বিরুদ্ধেও আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়।

আদালত সূত্র জানায়, গত ২০ ফেব্রুয়ারি মামলাটির চার্জগঠনের দিন ধার্য ছিল। তবে ওইদিন আসামি বাবুল আক্তারকে যথাসময়ের মধ্যে আদালতে হাজির করা হয়নি। এতে করে ১৩ মার্চ চার্জগঠনের জন্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়। ৩১ জানুয়ারি মামলাটি তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর হয়।

জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে তৎকালীন পুলিশ সুপার ও মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

তবে মামলাটিতে স্ত্রী হত্যাকাণ্ডে স্বামী বাবুল আক্তারেরই সম্পৃক্ততা পায় পিবিআই। ২০২১ সালের ১২ মে আগের মামলাটিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। একই দিন বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানায় দ্বিতীয় মামলাটি দায়ের করেন মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন। ওইদিনই মামলাটিতে বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পিবিআই। সেই থেকে কারাগারে রয়েছেন বাবুল।

এদিকে, প্রথম মামলায় পিবিআইয়ের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর নারাজির আবেদন করেন বাবুলের আইনজীবী। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ৩ নভেম্বর নারাজি ও পিবিআইয়ের প্রতিবেদন খারিজ করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন। এরপর দুটি মামলাই তদন্ত করতে থাকে পিবিআই। তবে পরবর্তী সময়ে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী গত বছরের ২৫ জানুয়ারি মিতুর বাবার দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এরপর একই বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রথম মামলাটি অধিকতর তদন্ত শেষে বাবুলসহ ৭ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।