‘স্ত্রীর দাস’ টুইট নিয়ে মুখ খুললেন সানিয়া

অবশেষে নিজের বিখ্যাত ‘জোড়ু কা গোলাম (স্ত্রীর দাস)’ টুইট নিয়ে মুখ খুললেন ভারতের টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা। ‘ডাবল ট্রাবল’-এর সবশেষ পর্বে ভারতীয় নারী ক্রিকেটার স্মৃতি মন্ধনা ও জেমিমাহ্ রদ্রিগ্রেজের সঙ্গে কথা বলার পর এ টুইট করেন তিনি। ২০২০ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারত-অস্ট্রেলিয়া লড়াইয়ের আগে ওই অনুষ্ঠান হয়।

সে সময় সানিয়ার টুইটের ভূয়সী প্রশংসা করেন অস্ট্রেলিয়ার গতিতারকা মিচেল স্টার্ক। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের ওয়ানডে খেলেননি তিনি। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজে) বিশ্বকাপ ফাইনালে স্ত্রী আলিসা হিলির খেলা দেখবেন বলে এ সিদ্ধান্ত নেন বাঁহাতি পেসার।

পরিপ্রেক্ষিতে সানিয়া লেখেন, মিচেল কখনও উপমহাদেশের লোক হতে চাইবেন না৷ কারণ আমি নিশ্চিত, তাকে ‘জোড়ু কা গোলাম’ বলা হবে। এ অঞ্চলের ক্রিকেটপ্রেমীরাই তা বলবে।

এরপর এমন ক্রিকেট অনুরাগীদের মানসিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সানিয়া। কেননা ক্রিকেটাররা পারফর্ম করতে ব্যর্থ হলে তাদের স্ত্রীদের দোষ দেন তারা। পাকিস্তানের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার শোয়েব মালিককে বিয়ে করেছেন তিনি। তাকেও এ কথা শুনতে হয়েছে।

সানিয়া জানান, এমনকি টিম ইন্ডিয়ার বর্তমান অধিনায়ক বিরাট কোহলির স্ত্রী বলিউড অভিনেত্রী আনুশকা শর্মাকেও বহুবার এ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে।

শোয়েবপত্নী বলেন, আমি ও আনুশকা সম্ভবত এর সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সম্পর্কযুক্ত। ক্রিকেট রসিকরা মনে করেন, আমাদের স্বামীরা পারফর্ম করেন স্বীয় ক্ষমতা বলে। আর ব্যর্থ হন আমাদের জন্য৷

সানিয়া বলেন, ভক্ত-সমর্থকরা কীভাবে এ মানসিকতা পোষণ করেন তা আমি জানি না৷ এটি ‘গভীর সাংস্কৃতিক ইস্যু’ যা আমাদের সমাজের মূলে-শিকড়ে প্রোথিত রয়েছে৷ এ থেকে মনে হয়, নারীরা কেবল পুরুষদের বিভ্রান্তির কারণ হতে পারে, শক্তি হিসেবে নয়।

হায়দরাবাদি কন্যা বলেন, আমরা বিষয়টাকে রসিকতা হিসেবে দেখছি। কিন্তু আমি মনে করি, এটি বড় ইস্যু৷ আমাদের সংস্কৃতিটাই এরকম। আপনার বান্ধবী বা স্ত্রী সঙ্গে থাকলে আপনি বাইরে ডিনারে যাবেন না- এর অর্থ আমি খুঁজে পাই না।

একবার সানিয়ার টেনিস ম্যাচ দেখতে আসেন শোয়েব। স্ট্যান্ড থেকে সমর্থন করার জন্য তাকে তিরস্কার করেন লোকজন। সেই স্মৃতিচারণ করে ভারতীয় টেনিস রাণী বলেন, কিন্তু স্টার্ক নিজের খেলা ছেড়ে স্ত্রীর ফাইনাল যুদ্ধ দেখতে এলে সবাই তার প্রশংসা করেন৷ আমি আবারও বলছি, শোয়েব আমার জন্য এটা করলে পাহাড় ভেঙে পড়ত। প্রত্যেকে বলত এমন ‘জোড়ু কা গোলাম’ আগে দেখেনি।

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি স্পোর্টস