সৌদিতে পণ্য বর্জন নিয়ে কী বলছে তুরস্ক?

তুর্কি পণ্য আমদানির ওপর সৌদির ‘অনানুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা’ নিয়ে তেমন মাথা ঘামাচ্ছে না তুরস্ক। এই বয়কট সৌদি আরবের জন্যই আত্মঘাতী হবে বলে মনে করছে দেশটি।

আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা ছাড়াই তুরস্কের সব ধরনের পণ্য বর্জনের কর্মসূচি চলছে সৌদি আরবে। দেশটির চেইন সুপারমার্কেটগুলো একে একে বয়কটের এই ডাকে সাড়া দিচ্ছে।

তুরস্ক সরকারের পক্ষ থেকে সৌদির এ বয়কটের বিষয়ে এখনও কিছু শোনা যায়নি। তবে সরকারপন্থী তুর্কি সংবাদপত্র ইয়েনি সাফাকে এক উপ-সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে যে এই বয়কট সৌদি আরবের জন্যই আত্মঘাতী হবে।

এক্ষেত্রে এমন যুক্তি দেয়া হয়েছে – তুরস্কের মোট বৈদেশিক বাণিজ্যের তুলনায় সৌদি আরবে তাদের রফতানি পরিমাণ এতই কম যে তাতে তুর্কি অর্থনীতির তেমন কোনো ক্ষতি হবে না, বরং ৮০ শতাংশ আমদানি নির্ভর সৌদি আরব সস্তায় মানসম্পন্ন পণ্য থেকে বঞ্চিত হবে।

ইয়েনি সাফাকের উপসম্পাদকীয় বলছে, সৌদি জনগণ এটা কখনই পছন্দ করবে না। সবাই জানে সৌদি সরকার এই বয়কটে তাদের বাধ্য করছে। তুরস্কের সঙ্গে সাধারণ আরব জনগণের কোনো বিরোধ নেই।

সৌদি অর্থনৈতিক বিশ্লেষক আমাল আব্দুল-আজিজ আল-হাজানি অবশ্য বলছেন যে, তুরস্ক থেকে খাদ্যপণ্য আমদানি বন্ধ করলে তুর্কি অর্থনীতি হয়ত তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, কিন্তু অর্থনৈতিক সম্পর্ক এভাবে নষ্ট হতে থাকলে তার নেতিবাচক অনেক প্রভাব তুরস্ক এড়াতে পারবে না।

গত মাসে সৌদি আরবের চেম্বার অব কমার্সের পক্ষ থেকে তুরস্কের সব ধরনের পণ্য বর্জনের জন্য দেশটির নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

সৌদি সরকারের ইচ্ছাতেই যে এই বয়কট ক্যাম্পেইন চলছে, তার প্রথম ইঙ্গিত পাওয়া যায় গত সপ্তাহে, যখন সৌদি খাদ্য এবং ওষুধ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ (এসএফডিএ) তুরস্ক থেকে সব ধরনের মাংস, মাছ, ডিম এবং দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য আমদানি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত জানায়।

ওই বিবৃতির মূল বার্তা ছিল – তুরস্কে কোনো বিনিয়োগ নয়, তুরস্ক থেকে কোনো আমদানি নয় এবং তুরস্কে কোনো পর্যটন নয়।

সৌদি আরবের সবচেয়ে বড় সুপারমার্কেট আথায়াম ছাড়াও দানিউব, তামিমি এবং পাণ্ডা চেইন শপ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে যে তাদের বর্তমান মজুদ শেষ হওয়ার পর তারা তুরস্কে তৈরি কোনো পণ্য বিক্রি করবে না।

সরকারপন্থী সৌদি বিশ্লেষক, বুদ্ধিজীবীরা গণমাধ্যমে এই বয়কটের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে জনমত তৈরির চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

 

সূত্রঃ যুগান্তর