বৃহস্পতিবার , ১১ আগস্ট ২০১৬ | ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

সোনায় মোড়ানো লৌহমানবী

Paris
আগস্ট ১১, ২০১৬ ১২:২২ অপরাহ্ণ

 সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :

এবারের অলিম্পিকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের পুরুষ সাঁতারুর মতো তাঁরও হয়েছে সোনা জয়ের ‘হ্যাটট্রিক’। ফেলপসের একটা আবার রিলেতে, যেখানে হসুর তিনটিই ব্যক্তিগত ইভেন্টে। ৪০০ মিটার মিডলের পর ১০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোক এবং সবশেষ ফেলপসের রাতে তিনি জিতেছেন ২০০ মিটার ব্যক্তিগত মিডলেও।

সারা বিশ্বের কোন প্রান্তে কী হচ্ছে, চিন্তাধারার পরিবর্তন হবে কী হবে না, সেটা ভবিষ্যৎই বলবে। তবে হাঙ্গেরি হসুজ্বরে আক্রান্ত। ‘আয়রন লেডি’কে তারা প্রগাঢ় ভালোবাসায় জুড়ে দিয়েছে ‘গোল্ডেন’ বিশেষণটি। ৪টি সোনা নিয়ে হাঙ্গেরি যে অভাবিতভাবে পদক তালিকার তিন নম্বরে আছে, সেটা তো কাতিঙ্কা হসুর সৌজন্যেই।

২০০ মিটার ব্যক্তিগত মিডলে অবশ্য এ যুগে কাতিঙ্কার ‘পেটেন্ট’ করা। এ ইভেন্টের বিশ্ব রেকর্ডটা যে তাঁরই দখলে। জিততেও তাই বিশেষ বেগ পেতে হয়নি কাতিঙ্কাকে। হিটে ব্রিটেনের সিওভান মারি ও’কনোর সেরা টাইমিং করেছিলেন ঠিকই, তবে ফাইনালে সবার আগে সাঁতার শেষ করেছেন হসুই। ২ মিনিট ৬.০৮ সেকেন্ডটা আবার নতুন অলিম্পিকও রেকর্ড। ভাবছেন নতুন অলিম্পিক রেকর্ড গড়া সাঁতারুর তাহলে বিশ্ব রেকর্ডটা দখলে থাকে কি করে? কাতিঙ্কা হসুর গল্পের ‘টুইস্ট’টাই এখানে। আগের তিনটি আসরে তো কোনো পদকই জিততে পারেননি এ হাঙ্গেরিয়ান। চতুর্থ আসরে এসে এরই মধ্যে জিতেছেন তিনটি সোনা। হসুর পরে থেকে রুপা জিতেছেন ও’কনোর। আর যুক্তরাষ্ট্রের ডিরাডোর ভাগ্যে জুটেছে ব্রোঞ্জ।

মঙ্গলবার অবশ্য আরেকটি ইভেন্ট ছিল কাতিঙ্কা হসুর। কিন্তু নিজের প্রিয় ইভেন্ট ২০০ মিটার মিডলের কথা ভেবে মেয়েদের ২০০ মিটার বাটারফ্লাই থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেন তিনি। মিডলের সাঁতারু মানেই তিনি অলরাউন্ডার; ফ্রি-স্টাইল, ব্রেস্টস্ট্রোক, ব্যাকস্ট্রোক, বাটারফ্লাই—সব পারতে হয় তাঁকে। কাতিঙ্কা হসু অবশ্য আরো বড় মাপের অলরাউন্ডার। ১০০ থেকে ১৫০০—সব ইভেন্টেই আগ্রহের সঙ্গে সামর্থ্যও আছে তাঁর। অভাবিত এ সামর্থ্যের কারণেই হসুকে ‘আয়রন লেডি’ নামটা ভালোবেসে দিয়েছে হাঙ্গেরিয়ানরা।

তবে মঙ্গলবার ২৭ বছর বয়সী হসুর মতো সমান নজর কেড়েছেন তাঁর স্বামী শেন তুলুপও। তিনি আবার হসুর কোচও। তো, স্ত্রী যখন পুলে আরেকটি পদকের জন্য লড়ছিল তখন কোচের চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে তুলুপের সে কী উত্তেজনা! কখনো বুক চাপড়াচ্ছেন তো কখনো হাতে এমন সব ভঙ্গি করছিলেন যেন ঠেলে সবার আগে টাইমিং প্যাডে পৌঁছে দিতে চাচ্ছেন তিনি! চিৎকার করে হয়তো স্ত্রীকে এটাই বলতে চাচ্ছিলেন যে মাঝেমধ্যেই তাঁর মাথা পানির নিচে থাকছে। কিন্তু হাজার দশেক দর্শকের চিল চিৎকারে কোচের নির্দেশ কাতিঙ্কা হসুর কানে পৌঁছানোর কথা নয়। তবু সমানে নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছিলেন তুলুপ।

আর এতেই আরেকবার সরগরম পশ্চিমা মিডিয়া। ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড যেমন তুলুপকে নিয়ে আলাদা স্টোরিও করেছে, যেখানে তাঁর মঙ্গলবারের আচরণকে পরোক্ষে কটাক্ষই করা হয়েছে। অবশ্য হসুর পরোক্ষ সমালোচনা আরো তীব্রতার সঙ্গে করেছে সিএনএন-ও। ৪০০ মিটার ব্যক্তিগত মিডলেডেতে হসুর বিশ্ব রেকর্ড গড়ার পরদিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমটি সন্দেহ প্রকাশের ঢঙে প্রশ্ন তুলেছিল, ‘পুরনো রেকর্ডের চেয়ে প্রায় ৫ সেকেন্ড আগে সাঁতার শেষ করাটা অবিশ্বাস্য ব্যাপার। সেটাও ২৭ বছর বয়সে!’ সন্দেহের বিষ মাখানো ওই প্রতিবেদনে আরো ছিল, ‘সম্প্রতি ছয়বার ডোপ টেস্ট হয়েছে হসুর। সবশেষটি হয়েছে জুলাই মাসে। অবশ্য এর কোনোটিতেই অননুমোদিত ড্রাগের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। তবে কর্তৃপক্ষের উচিত ড্রাগ টেস্টের আরো নিখুঁত কোনো পন্থা খুঁজে বের করা।’ ইঙ্গিতটা স্পষ্ট, ২৭ বছর বয়সে যেভাবে সাঁতরাচ্ছেন হসু, সেটি যে একজন ‘বৈধ’ অ্যাথলেটের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। ‘দ্য সান’ও সন্দেহের তীর ছুড়ে লিখেছে, ‘সাউথ ক্যারোলিনার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সময়ই হসু আর তুলুপের পরিচয় এবং এরপর পরিণয়। গুঞ্জন আছে, কোচিং পদ্ধতির বাইরেও কিছু করে থাকেন তুলুপ।’

ইঙ্গিতটা পরিষ্কার। এ বয়সে কাতিঙ্কা হসু এত জোরে সাঁতরান কি করে? যদিও তাঁদের কেউই প্রশ্ন তুলছেন না ৩১ বছর বয়সে মাইকেল ফেলপসই-বা কী করে একের পর এক সোনা জিতে চলেছেন? একজন হাঙ্গেরি, আরেকজন যুক্তরাষ্ট্রের বলেই কি?

সূত্র : কালের কণ্ঠ

সর্বশেষ - খেলা