সুদখোরের নির্যাতনে আত্মহত্যা, দাবি পরিবারের

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

বরিশালের গৌরনদীতে সুদখোরের শারীরিক নির্যাতন আর অপমান সইতে না পেয়ে কীটনাশক পানে মো. কালাম সেরনিয়াবাত (৪৫) নামে এক মাহিন্দ্রার মালিক আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার টরকী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জয়নাল শরীফের হোটেলের সামনে কীটনাশক পানের এ ঘটনা ঘটে।

মৃত কালাম উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের উত্তর মাদ্রা গ্রামের মৃত হাসেম সেরনিয়াবাতের ছেলে ও টরকী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ছলেমান হাওলাদারের বাসার ভাড়াটিয়া। চার সুদখোরকে আসামি করে সোমবার বিকালে গৌরনদী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মৃত কালামের ছেলে রাজন সেরিনিয়াবাত।

রাজন সেরনিয়াবাত (২০) অভিযোগ করে বলেন, আমার বাবা চড়া সুদে উপজেলার লাখেরাজ কসবা এলাকার আহাদুল হাওলাদারের কাছ থেকে গত পাঁচ-ছয় মাস পূর্বে প্রতিদিন এক হাজার টাকা সুদ দেওয়ার কথা বলে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন। প্রতিদিন এক হাজার টাকা করে আহাদুলকে এ পর্যন্ত লক্ষাধিক টাকা সুদ দিয়েছেন বাবা। এরপরও সুদখোর আহাদুল বাবার কাছে সুদাসলসহ ৯৫ হাজার টাকা দাবি করেন। সুদের টাকা দিতে না পারায় আহাদুল ও তার স্ত্রী ছবি বেগম গত শনিবার দুপুরে টরকী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জয়নাল শরীফের দোকানের সামনে বাবাকে বেদম মারপিট করে জোরপূর্বক সাদা স্টাম্পে বাবার স্বাক্ষর নেয়।

অভিযোগ করে রাজন আরও বলেন, মাদারীপুরের ডাসার থানার নবগ্রাম এলাকার সুদখোর কালাম সরদারকে ২০ হাজার জন্য বাবা প্রতি সপ্তাহে ১৬শ টাকা করে সুদ দিতেন। কালাম সরদার সুদাসলের ৩০ হাজার টাকার দাবিতে রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভূরঘাটা বাসস্ট্যান্ডে বাবাকে মারধর করে মাহিন্দ্রা রেখে দেয়।

এরপর বাবা টরকী বাসসন্ট্যান্ডে ফিরে আসেন। সুদখোর আহাদুল হাওলাদার ও কালাম সরদারের শারীরিক নির্যাতনের অপমান সইতে না পেয়ে রোববার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে টরকী বাসস্ট্যান্ডের জয়নাল শরীফের হোটেলের সামনে বসে কীটনাশক পান করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে স্বজনরা গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় বাবাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাবাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। মুমূর্ষু অবস্থায় বাবাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

সোমবার দুপুরে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতাল মর্গে বাবার লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। রাজন আরও বলেন, আমার বাবা চারটি মাহিন্দ্রার মালিক ছিলেন। সুদাসল টাকার দাবিতে সুদি মহাজনরা বাবার কাছ থেকে চারটি মাহিন্দ্রাই জোরপূর্বক নিয়ে গেছে। গৌরনদী থানার ওসি আফজাল হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সূত্র: যুগান্তর