সিরাজগঞ্জে আ.লীগ নেতার বাড়িতে ফেসবুক লাইভে এসে নারীর আত্মহত্যার চেষ্টা

সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ফেসবুক লাইভে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন মীর মল্লিকা (৪৫) নামে এক নারী। তাৎক্ষণিক বাড়ির লোকজন তাকে নিবৃত করলে তিনি জ্ঞান হারান।

আর এই সম্পূর্ণ ঘটনাটি ফেসবুকে লাইভ প্রচার করেন ওই নারীর ছেলে। মুহূর্তেই ভিটিওটি ভাইরাল হয়ে পড়ে সিরাজগঞ্জ জেলাজুড়ে।

শনিবার (৩ এপ্রিল) দুপুরের দিকে শহরের স্টেডিয়াম রোডের জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট ও প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিমের চাচাতো ভাই আবু ইউসুফ সূর্য্যর বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।

ওই নারীর কোনো পরিচয় জানা যায়নি। তবে তিনি মীর মল্লিকা নামে ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে যুক্ত ছিলেন।

আওয়ামী লীগ নেতা আবু ইউসুফ সূর্য্যর পরিবারের দাবি, ওই নারীকে তারা কেউ চেনেন না। এটা তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কোনো অংশ।

ফেসবুক লাইভে এসে ওই নারী বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আবেদন, আমি এই বাংলাদেশকে ঘৃণা করি, আমি এই বাংলাদেশের মহান নেতাদেরকে ঘৃণা করি। যারা এই নেতাদের কারিগর তাদেরকে ঘৃণা করি। আমি তাই আজকে এই মহান নেতার বাসার ভেতরে এসে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলাম।’

এ সময় কেরোসিনের বোতল খুলতে খুলতে তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেন আমার জীবনটা এরা ধ্বংস করে দিছে, এই নাসিম গ্রুপের লোকজন আমার জীবনটা ধ্বংস করে দিছে। এই নাসিম গ্রুপের সবাই আমার জীবনটাকে শ্যাষ করে দিছে। আমার ছেলের পড়াশোনার ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিয়েছে। আজ ৬ মাস যায় আামার ছেলেকে আমি স্কুল পাঠাইতে পারি না, কলেজের খরচ দিতে পারি না।’

এসব কথা বলতে বলতে ওই নারী কেরোসিনের বোতল থেকে তেল গায়ে ঢেলে ম্যাচ হাতে নিয়ে ফায়ার করার চেষ্টা করছিলেন। এ অবস্থায় আবু ইউসুফ সূর্য্যর ছেলে তারিক ইউসুফ সুমিত তাকে নিবৃত করে। এ সময় ওই নারী মূর্ছা যান। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এ ব্যাপারে তারিক ইউসুফ সুমতি বলেন, ওই নারীকে আমরা কেউ চিনি না। হঠাৎ করেই বাড়িতে এসে একটি সিনক্রিয়েট করার চেষ্টা করেছেন তিনি। তার পরিচয় ও সমস্যার কথা জিজ্ঞাসা করা হলেও কোনো উত্তর দেননি। তবে আশ্চর্য্যের বিষয় হলো, ওই নারীর সকল কর্মকাণ্ডই ভিডিও করছিল তার ছেলে।

তিনি যখন নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে ম্যাচের কাঠি দিয়ে আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করছিলেন তখনও বাধা না দিয়ে ভিডিও করছিল তারই ছেলে। এটা থেকে পরিষ্কার বোঝা যায়, আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তাকে দিয়ে এই ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) স্নিগ্ধ আক্তার বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রকৃত ঘটনাটি কী তা জানতে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে।- জাগোনিউজ