রবিবার , ২০ অক্টোবর ২০২৪ | ৫ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

সিনওয়ারকে হত্যার পরও কেন যুদ্ধ থামাতে চান না নেতানিয়াহু

Paris
অক্টোবর ২০, ২০২৪ ১০:০৫ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :

গাজার রাফাহতে বুধবার একটি আকস্মিক সংঘর্ষে হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। পশ্চিমা বিশ্লেষকদের মতে, এই হত্যাকাণ্ড চলমান গাজা যুদ্ধের অবসান কিংবা বৃহত্তর ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের একটি সমাধানের দ্বার উন্মোচন করতে পারে বলে কিছু আশার সঞ্চার করেছে। তবে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার বিশ্লেষকদের বক্তব্য অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দেশটিকে যুদ্ধে জড়িয়ে রাখার জন্য নতুন অজুহাত খুঁজবেন। এতে তার ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি হবে এবং ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে তাদের ভূমি দখলে রাখার সম্প্রসারণবাদী স্বপ্নও বাস্তবায়িত হবে।

নেতানিয়াহু বহুদিন ধরে ক্ষমতা হারানোর ভয়ে রয়েছেন। কারণ তার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে জালিয়াতি, ঘুষ ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে তিনটি মামলা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ভোগ করতে হতে পারে। অভিযোগগুলোতে বলা হয়েছে, মিডিয়া টাইকুনদের কাছে অনুকূল প্রচারের জন্য সুবিধা ও উপহার দিয়েছিলেন তিনি।

এক বছর পর তিনি পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তার ডানপন্থি জোট দ্রুত দেশের বিচার বিভাগকে দুর্বল করার জন্য আইন প্রস্তাব করে। এই সংস্কারের মাধ্যমে সরকার বিচারক নিয়োগ করতে পারবে, আদালতের নজরদারি সীমিত করতে পারবে এবং এমনকি আদালতের রায় অগ্রাহ্য করতে পারবে।

এরই মধ্যে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রসিকিউটর করিম খান গাজায় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে নেতানিয়াহু ও তার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য আবেদন করেছেন। বিশ্লেষক ডায়ানা বুট্টু মন্তব্য করেছেন, নেতানিয়াহু নতুন অজুহাত খুঁজবেন বা অন্য কাউকে নিশানা করবেন। যা আরও অস্থিরতা সৃষ্টি করবে। এটিই তার উদ্দেশ্য।

নেতানিয়াহুর যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার কৌশল, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখলে রাখার ইসরায়েলি কৌশল এবং সংঘাতের সমাপ্তিতে বাধার বিষয়গুলোই ইঙ্গিত দেয় যে, সিনওয়ারের হত্যাকাণ্ড সত্ত্বেও এই যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হবে।

নেতানিয়াহুর যুদ্ধের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার প্রবণতা স্পষ্ট হয়েছে শনিবার। ওই দিন হিজবুল্লাহর একটি ড্রোন তার সিসেরিয়ার বাড়িতে আঘাত হানে। তবে নেতানিয়াহু এই আক্রমণকে ‘ইরানের এজেন্টদের কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেন। তার এই মন্তব্যকে অনেক বিশ্লেষক যুদ্ধকে আরও বিস্তৃত করার প্রয়াস হিসেবে দেখছেন। গাজার বাইরে যুদ্ধকে ইরান পর্যন্ত প্রসারিত করার লক্ষ্যে তিনি এগোচ্ছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে, ইসরায়েল গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। চলমান যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৪২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং প্রায় ২৩ লাখ মানুষের পুরো জনসংখ্যাকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। নেতানিয়াহুর বক্তব্যে দেখা গেছে যে, তিনি সংঘাত বাড়াতে আগ্রহী। তিনি লেবাননের হিজবুল্লাহকে ধ্বংস এবং উত্তর ইসরায়েলে নিরাপত্তা পুনঃস্থাপনের লক্ষ্যে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ওপর জোর দিচ্ছেন।

কার্নেগি মিডল ইস্ট সেন্টারের বিশেষজ্ঞ ইয়েজিদ সাইঘ বলেছেন, ইসরায়েল পূর্বেও বহুবার ফিলিস্তিনি নেতাদের হত্যা করেছে এবং তা অব্যাহত রাখবে। কারণ, ইসরায়েলি সরকারগুলো কখনও ফিলিস্তিনের প্রকৃত সার্বভৌমত্ব মেনে নিতে প্রস্তুত ছিল না।

এই ধারাবাহিকতায় নেতানিয়াহুও যুদ্ধের মাধ্যমে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান শক্তিশালী রাখার চেষ্টা করছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ফিলিস্তিনের জনগণ ও তাদের প্রতিরোধ আন্দোলনকে দমন করার উদ্দেশ্যে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান চলমান থাকবে। ২০০৪ সালে হামাসের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আহমদ ইয়াসিনকে হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও হামাস শক্তিশালী হয়ে ওঠে।

মধ্যপ্রাচ্য কাউন্সিলের ওমর রাহমান বলেন, হামাস সংগঠিত রূপে যুদ্ধ টিকে থাকবে। নেতাদের হত্যার পরেও প্রতিরোধ টিকে থাকবে, কারণ এটি ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্ভোগের মধ্য থেকে উদ্ভূত।

 

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক